রাত ৩-টের মনয়কে এত গুরুত্বপূর্ণ মনে করার পেছনের রহস্য কি ?
কলকাতা টাইমস :
রাতের এই ৩-টের সময়টা অনেক সময়ই “শয়তানের সময়” বা “সম্মোহনের সময়” বলে মানা হয়।মানা হয় যে ৩-টের সময়ই দুরাত্ম্যা ও দানবরা সবচেয়ে বেশি শক্তিমান হয়।খ্রীষ্টান ধর্মের মতে এটা যীশুর মৃত্যুকে বিদ্রুপের সময় বলে মানা হয়।
খ্রীষ্টান ধর্মের পালন হয়ে থাকে, রাত ৩-টে মৃত্যুর ঘন্টা বলেই মানা হয়।লোকেরা সকালের এই সময় ঘড়ির দিকে তাকাতেও ভয় পায়।কিন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে সময়ের যে তফাত সেটা তারা মনে রাখে না। তাই ব্যক্তিবিশেষের জন্য য়খনই ৩-টে বাজে তখনই খারাপ, সেটা দুঘন্টা পরে অন্য কোনও শহরে হোক অথবা পৃথিবীর অন্য কোনও প্রান্তে তখন দুপুরের খাওয়ার সময়ই হোক না কেন।যদিও এত লোক এই রাত ৩-টের বিশেষত্ব মানেন তাও এর মধ্যে লুকিয়ে থাকা গলদগুলো অগ্রাহ্য করা যায় না।
সবচেয়ে প্রথমে যদি মনে করি যে ৩-টে হল যীশুর মৃত্যুকে বিদ্রুপ করা, তাহলে ওনার মৃত্যুর আগে কেন কিছু হয়নি?যীশুর মৃত্যুর আগে কি দানবের অস্তিত্ব ছিল না?অন্যসব ধর্মের বিশ্বাসেও দানবের গল্প রয়েছে কিন্তু কোনোটার সাথে সেরকম ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের কোনও উল্লেখ পাওয়া যায় না, যেটা কিনা দানব বা আত্মার জেগে ওঠার সাথে সম্পর্কিত।রাত ৩-টের সময়ের সাথে সম্পর্ক নির্ধারণ করার এই গল্পটি কেবল খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই পাওয়া যায়, যা আরও মানুষের কল্পনা ও কুসংস্কারে বৃহতাকার ধারণ করেছে।
চলুন দেখি রাত ৩-টের সময়টার এত তাৎপর্য্য কিসের?
রাত ৩-টে থেকে ৪-টের মধ্যে অনেক বিচিত্র সব ঘটনা ঘটার কথা জানা যায়।অনেকে অদ্ভূত কিছু অনুভূতি বা বিচিত্র কিছু অভিঞ্জতার কথা বলে থাকেন।কেউ বলেন হঠাৎ করে দেখছেন দরজা হাট করে খোলা বা একা থাকলে মনে হয় যেন সঙ্গে কেউ আছে।তবে এর মধ্যে কোনটার সাথে কোনও অধিকারের সম্পর্ক নেই।খেয়াল করে দেখুন ৩-টে রাতের এমন সময় য়খন আপনরা ঘুমটা সবচেয়ে গাঢ়।মনোবিঞ্জানে এটাকে বলা হয় আর ই এম (র্যা পিড আই মুভমেন্ট) ঘুমের স্থিতি। এটা এমন এক স্থিতি যখন আমরা স্বপ্ন দেথি। যারা অনেক রাত অবধি জেগে থাকেন তারা নিজের শরীরকে ঘুম থেকে বন্চিত করেন।কিন্তু শরীর নিজের ঘুমের খিদের কাছে সমর্পণ করবেই।এটাই কারণ আমরা কেন জানলা খোলা রাখি না কল খোলা রেখে ঘুমিয়ে পড়ি যখন এই পরিস্থিতিতে পৌঁছই।এই পরিস্থিতিতে মস্তিষ্ক আশেপাশের ঘটনাগুলোকে অন্যভাবে বোধ করে।এতে শরীরে নানারকমের অনুভূতির সৃষ্টি হয়।
অনেক সময় গভীর ঘুমে মানুষ এমন এক ঘটনা অনুভব করেন যাকে বলে “হ্যাগ ফেনোমেনা” বা ঘুমের অসাড়তা। এর ফলে হয় কি আপনার মন সজাগ কিন্তু ঘুমের জন্য শরীর অচল বা বাকশক্তি লোপ পায়।দেহের কিছু কিছু ক্ষমতা আর ই এম-এর সময় বন্ধ হয়ে যায় যাতে আমরা আমাদের স্বপ্ন অনুযায়ী কাজ করতে না শুরু করে দিই।তাও মাঝে মাঝে ঘুমটা যখন গভীর থেকে হালকা হয়ে আসে, মাঝে মাঝে এমন সময় আসে যে শরীরের আগে মন সজাগ হয়ে যায়। ৩-টে বাজার গুরুত্ব কি? এই সময় শরীরে অনেক রকমের অনুভুতি হয়।
যেমন ধর হাত/পা নাড়ানোর অক্ষমতা,বাকশক্তি রোধ, বুকের ওপর চাপ অনুভব করা, ভীতি বা দুশ্চিন্তায় প্রতিক্রিয়া,শ্রবণ ও দৃষ্টিতে কিছু অলীক বোধ ও হাওয়ায় ভেসে থাকার অনুভূতি। স্বাভাবিক ভাবেই, এই অনুভূতিগুলো আমাদের কুসংস্কারি চিন্তার সাথে মিলে মিশে আমাদের মনে করায় যে কোনও দানব বা আত্মার অধীনে আমরা।এই সব অনুভূতি ও অলীক কল্পনাগুলোকে আরও জোরালো করে তোলার জন্য এরকম সব গল্পকথাগুলো। এগুলোকে সুযোগ দিয়ে,আমরা এদেরকে বিশ্বাস করি এবং বাইরের শক্তিকে আমাদের সুযোগ দিই। তাই এই দানব,আত্মা – সবই আমাদের মনগড়া,এছাড়া আর কিছুই নয়।