May 19, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

মাছের মাথা দিয়ে মুগ ডাল খাবার ফল কি জানেন ?

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
জিভে জল এসে গেল মশাই! রবিবাসরীয় দুপুরে গরম ভাত আর ঠাম্মার হাতে তৈরি মুগের ডাল, আর তাতে আইফেল টাওয়েরর মতো মাথা তুলে থাকা মাছের কাঁটা আর মাথা। আহা কি দারুন স্বাদ। কি তাই না! একেবারেই! আমার-আপনার মতো খাদ্য রসিকের কাছে এই পদ বাস্তবিকই অমৃতের সমান। কিন্তু মুগ ডাল কি আদৌ স্বাস্থ্যকর ? ছোট থেকে দাদু-দিদার মুখে শুনে আসছে প্রাকৃতিক উপাদান সব সময়ই উপকারি। তাহলে মুড ডাল নিয়ে আজ এই কথা উঠছে কেন? প্রশ্ন উঠছে কারণ এর আগে কেউ কখনও এই ডালটি আমাদের শরীরের উপকারে লাগে কিনা, সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করেনি। তাই তো সব ধরনের প্রামাণ্য নথি নিয়ে মুগ ডালের সম্পর্কে বেশ কিছু অজানা খবর আপনাদের জানাতে চলেছি।
ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায় ১৫০০ বিসি থেকে মুগ ডাল খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে আমাদের দেশে। আসলে এর স্বাদের কারণেই এই ডালটি প্রথম দিকে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তারপর যত সময় এগিয়েছে জানা গেছে যে মুগ ডালের শরীরে রয়েছে একাধিক পুষ্টিকর উপাদান, যেমন- ১৪ গ্রাম প্রোটিন, ১৫ গ্রাম ফাইবার, ১ গ্রাম উপকারি ফ্যাট এবং ৪ গ্রাম শর্করা। সেই সঙ্গে রয়েছে ফলেট, ম্যাগনেসিয়াম, ভিচামিন বি১, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ভিটামিন বি৫, বি৬ এবং ক্যালসিয়াম। এই সবকটি উপাদান যে শরীরের নানা উপকারে লাগে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই একথা বলা যেতেই পারে যে মাছের মাথা দিয়ে বানানো মুগ ডাল শুধু আমাদের স্বাদ গ্রন্থির খেয়াল রাখে না, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। এখন প্রশ্ন হল, প্রতিদিনের ডায়েটে মুগ ডালের অন্তর্ভুক্তি ঘটালে কী কী উপকার পাওয়া যায়?
১. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: ২০১১ সালে জার্নাল অব হিউমেন অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টাল টক্সিকোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে মুগ ডালে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বা এল ডি এল-এর মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই সঙ্গে এই ডালটিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
২. উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় কাজে আসে: মাত্রাতিরিক্ত স্ট্রেসের কারণে কি রক্তচাপ বেশ ওঠা নামা করছে? তাহলে তো মশাই আজ থেকেই মুগ ডাল খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ এই ডলটির শরীরে উপস্থিত পেপটাইড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রপাটিজ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে কেমিস্ট্রি সেন্টাল জানার্লে প্রকাশিত বেশ কিছু গবেষণাও এই বিষয়ে মান্যতা দিয়েছে যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে মুগ ডালের সরাসরি যোগ রয়েছে।
৩. ক্যান্সার রোগ দূরে থাকে: মুগ ডালে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে ক্যান্সার মা ম্য়ালিগনেন্ট সেলের জন্ম নেওয়া আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে টিউমার হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। প্রসঙ্গত, বতর্মানে যে হারে আমাদের দেশে এই মারণ রোগের প্রকোপ বাড়ছে, তাতে মুড ডাল খাওয়া প্রয়োজনীয়তা যে বাড়ছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
৪. টাইপ ২ ডায়াবেটিসের যম: বিশ্বজুড়ে হওয়া একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মুগ ডাল শরীরে প্রবেশ করার পর ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। তাই আপনার বাবা-কাকার যদি এই রোগ থেকে থাকে, তাহলে এখন থেকেই নিয়মিত মুগ ডাল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।
৫. প্রোটিনের ঘাটতি দূর করে: এই উপাদানটি পেশির গঠনের পাশাপাশি সার্বিকভাবে আমাদের শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই শরীরে যাতে কখনও প্রোটিনের ঘাটতি দেখা না দেয়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজে মুগ ডালে আপনাকে দারুনভাবে সাহায্য করতে পারে। কারণ এই ডালটির শরীরে মজুত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা একদিকে প্রোটিনের ঘাটতি যেমন মেটায়, তেমনি শরীরের সার্বিক উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৬. রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে: মুগ ডালে উপস্থিত নানাবিধ ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে মারাত্মক মজবুত করে দেয়। ফলে ফাঙ্গাস, ব্যাকটেরিয়া সহ কোনও জীবাণুই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে ছোট-বড় নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও একেবারে কমে যায়।
৭. ওজন কমাতে সাহায্য করে: মুগ ডালে মজুত ফাইবার অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে জাঙ্ক ফুড খাওয়ার ইচ্ছাও কমে যেতে থাকে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি প্রবেশ করতে না পারার জন্য ওজন বাড়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

Related Posts

Leave a Reply