May 14, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

৭ এই লুকিয়ে ডিভোর্সের ভবিষ্যদ্বাণী

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

কেউই হয়তো শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বলতে পারে না যে, একটি দম্পতি ডিভোর্সের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু সমাজবিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে বেশ ভালো ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম হয়েছেন। গবেষকরা দেখেছেন, ডিভোর্স নেওয়া দম্পতিদের মধ্যে কিছু বিষয়ে মিল রয়েছে, যেমন তাদের দাম্পত্য কলহের ধরন, অন্যের কাছে নিজেদের সম্পর্কের ব্যাখ্যা দেওয়ায় ধরন, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাগত জীবন।
নিচে ৭টি কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে কোনো দম্পতির ডিভোর্সের সম্ভাবনা ধারণা করা যেতে পারে।
১. কিশোর বয়সে অথবা বত্রিশ বছর বয়সের পর বিয়ে করা

বিয়ে করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে, যখন আপনি নিজেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত মনে করেন এবং এমন কাউকে খুঁজে পেয়েছেন যার সঙ্গে সারাজীবন কাটানো সম্ভব বলে নিশ্চিত হন।

এক সমীক্ষা মতে, যারা কিশোর বয়সে অথবা ৩০ বছর বয়সের পর বিয়ে করেন তাদের ক্ষেত্রে ডিভোর্সের ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে কিশোর বয়সিদের জন্য এ ঝুঁকি বেশি।
ইউনিভার্সিটি অব ইউটাহ’র প্রফেসর নিকোলাস উল্ফফিঙ্গার এর গবেষণা অনুযায়ী, ৩২ বছর বয়সের পরে বিয়ে হওয়া দম্পতির ডিভোর্সের সম্ভাবনা প্রতি বছর ৫% করে বাড়তে থাকে। তিনি বলেন, ২০ বছর বয়সের পরই বিয়ে করার ভালো সময়। ২০১৫ সালে প্রকাশিত অপর একটি গবেষণায় তিনি বলেন, স্বামী স্ত্রীর বয়সের বয়সের অধিক পার্থক্য ডিভোর্সের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
‘দ্য আটলান্টিক’ এ প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, বয়সের পার্থক্য ১ বছর হলে, ডিভোর্সের সম্ভাবনা ৩%, ৫ বছর হলে সম্ভাবনা ১৮% এবং ১০ বছর হলে ৩৯%।
২. স্বামীর ফুল টাইম চাকরি না থাকা

হার্ভার্ড থেকে প্রকাশিত ২০১৬ এর এক গবেষণামতে, আর্থিক অবস্থা নয় বরং কাজের ধরনের ওপর ডিভোর্সের ঝুঁকি নির্ভর করে। গবেষক আলেকজান্ডারের মতে, যেসব দম্পতিদের মধ্যে স্বামীর ফুল টাইম চাকরি নেই তাদের ডিভোর্সের সম্ভাবনা বেড়ে দাঁড়ায় ৩.৩% এবং ফুল টাইম চাকরি থাকলে সেই সম্ভাবনা কমে দাঁড়ায় ২.৫%। তবে স্ত্রীর উপার্জনের বিষয়টি ডিভোর্সের ক্ষেত্রে তেমন ভূমিকা রাখে না। গবেষকদের মতে, স্বামীরাই ঘরের কর্তা, তারা ঘরে নয় বাইরেই বেশি সময় কাটাবে এবং উপার্জন করবে এই চিন্তাভাবনা এখনো সমাজে বিদ্যমান বলে এরকমটা হয়।
৩. শিক্ষাজীবন সম্পন্ন না করা

অস্বাভাবিক মনে হলেও, যারা শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি টেনে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন, তাদের ডিভোর্সের ঝুঁকি তুলনামূলক কম। অন্তত গবেষণা তাই বলে।
ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিক্স এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি পোস্টে ন্যাশনাল লঙ্গিচ্যুডিনাল সার্ভে অব ইয়ুথ (১৯৭৯) এর ফলাফল তুলে ধরা হয়, যা কয়েকটি দম্পতির বিয়ে এবং ডিভোর্সের ধরন এর ওপর গবেষণা করেছিল। পোস্টে বলা হয়: ‘শিক্ষিত দম্পতির ডিভোর্সের সম্ভাবনা কম, আর শিক্ষাজীবন শেষ না করা দম্পতিদের প্রায় অর্ধেক সংখ্যকের ডিভোর্সের সম্ভাবনা থাকে, যেখানে শিক্ষিত দম্পতিদের মধ্যে ডিভোর্সের সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ দম্পতির।’ এর কারণ হিসেবে, নিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতার ফলে নিম্ন উপার্জন এবং এর ফলশ্রুতিতে জীবনযাত্রার নিম্নমান উল্লেখ্য।
৪. সঙ্গীর প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করা

মনোবিজ্ঞানী জন গটম্যান দাম্পত্য জীবনের কিছু বিষয়কে ফোর হর্সম্যান অব অ্যাপোক্যালিপস’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যেগুলো খুব নিখুঁতভাবে ডিভোর্সের লক্ষণ প্রকাশ করে।
* অবজ্ঞা : সঙ্গীকে নিজের চেয়ে ছোট করে দেখা। তাকে নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগা।
* সমালোচনা : সবসময় সঙ্গীর দোষত্রুটি তুলে ধরা, তার সমালোচনা করা।
* দায়িত্বহীনতা : কোনো সমস্যায়, বিপদ আপদে দায়িত্ব নিতে না চাওয়া।
* নির্বিকার আচরণ : তার পছন্দের বা প্রিয় কোনো ব্যাপারে আগ্রহ না দেখানো, কথাবার্তার সময় নির্বিকার আচরণ করা।
৫. নবদম্পতির মতো অতিরিক্ত স্নেহশীলতা

আপনি যদি আপনার সঙ্গীকে চুমু দেয়া, জড়িয়ে ধরা এবং তার হাত ধরার প্রতি আগ্রহী না হন তবে সেটা একটা সমস্যা হতে পারে। তবে আপনি যদি এই ব্যাপারে অতি আগ্রহী হয়ে থাকেন সেটা আরো বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে।
মনোবিজ্ঞানী টেড হস্টন ১৩ বছর ধরে ১৬৮টি দম্পতির ওপর গবেষণা করেন। তিনি এবং তার দল দম্পতিদের বিয়ের দিন থেকে শুরু করে পর্যবেক্ষণকালীন সময়ে বেশ কিছু ইন্টারভিউ নিয়েছেন। পরবর্তীতে তার গবেষণায় চমকপ্রদ এক ফলাফল পাওয়া যায়, আর তা হলো- বিয়ের ৭ বছর বা তার আরো পরে যেসব দম্পতির মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে তারা নতুন দাম্পত্য জীবনের শুরুতে যারা পরবর্তীতে সুখী দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছে তাদের চেয়ে অন্তত এক তৃতীয়াংশ বেশি ভালোবাসা ও রোমান্টিকতা প্রকাশ করেছিলেন।
সাইকোলোজি টুডের এক কলামে বিশেষজ্ঞ এভিভা প্যাটজ বলেন, যেসব দম্পতির সম্পর্কের শুরুটা হয় প্রচন্ড রোমান্টিকতায়পূর্ণ তাদের সম্পর্কেই ডিভোর্স বেশি দেখা যায় কারণ চাইলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শুরুর ভালোবাসার এই তীব্রতা পরবর্তীতে ধরে রাখা যায় না। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, যেসব বিয়ের শুরুতে ভালোবাসা হলিউড স্টাইলের না হয়ে বরং সাধারণভাবেই শুরু হয় সেসব বিয়ের ভবিষ্যতই বেশি উজ্জ্বল বলে দেখা যায়।
৬. কথা বলা বা ঝগড়ার সময় নির্বিকার থাকা

যখন আপনার সঙ্গী আপনার সঙ্গে কঠিন কোনো বিষয়ে কথা বলেন অথবা ঝগড়া চলার মুহূর্তে আপনি কি কোনো মতামত না দিয়ে একেবারে চুপ করে থাকেন? অথবা আপনার সঙ্গে এমনটা হয়? যদি তাই হয় তবে এটা আপনার সম্পর্কের জন্য খারাপ লক্ষণ।
২০১৩ সালের ৩৫০ দম্পতির ওপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বামীর মধ্যে এমন নির্বিকার মনোভাব থাকলে সেই সম্পর্কে ডিভোর্সের সম্ভাবনা বেশি। এছাড়া যে সম্পর্কে একজন অপরের চাওয়া পাওয়ার খুব একটা মূল্য দেয় না, সেই সম্পর্ক খুব একটা সুখী হয় না।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আমরা নিজেদের দোষটা বুঝতে পারি না। প্রত্যেকেই ভাবে তার সঙ্গীই হচ্ছে সমস্যার প্রধান কারণ। এ ধরনের মনোভাব সবার আগে ত্যাগ করতে হবে। প্রত্যেকটা সমস্যায় আপনি কিভাবে কথা বলছেন, সমস্যার সমাধানে আপনার ভূমিকা কী সেটাও খেয়াল রাখা দরকার। মনে রাখবেন, এক হাতে তালি বাজে না।
৭. সম্পর্ক নিয়ে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা করা

১৯৯২ সালে একদল গবেষক নতুন বিবাহিত দম্পতিদের এক বিশেষ ধরনের ইন্টারভিউ নিয়েছিল যাতে তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই তাদের সম্পর্কের ভিন্ন ভিন্ন ব্যাপারে মতামত জানতে চেয়েছিল। তাদের মতামত বিশ্লেষণ করে গবেষকরা অনুমান করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, কোন কোন দম্পতির ডিভোর্সের ঝুঁকি রয়েছে। তাদের গবেষণায় দেখা যায়, নির্দিষ্ট কিছু প্যারামিটারে স্বামী-স্ত্রীর স্কোরই তাদের সম্পর্কের দুর্বলতা বা শক্তিমত্তা প্রকাশ করে থাকে। তার মধ্যে রয়েছে:
* একে অপরের প্রতি স্নেহ-মমতা।

* সম্পর্কে ‘আমি’ ভাব দূর হয়ে প্রত্যেক সঙ্গীর মধ্যে ‘আমাদের’ বোধটা তৈরি হয়েছে কিনা।

* সঙ্গীর বলা কোনো কথাকে অন্যজন কতটুকু পর্যন্ত টেনে লম্বা করে।

* সম্পর্ক নিয়ে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা

* বিবাহিত জীবন নিয়ে হতাশা

Related Posts

Leave a Reply