অবিস্বাসেই একা থেকে যান জয়ললিতা, এমনই চমকে ওঠার মত তার জীবন
ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী এবং জননেত্রী। তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও তামিল অভিনেতা এম জি রামচন্দ্রনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথা সর্বজনবিদিত। তবু কোন মানসিক আঘাত পেয়ে জয়ললিতা বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন না?
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার ব্যক্তিগত জীবন যেমন রঙিন ছিল, তেমনই ছিল রহস্যে মোড়া। শেষ জীবনে তাঁর ব্যক্তিগত পরিসরে বিশেষ কারও প্রবেশাধিকারও ছিল না। তিনি ছিলেন চিরকুমারী। কিন্তু এমনটা নয় যে, জয়ললিতার কোনও রোমান্টিক সম্পর্ক কখনই ছিল না। তবু কেন তিনি বিয়ে করলেন না? তামিল পত্রিকায় জয়ললিতার আত্মজীবনী ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের কথা থেকে যে সম্ভাব্য কারণগুলি জানা যায়:
১. জয়ললিতাকে ছোট থেকেই অনেক বাধা-বিপত্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার জন্য মাত্র ১৫ বছর বয়সে মা-বাবার ইচ্ছায় তিনি অভিনয়ে নামতে বাধ্য হন। তাঁর আইন নিয়ে পড়াশোনার আশা ধাক্কা খায়। তখনই বাবা-মায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে চিড় ধরে। নিজের বাবার সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন, তিনি বেহিসেবি আর আরামপ্রিয় ছিলেন। সেই থেকেই সম্ভবত পুরুষদের প্রতি তাঁর বিতৃষ্ণা জন্মাতে শুরু করে।
২. স্কুলে পড়ার সময়ে এক কিশোরের প্রেমে পড়েন তিনি। কিন্তু সে প্রেম অচিরেই ভেঙে যায়। শোনা যায়, ছেলেটি জয়ার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল।
শোভন বাবুর সঙ্গে জয়ললিতা
৩. অভিনয় করতে গিয়ে ঘনিষ্ঠতা হয় তেলগু হিরো শোভন বাবুর সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে সহবাসও করেন দীর্ঘদিন। তবে সে সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি। রাজনীতিতে আসার আগেই শোভন বাবুকে ছেড়ে চলে আসেন জয়া। সেই সময়ে তিনি একবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন।
৪. জয়ললিতার জীবনের সবচেয়ে আলোচিত সম্পর্ক বোধ হয় তাঁর সঙ্গে তামিল মহানায়ক এম জি রামচন্দ্রনের। এমজিআর শুধু জয়ার ছবির হিরোই ছিলেন না, জয়ার রাজনীতির হাতেখড়ি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমজিআর-এর থেকেই। তাঁদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। ততদিনে অবশ্য রামচন্দ্রনের দু’টি বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রী জানকী কখনই জয়ললিতাকে রামচন্দ্রনের কাছে আসতে দিতে চাননি। রামচন্দ্রনের মনে জয়াকে নিয়ে সন্দেহও দানা বেঁধেছিল। এমজিআর-এর অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে জয়া তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পদেও বসতে চেয়েছিলেন। সেই প্রণয়ের সমাপ্তি সুখের হয়নি।
এমজিআর-এর সঙ্গে জয়া
৫. তিনি মনে করতেন, প্লেটনিক প্রেম বলে কিছু হয় না। একজন পুরুষ ও মহিলার মধ্যে হয় রোমান্টিক সম্পর্ক বা শুধুই বন্ধুত্ব হতে পারে। জয়া জীবনে কোনও পুরুষকেই বিশ্বাস করতে পারেননি। যাঁদেরকে বিশ্বাস করতে চেয়েছিলেন, তাঁরাই জয়ললিতাকে হতাশ করেছিলেন। ফলে জয়া গভীর একাকীত্বে ভুগেছেন সারাজীবনই। একবার বলেওছিলেন, জীবনে একমাত্র একজনকেই বিশ্বাস করবে— নিজেকে।