May 15, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

ওজন কমাতে বেল্ট? কোন ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনছেন জানেন !

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

তুন পোশাক পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখলেন পেটের মেদে বাধ সাজছে পোশাকের সৌন্দর্য। প্রায়ই মনে হয়, ডায়েট না মানতে পারার গ্লানি ও শরীরচর্চার সময় না বেরনোর জন্যই চেহারা বাড়ছে আড়ে-বহরে। আর তাকে বাগে আনতেই কম পরিশ্রমের উপায় খুঁজতে বসেন অনেকেই।

ঝঞ্ঝাটবিহীন উপায়ে মেদ ঝরাতে অনলাইনে বেল্ট অর্ডারের পথ ধরার প্রবণতা তাই বাড়ে। বিশেষ করে পুজোর আগেই বিনা শ্রমে ঝরিয়ে ফেলা যাবে বাড়তি মেদ। এই আশাতেই মাস কয়েকের জন্য মেদ ঝরানোর বেল্ট বেছে নেন অনেকে। কিন্তু সত্যিই কি কাজ হয় এতে?

চিকিৎসকদের মতে, আসল সত্যিটা জানলে এই ফাঁকিবাজি করে মেদ ঝরানোর আগে দু’বার ভাবতে হবে। আসলে মুখরোচক খাবার খেয়ে বেশির ভাগ মানুষই ছোট থেকেই পেটে মেদ বানিয়ে বসে থাকেন। এমনিতেই জিনগতভাবে আমাদের অনেকেরই ভুঁড়ির প্রবণতা বেশি। চেহারা খারাপ লাগা ছাড়াও পেটে মেদ জমার কারণে অনেক অসুখবিসুখের শঙ্কা বেড়ে যায়।

তবে শঙ্কা নিয়ে কথা বলতে গেলে বেল্টের কর্মপদ্ধতি জানাটা আগে জরুরি। চওড়া বেল্ট পেটে টাইট করে আটকে নিয়ে বেশি তাপমাত্রার সাহায্যে ঘাম গ্রন্থি বা সোয়েট গ্ল্যান্ডের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে ওই অংশে প্রচুর ঘাম হয়। আর এই কারণে কিছুটা হালকা লাগে। সামান্য ছিপছিপে যে লাগে না তাও নয়। তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এতটাই বেশি যা শরীরের পক্ষে মোটেই ভালো নয়।

‘বেশির ভাগ বাজারচলতি বেল্টে শরীরের মাঝের অংশের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হয় একশ পাঁচ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত। এর ফলে ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। ত্বকের র‌্যাশ তো বটেই, এছাড়া এগজিমা বা সোরিয়াসিসের প্রবণতা থাকলে বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। অতিরিক্ত ঘাম বেরিয়ে যাওয়ার কারণে ডিহাইড্রেশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর ওজন কমছে বলে মনে হলেও আসলে ঘাম ঝরার জন্যই একটু ঝরঝরে লাগে মাত্র। আসলে অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীর থেকে অনেকটা পানি বেরিয়ে যায় বলে ওজন কিছুটা কমলেও তা কিন্তু খুব সাময়িক।’

‘চটজলদি মেদ কমানোর হাতিয়ার বেল্টের আরো অনেক ক্ষতিকর দিক আছে। ফাঙ্গাল ইনফেকশনের পাশাপাশি  রক্তচাপ থাকলে তা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অনেকের হার্টে চাপ পড়ে বুক ধড়ফড় করতে পারে। ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বেশি পেটে এই বেল্ট বেঁধে রাখলে পরবর্তীকালে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ায়। আসলে স্পার্মের জন্যে লাগাতার গরম মোটেও ভালো নয়। এর ফলে একদিকে স্পার্ম কাউন্ট কমে যায়, অন্য দিকে টেস্টিকুলার টেম্পারেচর বেড়ে যায় বলে স্পার্ম উৎপাদন বরাবরের জন্যে ব্যহত হতে পারে। এর দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার প্রস্টেট ও টেস্টিক্যুলার ক্যানসারও ডেকে আনতে পারে।’

আর এক ভুল ধারণা হল এই বেল্ট ব্যবহারের পরে পরেই কনকনে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে নাকি রাতারাতি ওজন কমে যায়। জাপানের ‘সেন্ট মারিয়ানা ইউনিবার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন’-এ প্রকাশিত সমীক্ষা অমুযায়ী, এই কাণ্ডটি করে প্রতি বছরই অজস্র অল্পবয়সি ছেলেমেয়ে মারাত্মক জ্বরের শিকার হয়।

ওজন কমাতে বেল্টের ব্যবহার দেশে দেশে এতটাই জনপ্রিয় যে প্রতি বছর এই ধরনের বেল্ট দিয়ে মেদ কমানোর চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়। ২০১০ সালে রাশিয়ায় আয়োজিত এমনই এক চ্যাম্পিয়নশিপে এক খেলোয়াড়ের মৃত্যুও হয়। তার পর থেকেই বেল্টের ব্যবহারে রাশ টানছে বিশ্বের উন্নততম দেশগুলো।

চিকিৎসকরাও তাই এই বেল্ট ব্যবহারে একেবারেই সম্মতি দেন না, উল্টে স্বাভাবিক খাবার খেয়ে ও নিয়ম করে শরীরচর্চা করেই মেদ ঝরানোর পক্ষপাতি তারা। ফাঁকিবাজিতে কোনো মহৎ কার্য হয় না যে!

Related Posts

Leave a Reply