May 16, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

বয়েস কম হলেই সুস্থ থাকতে এই নিয়মগুলি মেনে চলতেই হবে!

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

কাল সকাল রোগ-ব্যাধি নিয়ে আলোচনা করতে না ভাললাগে, না শুনতে। তবু আজ সকালে আমি এমন একটা কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ বোল্ডস্কাইয়ের তরুণ বন্ধুদের এই নতুন বছরে যদি সুস্থ জীবনের স্বপ্ন পূরণের পথ দেখাতে না পারি, তাহলে একজন লেখক হিসেবে আমার দায়িত্ব অধরাই থেকে যায়। তাই তো এই প্রবন্ধে এমন একটা সত্যের সন্ধান দিতে চলেছি, যা বেজায় কষ্টদায়ক।

মুম্বাইয়ের বিখ্যাত কয়েকদন গাইনীকোলজিস্ট একসঙ্গে একটা সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাতে দেখা গেছে আমাদের দেশের যুবসমাজের প্রায় ৭০ শতাংশেরই নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা বাস্তবিকই ভয়ের খবর। কারণ এত বড় সংখ্যক ছেলে-মেয়ে যদি মারণ ফাঁদে পরে, তাহলে যে আমার-আপনার ছেলে-মেয়ে, ভাই-বনেরাও যে নিরাপদে নেই, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এমন পরিস্থিতির পিছনে কী কী কারণ দায়ি?

চিকিৎসকেরা এই প্রশ্নের সন্ধান চালাতে গিয়ে লক্ষ করেছেন, শরীরচর্চার অভাব, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া পরিবর্তে জাঙ্ক ফুড বেশি মাত্রায় খাওয়া, নানাবিধ রোগের পারিবারিক ইতিহাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা এবং স্ট্রেস, এই সব নানা কারণে যুব সমাজ নানা সব মারণ রোগের ফাঁদে পরছে।

এমন পরিস্থিতিতে তাহলে কি করণীয়? এক্ষেত্রে এই প্রবন্ধে চোখ রাখা চাড়া আর কোনও উপায় নেই! কারণ এই লেখায় এমন কিছু সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা মেনে চললে ৭০ শতাংশের মধ্য়ে যে আপনার বা আপনার পরিবারের কারও নাম থাকবে না, তা নিশ্তিত করে বলতে পারি। তাই আর অপেক্ষা না করে চোখ রাখুন বাকি প্রবন্ধে। শরীরকে সুস্থ এবং সচল রাখতে দৈনিক যে যে নিয়মগুলি মেনে চলা জরুরি, সেগুলি হল…

১. পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে: শরীরের প্রতিটি অঙ্গকে সচল রাখতে জলের প্রয়োজন পরে। তাই শরীর যাতে ভিতর থেকে শুকিয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতেই হবে। আর তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খেতেই হবে! আর যদি এমনটা যদি করতে না পারেন, তাহলে শরীর নিজের কাজ ঠিক মতো করতে পারবে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের সচলতা কমবে। সেই সঙ্গে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়বে। প্রসঙ্গত, শরীরের ছোট ছোট কাজ যাতে ঠিক মতো হয়, তার জন্য যেমন জলের প্রয়োজন পরে, তেমনি দেহের অন্দরে উপস্থিত বিষাক্ত উপাদানকে বার করে দিতে এবং শরীরের প্রতিটি কোণায় পুষ্টিকর উপাদানদের পৌঁছে দিতেও কাজে আসে। তাই ভুলেও দিনে ৩-৪ লিটারের কম জল পান করা চলবে না।

২. ঘুমের ঘাটতি যেন না হয়: ঘুমকে আমরা যতই তাচ্ছিল্যের চোখে দেখি না কেন, মস্তিষ্ক এবং শরীরকে সচল রাখতে ঘুমের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে ঘুমানোর সময়ই আমাদের মস্তিষ্ক নিজের হারিয়ে ফেলা ক্ষমতাকে ফিরে পেতে শুরু করে। ফলে দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুমলে এদিকে যেমন ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়, তেমনি শরীরের সচলতাও বাড়তে শুরু করে। ফলে কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না। প্রসঙ্গত, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে ব্রেনের অন্দরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে একদিকে যেমন মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমতে শুরু করে, তেমনি অন্যদিকে শরীর ভেঙে যায়, সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্যও কমতে শুরু করে। তাই দীর্ঘদিন যদি সুস্থভাবে বাঁচতে চান, তাহলে ভুলেও ঘুমের কোটা কমাবেন না যেন!

৩. মেডিটেশন মাস্ট: ঘুম থেকে ওঠা থেকে রাতে শুতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত সবাই যেন দৌড়ে চলেছে। কারণ প্রতিযোগীতার মানসিকতা কাউকেই থামার অনুমতি দেয় না। তুমি দৌড়াও, না হলে কেউ তোমায় থেতলে চলে যাবে… এমন ভবানাকে বাস্তব মেনে নেওয়ার কারণে সবারই স্ট্রেস লেভেল বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও। তাই এমন পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে নিয়মিত কম করে ২০ মিনিট মেডিটেট করতেই হবে, না হলে আপনার বাঁচার আশঙ্কা যে কমবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আসলে নিয়মিত প্রণায়ম করলে যে শুধু স্ট্রেস কমে, এমন নয়, সেই সঙ্গে ভিতর এবং বাইরে থেকে শরীরের ক্ষমতাও বাড়তেও শুরু করে। ফলে রোগভোগের আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

৪. ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করা জরুরি: একাধিক স্টাডিতে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে নিয়মিত ৩০ মিনিট এক্সারসাইজ করলে ব্রেন পাওয়ার তো বাড়েই, সেই সঙ্গে শরীরের ক্ষমতাও এতটা বৃদ্ধি পায় যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। শুধু তাই নয়, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হার্টের রোগ এবং ব্লাড প্রেসারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। এখন প্রশ্ন হল, যাদের সময়ের অভাবে শরীরচর্চা করা সম্ভব হয় না, তারা কী করবেন? সেক্ষেত্রে নিয়মিত একটু হাঁটা-হাঁটি করতেই হবে, সেই সঙ্গে লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি চড়তে হবে। এমনটা করলেই দেখবেন শরীর অনেক সচল থাকবে।

৫. বেশি করে ফল খেতে হবে: নিয়ম করে প্রতিদিন যদি একটা করে ফল খেতে পারেন, তাহলে শরীর বাবাজিকে নিয়ে দেখবেন আর কোনও চিন্তাই থাকবে না। কারণ ফল মানেই তাতে রয়েছে প্রচুক পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেল, যা নানাভাবে শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, একাধিক রোগকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে। তাই যদি রোগমুক্ত জীবনের স্বপ্ন পূরণ করতে চান, তাহলে রোজের ডায়েটে ফলের অন্তর্ভুক্তি ঘটাতে ভুলবেন না যেন!

৬. সবুজ শাক-সবজি খাওয়া কমালে চলবে না: শরীরের গঠনে ফল খাওয়া যেমন জরুরি, তেমনি লাঞ্চ এবং ডিনারের প্লেটে সবজিকে রাখাও মাস্ট! বিশেষত পালং শাক, ব্রকলি, ফুলকপি, কেল প্রভৃতি সবজি খেতেই হবে। কারণ একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে সবুজ শাক-সবজির অন্দরে থাকা ভিটামনি, মিনারেল, এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, শরীরকে শুধু শক্তিশালী করে তোলে না, সেই সঙ্গে ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

Related Posts

Leave a Reply