বাঁচতে গেলে জানতেই হবে ভাটিমিনটির কথা
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
ঠিক যেমন গাড়ি চালাতে গলে পেট্রলের প্রয়োজন পরে। এই উপাদানগুলি আমাদের শরীরে প্রবেশ করে খাবারের মাধ্যমে। তাই তো চোখ বুজে খাওয়া-দাওয়া না করে এই বিষয়ে একটু সচেতন হন। এমনটা করলে উপকার মিলবে দেখবেন। তাই তো জেনে নিন দৈনিক ভিটামিন বি-এর প্রয়োজন কেন পরে আমাদের শরীরের। প্রসঙ্গত, ভিটামিন বি ছাড়াও আরও অনেক খনিজেরও দরকার পরে প্রতিদিন। কিন্তু আজকের এই প্রবন্ধে লাইম লাইট ফেলা হবে কেবল মাত্র এই ভাটিমিনটির উপরই।
আমাদের শরীরকে চাঙ্গা রাখতে ভিটামিন বি-এর কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। কারণ সারা দিনে শরীরের অন্দরে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়, তার চিকিৎসা মূলত এই ভিটামিনটিই করে থাকে। সেই সঙ্গে আরও নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব রয়েছে ভিটামিন বি-এর উপর। তবে তাই বলে ভাববেন না এই কাজগুলি সবই ভাটিমিন বি একা করে থাকে। আসলে ভিটামিন বি হল ৮ টি আলাদা আলাদা ভিটামিনের সমষ্টি। এই আটটি ভিটামিন হল যথাক্রমে বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, বি৭, বি৯ এবং বি১২। কী কী কাজে আসে এই ভিটামিনগুলি? চলুন খোঁজ লাগানো যাক সে বিষয়ে।
বি১: এই ভিটামিনটিকে থায়ামিন নামেও ডাকা হয়ে থাকে। আমাদের নার্ভাস সিস্টেম যাতে ঠিক মতো কাজ করে সেদিকে খেয়াল রাখে এই ভিটামিনটি। সেই সঙ্গে কোষেদের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা নেয় বি১। প্রসঙ্গত, ডাল এবং হোল গ্রেন খাবারে এই ভিটামনটি প্রচুর পরিমাণে থাকে।
বি২: হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি গ্যাস-অম্বলের প্রকোপ কমাতে এবং ব্লাড সেলের সংখ্যা বৃদ্ধিতেও এই ভিটামিনটি সাহায্য করে। তবে এখানেই শেষ নয়, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে চুল এবং ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও এই বি২ বিশেষ কাজে আসে। তাই তো প্রতিদিন বি২ ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- বিনস, দুধ, দই এবং ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
বি৩: হার্ট অ্যাটাকের কারণে যদি মরতে না চান, তাহলে এই ভিটমিনটির ঘাটতি যাতে কোনও সময় না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ বি৩ শরীরে উপস্থিত বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি ভাসকুলার ডিজঅর্ডার এবং শ্বাসকষ্ট জনিত নানাবিধ সমস্যাকে দূর রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই সঙ্গে হাড়কে শক্তপোক্ত করতেও সাহায্য করে। সাধারণত সামদ্রিক মাছ, মাংস এবং বাদামে ভিটামিন বি৩-এর সন্ধান পাওয়া যায়।
বি৫: মিয়মিত ডিম, বাদাম, দুগ্ধজাত খাবার, ব্রকলি, হোল গ্রেন এবং বিনস খেলে শরীরে এই ভিটামিনটির ঘাটতি দূর হয়, যা কোষেদের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
বি৬: প্রায় ১০০ ধরনের এনজাইম রিঅ্যাকশন যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে ভিটামিন বি৬। সেই সঙ্গে প্রোটিন মেটাবলিজম প্রক্রিয়াও ত্বরান্বিত করে। প্রসঙ্গত, দুধ, দই, ডিম, মাংস এবং সবুজ শাক-সবজিতে এই ভিটামিনটি প্রচুর পরিমাণে থাকে। বি৭: চুলের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি ত্বক এবং নখকে সুন্দর রাখার দায়িত্ব রয়েছে এই ভিটামিনটির উপর। শুধু তাই নয়, মেটাবলিজম প্রক্রিয়া যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে ভিটামিন বি৭। মাংস, সয়াবিন এবং পনিরে।
বি৯: প্রেগন্যান্সির সময় এই ভিটামিনটির প্রয়োজন বেড়ে যায়। কারণ চিকিৎসক মহলে ফলেট নামে পরিচিত এই পুষ্টিকর উপাদানটি, শরীর যাতে ঠিক মতো প্রোটিন গ্রহণ করতে পারে, সেদিকে নজর রাখে। সেই সঙ্গে গর্ভাবস্থায় যাতে কোনও ধরনের জটিলতা প্রকাশ না পায়, সে ব্যাপারেও সাহায্য করে। সেই কারণেই তো ভাবি মায়েদের নিয়মিত সবুজ শাক-সবজি, হোল গ্রেন খাবার, বিনস, ডাল এবং কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
বি১২: শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে লহিত রক্ত কণিকার জন্ম দেওয়ার কাজটি করে থাকে এই ভিটামিনটি। সেই সঙ্গে ব্রেন ফাংশনে যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকেও নজর রাখে। একথায় বলা যেতে পারে ভিটামিন বি পরিবারের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য় হল ভিটামিন বি১২। প্রসঙ্গত, এই ভিটামিনটির খোঁজ মেলে মূলত দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, মাংস, সামদ্রিক মাছ এবং সবজিতে।