May 14, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular ওপার বাংলা সফর

বেড়াত ভালোবাসেন? তাহলে বাংলাদেশের এই পাঁচ স্থানে একবার অবশ্যই যান  !

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

ন ধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা। হ্যাঁ, আমাদের এই দেশটা প্রকৃতির আশির্বাদ ধন্যা। অনেক দিয়েছিলো প্রকৃতি আমাদের। কিন্তু আমাদের নগ্ন নাগরিক লালসা আর ইট-কাঠের দৌরাত্ম তার প্রায় সবই কেড়ে নিয়েছে। প্রকৃতির সাথে আমাদের আত্মিয়তা আজ দুর সম্পর্কের!!

কিন্তু তার মাঝেও দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নিজের রুপের পসরা সাজিয়ে বসে আছে প্রকৃতি।  কি জানি, হয়ত আমাদের ঈর্ষান্বিত করে তোলার জন্যই প্রকৃতির এই খেলা নাকি, নাগরিক লালসার শিকার ক্ষত-বিক্ষত মানব হৃদয়গুলোকে দু-দন্ড শান্তি দেওয়ার জন্য!! সে যাই হোক, চলুন জেনে নেই আমাদের এই দারুন সুন্দর দেশটার তেমনই কয়েকটি চিত্ত প্রশান্তিকর জায়গার কথা!

তিন্দু, বড় পাথর : কেউ যদি প্রশ্ন করেন বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর নদী কোনটি তাহলে একটুও না ভেবে অবলীলায় সাঙ্গুর নামটাই বলা যায়। বাংলাদেশে উৎপত্তি হওয়া একমাত্র নদী সাঙ্গুকে বলা যায় বান্দরবানের প্রান। বিভিন্ন বনজ সম্পদ আহরন, বান্দরবানের অনেক গহীনে বসবাসরত আদীবাসি জনগোষ্ঠির জীবন যাত্রা, আর দু-কুল চাপানো দম বন্ধ করা অসাধারন সুন্দর এই নদীটার সবচেয়ে সুন্দর অংশটুকুর নাম বড় পাথর।

তিন্দু পাড়ার খুব কাছে হওয়ায় বড় পাথরকে অনেকে তিন্দু নামেও চেনেন। সারি সারি অতিকায় সব পাথরের মাঝ দিয়ে ঝিরঝির করে বয়ে যাওয়া সাঙ্গু ভরা বর্ষায় ভয়ংকর রুপ নেয় বিধায় বর্ষা পরবর্তি সময় থেকে বসন্ত কাল পর্যন্ত সময়টুকু তিন্দু ভ্রমনের জন্য উপযুক্ত। এখানে বলে নেয়া আবশ্যক যে যারা নাফাকুম এবং তারও পরের কোন লক্ষ্যকে সামনে রেখে থানছি থেকে যাত্রা করবেন তাদের কাছে তিন্দুর সৌন্দর্য একটা বাড়তি পাওনা। আর যাদের এতোটা সময় নেই তারা শুধু তিন্দুর পাথরের সাম্রাজ্য ঘুরে আসতে পারেন খুব সহজেই।

নাফাকুম : বান্দরবানে যতগুলো গন্তব্য অভিযানপ্রিয় কিংবা ঘুরোঘুরি পাগল মানুষের কাছে বর্তমান সময়ে অসম্ভব জনপ্রিয় তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ গন্তব্য নাফাকুম জলপ্রপাত। থানছি থেকে একটা ইঞ্জিন বোটে রেমাক্রি আর রেমাক্রি থেকে ভোর ভোর জেগে উঠে রেমাক্রি খাল ধরে তিন ঘন্টারও কম সময়ের হাটা পথ নাফাকুম।

দিনে দিনেই আবারো রেমাক্রি ফিরে এসে পরদিন বাড়ির পথ ধরা যায় অনায়াসেই। যারা ক্যাম্পিং করতে ভালোবাসেন তাদের জন্যে নাফাকুম একটি আদর্শ জায়গা। যেকোন পূর্ণিমায় খাবার দাবার, তাবু এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সমেত রওনা দিতে পারেন এই অনিন্দ্য সুন্দর জলপ্রপাতের পাশে একটা রাত হাসি, গান আড্ডায় ভেসে যাওয়ার জন্য।

সুন্দরী কুম : বাংলাদেশের ভ্রমণপিপাসু মানুষগুলোর মাঝে বান্দরবানের রুমা বাজার নামটা শোনেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। আর যারা চেনেন তাদের তো কথাই নেই। এই রুমা বাজারের পাশ ঘেষে সাঙ্গুতে গিয়ে মিশে যাওয়া একটা খালের নাম রুমা খাল। অবাক করা সুন্দরের আধার এই রুমা খাল ধরে দুই বা তিন ঘন্টার হাটা পথ বগামুখ গ্রাম।

এই গ্রামে একটা রাত পাহাড়ি মানুষগুলোর সাথে কাটিয়ে পরদিন ভোরে আবারও রুমা খাল ধরে এগিয়ে গেলে দুই ঘন্টারও কম সময়ে পৌছে যাবেন চোয়াল ঝুলে পড়া সৌন্দর্যে মাখামাখি হয়ে থাকা সুন্দরী কুম। পুরোটা দিন কুমের পানিতে দাপাদাপি, লাফালাফি করে কাটিয়ে সন্ধ্যার আগে আবারও ফিরে আসতে পারেন বগামুখ গ্রামে।

বাংলার নায়াগ্রা রাইখ্যিয়াং জলপ্রপাত : বিলাইছড়ির লোম্বোক রো রেঞ্জের বুক চিরে হিম হিম ঠান্ডা জলের নুপুর বাজিয়ে চরম উচ্ছলতায় এলোমেলো নিয়মে ছুটে চলা তুলতুলে সুন্দর একটা পাহাড়ি ঝিরি হলো রাইখ্যিয়াং। অনেকের কাছে রাইখ্যিয়াং খাল নামে পরিচিত এই ঝিরিতেই রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং অনিন্দ সুন্দর জলপ্রপাত রাইখ্যিয়াং।

অনেকগুলো ধাপে ধাপে নেমে যাওয়া বিশাল দেখতে এই জলপ্রপাত সারা বছর অনেকটাই শুকনো দেখা গেলেও বর্ষা কিংবা বর্ষা পরবর্তি সময়ে এই প্রপাতকে তার আসল রুপে দেখা যায়। যে কোন পথিককে পথের ক্লান্তি ভুলিয়ে দিতে সক্ষম এই জলপ্রপাত মানচিত্র অনুযায়ী রাঙ্গামাটির বিলাইছড়িতে অবস্থিত হলেও বান্দরবানের রুমা বাজার থেকে যাত্রা শুরু করা ছাড়া এখানে যাওয়ার আর তেমন কোন উল্লেখযোগ্য পথ নেই। রাইখ্যিয়াং জলপ্রপাতে যাওয়া আসার পথ বেশ কষ্টসাধ্য এবং সময়স্বাপেক্ষ। তাই, পাহাড়ি পথে চলাচলের ব্যাপারে অনভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে পূর্ব প্রস্তুতি একটা অপরিহার্য বিষয়।

রাইখ্যিয়াং লেক : বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক লেক হিসেবে খ্যাত রাইখ্যিয়াং লেক বা রাইখ্যিয়াং পুকুর প্রকৃতির এক অনন্য সৃষ্টি। যারা রাইখ্যিয়াং জলপ্রপাত কিংবা দুমলং পাহাড় চূড়া জয়ের স্বপ্ন নিয়ে লোম্বোক-রো রেঞ্জের দিকে যাবেন তাদেরকে অবশ্যই একরাত বা দুরাত থাকতে হয় পুকুরপাড়া কিংবা প্রাঞ্জং পাড়ায়। রাইখ্যিয়াং জলপ্রপাতের খুব কাছেই ছবির মত এই দুইটা গ্রামকে দুই ধারে রেখে প্রেয়সীর ছলছল চোখের মত মায়াময় রাইখ্যিয়াং পুকুর না দেখা পর্যন্ত কারো পক্ষেই এর সৌন্দর্য্য অনুধাবন করা সম্ভব নয়।

Related Posts

Leave a Reply