April 27, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular সফর

চলো যাই আন্দামান (পর্ব ৪)

[kodex_post_like_buttons]
অনিন্দিতা বারুই: 
জ গন্তব্য বারাতাঙ। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে বারাতাঙ প্রায় ১০০ কিমির রাস্তা। বারাতাঙ যেতে হয় জাড়োয়া রিজার্ভ ফরেস্ট এর মধ্যে দিয়ে। এবং সুরক্ষার খাতিরে কোনো গাড়ি একা এই রাস্তা দিয়ে যেতে পারেনা। কনভয় করে যেতে হয়। বারাতাঙ যাওয়ার জন্য জিরকাতাং থেকে কনভয় ছাড়ে। কনভয় ছাড়ার টাইমিং যথাক্রমে সকাল ৬ টা, ৯ টা এবং দুপুর ১২.৩০ টা। আমরা ৬টার কনভয় এ যাবো ঠিক করেছিলাম। সেইমতো হোটেল থেকে বেরোনো হলো ৩.১৫ তে। চারিদিক তখন অন্ধকার। রাস্তাঘাট শুনশান। তার মধ্যে দিয়েই ছুটে চললো আমাদের গাড়ি। ৪.৩০ নাগাদ পৌঁছালাম জিরকাতাং। গিয়ে দেখলাম ইতিমধ্যে বেশ কিছু গাড়ির লাইন শুরু হয়ে গেছে। আমাদের গাড়িও লাইন এ দাঁড়ালো। আর আমাদের ড্রাইভার দাদা গেল পারমিট এর ব্যবস্থা করতে। প্রায় ১.৫ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে এখানে কনভয় ছাড়ার জন্য। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি এরপরের বারাতাঙ যাওয়ার রাস্তা প্রায় ২ঘন্টার। এবং ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সেই রাস্তায় গাড়ি দাঁড়ায়না। তাই জিরকাতাং এই ওয়াশরুম ব্যবহার করে নিন এবং এখানে বেশ কিছু খাবারের দোকান আছে সেখান থেজে প্রয়োজন মতো খাবার ও নিয়ে নিন।
অবশেষে ৬টার সময় আবার শুরু হলো যাত্রা। প্রথমেই ড্রাইভার দাদা কিছু কথা বলে দিলেন আমাদের যাতে রাস্তায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। সেইমতো আমরাও গাড়ির কাঁচ তুলে জঙ্গল দেখতে দেখতে চললাম। মনে আশা যদি দেখা মেলে জাড়োয়া সম্প্রদায়ের কারোর। শেষপর্যন্ত দেখা মিললো। লোকমুখে প্রচলিত ধারণার সাথে বিশেষ মিললোনা যদিও। তারা আমাদের দেখে হাসলো, জল চাইলো। তবে বাইরের কোনো জল বা খাবার এদের দেওয়া বারণ ।
২ঘন্টার পথের শেষে পৌছালাম বারাতাঙ। গাড়ি এখানে ছেড়ে দিয়ে মিডল স্ট্রেট জেটিতে ফেরি ক্রস করেই ছুটলাম লাইম স্টোন কেভ এ যাওয়ার স্পীড বোটের টিকিট কাটতে। দুটো বোটে করে যাত্রা শুরু হলো। ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট এর মধ্যে দিয়ে স্পীড বোটে করে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অনবদ্য। ৩০ মিনিট পরে বোট থেকে নেমে প্রায় ১.২ কিমি হাঁটতে হল কেভ এ পৌঁছানোর জন্য। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে উঁচু নিচু রাস্তায় হাঁটতে মন্দ লাগলোনা। লাইম স্টোন কেভ মধ্য আন্দামানের প্রধান আকর্ষণ। কেভের ভিতরে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন প্রতিকৃতি। কোথাও বাঘ তো কোথাও হাতি। আবার কোথাও হনুমানের গদা। তবে কেভ এ ঢোকার এবং বেরোনোর রাস্তা একটাই। তাই বেশিক্ষন ভিতরে থাকা যায়না আর ভিড় ও খুব বেশি থাকে।
এবার ফেরার পালা। কেভ থেকে বেরিয়ে হেঁটে এসে স্পীড বোটে উঠলাম। জেটি থেকে আবার ফেরি ক্রস করে উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে উঠলাম। কনভয় ছাড়লো ১২.৩০ টা তে। পোর্ট ব্লেয়ার ফিরতে বাজলো ৩.৩০। ক্লান্ত শরীরে সবাই হোটেলে ফিরলাম। আজ র কোথাও ঘোরা নয়.. পরের দিনের অপেক্ষা..
P.S :
বারাতাং যাওয়ার জন্য আমাদের ১৭ সিটের গাড়ি নিয়েছিল ৮৫০০ টাকা।
আর স্পীড বোটে লাইম স্টোন কেভ যেতে পার হেড ৭০০।
রাস্তায় খাবার জিনিস পোর্ট ব্লেয়ার থেকে নিয়ে যেতে পারেন। আমরা আগেরদিন পাশের একটি হোটেলে বলে রেখেছিলাম। তারা ব্রেড-জ্যাম, কেক, ম্যাংগো জুইস, বিস্কুট, ডিম সেদ্ধ প্যাক করে দিয়েছিল আমাদের জন্য। আর নয়তো জিরকাতাং থেকেও খাবার নিয়ে নিতে পারেন। এরপর কিন্তু আর কিছু পাবেননা।
ফরেস্ট এর মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় আপনার ড্রাইভার যা বলবেন মেনে চলুন।

Related Posts

Leave a Reply