May 15, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular সফর

এই রোমান্টিক প্রাসাদের চলে যাবেন রুপকথার রাজ্যে

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

ভ্রমণে যেতে চাইলে এমন কোথাও যাওয়া উচিৎ যেখানে আপনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস, মানুষের তৈরি স্থাপনার সৌন্দর্য এবং রোমান্স সব কিছু পাবেন। এমন একটা যায়গা হলে কেমন হয় বলুন তো। অথবা আপনি এমন একটি প্রাসাদ দেখতে গেলেন যে প্রাসাদের সামনে দাঁড়ালেই আপনি চলে যাবেন রুপকথার রাজ্যে। ঠিক তেমনই একটি প্রাসাদের নাম হচ্ছে ‘পেনা’ যেটা পর্তুগালের সিন্ট্রা পাহাড়ে দারিয়ে আছে।

পর্তুগালের সিন্ট্রা শহরের সাও পেদ্রো ডি পেনাফেরিমে অবস্থিত একটি রোমান্টিকটিস প্রাসাদের নাম ‘পেনা’, যার পুরো নাম এখন (পর্তুগীজ: Palácio Nacional da Pena)। এই প্রাসাদটি এখন জাতীয় প্রাসাদ ও স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই প্রাসাদের দিকে তাকালে আপনার ১৯ শতকের অনেক রোমান্টিক ইতিহাস মনে করিয়ে দিবে। এই প্রাসাদটি সিন্ট্রা শহরের একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। রৌদ্রজ্জ্বল দিনে এই প্রাসাদটি লিসবন থেকে এবং শহরের অন্যান্য স্থান থেকে সহজেই দেখা যায়। এটি এখন ইউনেস্কো’র তালিকাভুক্ত বিশ্ব ঐতিহ্য এবং পর্তুগালের সপ্তাশ্চর্যের একটি স্থাপনা। এছাড়া এই প্রাসাদটিতে এখন সরকারি অনুষ্ঠান অথবা পর্তুগীজ রিপাবলিকের রাষ্ট্রপতির সারকারি অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে।

বলা হয়ে থাকে এই প্রাসাদটির ইতিহাস শুরু হয় মধ্যযুগে, যখন চ্যাপেল আওয়ার লেডি অব পেনা’কে উৎসর্গ করে সিন্ট্রা শুহরের পাহাড়ের উপর এই প্রাসাদটি নির্মাণ করেন। ইতিহাস অনুযায়ী বলা হয়ে থাকে, কুমারী ম্যারি আবির্ভূত হওয়ার পর এই প্রাসাদের নির্মাণকাজ শুরু হয়।

রাজা জন, তার স্ত্রী রাণি লিওনর স্থাপনাটি অনেক প্রিয় ছিল।তারা এই স্থানটিকে পবিত্র স্থান মনে করতেন। তারা প্রাসাদটিকে তীর্থ স্থান হিসেবে ব্যবহার করতেন।

তার উত্তরাধিকার রাজা ম্যানুয়েলI, সন্নাসী জেরমোর কর্তৃক আদেশ পাওয়ার পর এই স্থানে একটি আশ্রম তৈরি করার জন্য অর্থ দান করেন। কারণ ১৪৯৩ সালে, পেনা অনেক ছোট ছিল, ধ্যানের জন্য উপযুক্ত স্থান হলেও, ওখানে সর্বোচ্চ ১৮ জন সন্নাসী থাকতে পারত।

১৮ শতকে একটি ভূমিকম্পে আশ্রমটির ব্যাপকভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। এটা ছিল লিসবনের সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প। তবুও  প্রাসাদের একটি স্থান ‘চ্যাপেল’ (একটি মার্বেল পাথরের সুন্দর কারুকাজ এবং নিকোলাউ চানটেরিন এর সমাধী) তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। এর কিছুদিন পর প্রাসাদটি সংস্কার করার জন্য উচ্চহারে ট্যাক্স আরোপ করা হয়।

যদিও ওই সময় ধ্বংস হওয়া প্রাসাদটি যুবরাজ ফেরদিনান্দর মনে খুব সারা দিত। তারপরেও  প্রায় অনেক বছর ধরে ঐ প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষের কোনো সংস্কার করা হয় নি। ১৮৩৮ সালে, যুবরাজ ফেরদিনান্দ যখন রাজা হলেন তারপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন ঐ পুরাতন প্রাসাদটি আবার সংস্কার করবেন।

তারপর এর সংস্কার কাজ চলতে থাকে ১৮৪২-১৮৫৪ পর্যন্ত। রাজা ফেরদিনান্দ এবং রাণি মারিয়া ঐ স্থাপনার সংস্কার কাজের তত্বাবদানে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তারপর প্রাসাদের সংস্কার কাজ ১৯৪৭ এর দিকে শেষ হয়।

তারপর এই প্রাসদটি খুবই দ্রুত পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তা পর্তুগালের সবচেয়ে আকর্ষনীয় ভ্রমণ স্থানে পরিণত হয়।

সময়ের সাথে সাথে এর লাল ও হলুদ রঙ অনেকটা ঝাপসা হয়ে যায়। অনেক বছর এটা দেখতে ধুসর রঙের ছিল। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এই প্রাসাদ পুনরায় রঙ করা হয় এবং তার আগের রঙ ফিরিয়ে আনা হয়। ১৯৯৫ সালে, প্রাসাদটি ও এর বাগান, আশপাশ এলাকাকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যে তালিকাভুক্ত করে।

তাই বলছি আপনি যদি কখনো পর্তুগাল ভ্রমণে যান তাহলে অবশ্যই সময় করে পেনা থেকে ঘুরে আসবেন। নয়তো অনেক আনন্দময় দৃশ্য ও রোমান্টিকতা থেকে বঞ্চিত হবেন।

Related Posts

Leave a Reply