May 14, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular ব্যবসা ও প্রযুক্তি

ভূমিকম্পে একচুলও নড়বে না বোতলের তৈরি বাড়ি

[kodex_post_like_buttons]

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা আমরা কমবেশি সবাই জানি। তবে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের নাম শুনলেই আমরা চিন্তায় পড়ে যাই। কারণ বিপুল পরিমাণ প্রাণঘাতী দুর্যোগের নাম ভূমিকম্প। কোনো রকম পূর্বাভাস জানার উপায় নেই। হঠাৎ ঘটে যায় এ দুর্যোগ। ধ্বংস হয় জনপথ। প্রাণ হারায় মানুষ।

ভূমিকম্প প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি গ্রহণ করে থাকে।তবে এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই নাইজেরিয়া।তাই ভূমিকম্প প্রতিরোধে বোতলের বাড়ি বানাচ্ছেন তারা। এই বোতলের বাড়িতে তেমন খরচ নেই বললে চলে। এছাড়া প্লাস্টিক দূষণ ঠেকাতে, বেকারত্ব দূর ও ভূমিকম্প প্রতিরোধে নতুন এক প্রকল্প হাতে নিয়েছে নাইজেরিয়া৷

জার্মান উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সাত বছর আগে নাইজেরিয়ার কিছু নির্মাণশ্রমিককে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেই এখন পরিণত হয়েছেন দক্ষ প্রশিক্ষকে৷ এখন বোতল বাড়ি নির্মাণকাজে আগ্রহীদের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে৷

আসুন দেখে নেয়া যাক বোতল দিয়ে কীভাবে ভূমিকম্প প্রতিরোধে বাড়ি তৈরি করে নাইজেরিয়ার অধিবাসীরা।

নাইজেরিয়ার বোতল বাড়ি : প্লাস্টিক দূষণ ঠেকাতে ও বেকারত্ব দূর করতে নতুন এক প্রকল্প হাতে নিয়েছে নাইজেরিয়া৷ প্রকল্পের আওতায় প্লাস্টিক বোতল এবং বালি দিয়ে বানানো হচ্ছে বাসাবাড়ি৷ এই বাড়িগুলো পরিবেশসম্মত এবং দীর্ঘস্থায়ী৷

প্রশিক্ষণ, দক্ষতা : ইটের বাড়ি বানানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন সিইবা৷ কিন্তু গত সাত বছর ধরে তিনি ইটের বদলে বাড়ি বানাচ্ছেন বোতল দিয়ে৷

ভিন্ন ধরনের রিসাইক্লিং : প্রায় ১৯ কোটি মানুষের দেশটিতে প্লাস্টিক একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে৷ প্লাস্টিক বোতল মাঝেমধ্যেই দেশটির শহরগুলোর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি করে৷ বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও বাজে রূপ নেয়৷ বছরে উৎপাদিত ৩ দশমিক ২ টন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দেশটিতে নেই তেমন কার্যকর ব্যবস্থা৷ ফলে রিসাইক্লিং যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে৷

প্রকল্পের উদ্যোক্তা : ইঞ্জিনিয়ার ইয়াহিয়া আহমেদ জার্মানিতে ২৭ বছর ধরে বাস করেছেন, চাকরিও করেছেন৷ নিজের দেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশদূষণ নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকায় বানানো এ ধরনের কিছু বাড়ি থেকেই এই ধারণা পান আহমেদ৷ তিনি বলেন, জার্মানিতে এক বন্ধু আমাকে এ বুদ্ধি দেয়৷ ভাবলাম, নাইজেরিয়াতে এটা কাজে লাগানো যায়৷

বেকারত্ব নিরসন : নাইজেরিয়ার ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের এক চতুর্থাংশেরই কোনো নিয়মিত আয় নেই৷ অনেককেই শেষ পর্যন্ত জীবনধারণে বেছে নিতে হয় ভিক্ষাবৃত্তি বা চুরি৷ আহমেদ বলছেন, এদের অনেকে রাজনীতির শিকারে পরিণত হয়, কেউ জড়িয়ে পড়ে মৌলবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে৷ এ জন্য তাদের বিকল্প উপায় দিতে হবে৷

সাধারণ কিন্তু কার্যকর : নির্মাণ প্রক্রিয়া বিস্ময়করভাবে সহজ৷ প্লাস্টিকের খালি বোতল বালি এবং পাথরকুচি দিয়ে ভর্তি করা হয়৷ এরপর নাইলনের দড়ি দিয়ে বেঁধে সেগুলোকে একটার ওপর একটা সাজিয়ে কাদা দিয়ে আটকে দেয়া হয়৷ এই পদ্ধতি যে শুধু পরিবেশবান্ধব তাই নয়, খরচও অনেক কম৷ এতে নির্মাণ খরচ প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কমানো সম্ভব৷

বুলেটপ্রুফ এবং ভূমিকম্প-প্রতিরোধী : বোতল বাড়ির আরেক বড় সুবিধা- স্থায়িত্ব৷ বালিভর্তি বোতলগুলো প্রায় অবিনশ্বরই বলা চলে৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকার হন্ডুরাসে বানানো এমন কিছু বাড়ি ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পেও অক্ষত ছিল৷ নির্মাতাদের দাবি, এই বাড়িগুলো বুলেটপ্রুফ৷

অসীম সৃষ্টিশীলতা: আবুজা প্রকল্পে নানা আকারের ও বর্ণের প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করা হয়৷ ফলে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইনে বাড়ি বানাতেও কোনো বাধা নেই৷ উত্তর নাইজেরিয়ার ঐতিহ্যবাহী বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে নানা রং ও নকশা মিলিয়ে তৈরি হচ্ছে অপূর্ব কিছু বাড়ি।

Related Posts

Leave a Reply