গম-আটা’র আগেই রুটির জন্ম!
শিরোনাম পড়ে ভাবছেন ইটা আবার হয় নাকি! আটা-গম না হলে রুটি তৈরী হবে কি করে। হয়.. হয়। বিজ্ঞানীরা তো তাই বলছেন। আগে বিজ্ঞানীরা ভাবতেন মানুষ যখন কৃষি আবিষ্কার করেছে, তারপরই রুটির জন্ম হয়েছে। কিন্তু জর্দানে আবিষ্কৃত সাড়ে ১৪ হাজার বছর আগের এক ঐতিহাসিক স্থান সেই ধারণা বদলে দিয়েছে।
কৃষির আবিষ্কার হয় আজ থেকে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার বছর আগে। তখন ছিল হলোসিন যুগ। সে সময় আটটি শস্য গম, বার্লি, সয়া ও শিমও চাষ শুরু হয়। প্রথম দিককার এই কৃষি আবিষ্কৃত হয় মূলত পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে, যার নাম ছিল লেভান্ত। বর্তমান সিরিয়া ও এর আশপাশের অঞ্চল ও দ্বীপগুলো এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ছিল। বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, এই সময়ের পরই মানুষ রুটি বানাতে শেখে। কিন্তু নতুন প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। উত্তর-পূর্ব জর্দানে নতুন আবিষ্কৃত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে তথ্য-প্রমাণ বলছে, প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার বছর আগে পাথরের ওপর সেঁকা হতো রুটি। তখন ছিল নাটুফিয়ান সংস্কৃতি।
এ নিয়ে ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস’ সাময়িকীতে একটি গবেষণামূলক লেখা প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। এর মূল লেখক কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাইয়া আরানৎস-ওটায়েগুই বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। এখন আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, রুটি বানানোর সঙ্গে কৃষি উদ্ভবের কোনো সম্পর্ক আদৌ আছে কি না। এমনও হতে পারে যে রুটিকে মানুষ এতটাই ভালোবেসেছে যে এটি পদ্ধতিগত কৃষি উদ্ভাবনে তাদের উল্টো উৎসাহিত করেছে।’ নাটুফিয়ান সংস্কৃতি বলতে খ্রিস্টপূর্ব সাড়ে ১২ হাজার বছর থেকে সাড়ে ৯ হাজার বছর পর্যন্ত বর্তমান ইসরায়েল, জর্দান, সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের সংস্কৃতি বোঝায়। তারা পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো শহর জেরিকো পত্তন করে। তবে এ গবেষণা এখনো এটা নিশ্চিত করতে পারেনি যে নাটুফিয়ানরা নিয়মিত রুটি খেত কি না।