May 21, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

ঘুম থেকে উঠে ঘাড়ে চেপে ধরার দাগ দেখেই আমার হাত-পা ঠান্ডা …

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

বেশ কিছুদিন আগের কথা। রাত বাজে প্রায় ২টা। ঘুমঘুম চোখে বিছানায় মোবাইল চালাচ্ছিলাম। নিজেও বলতে পারবো না কখন ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। এসময় আমার কানে আসে রুমে কেউ একজন জিনিসপত্র ওলট-পালট করছে। কিন্তু কে?

পুরো ফ্ল্যাটে আজ আমি একা। তিন রুমের এই ফ্ল্যাটে আমার এক ভাগ্নেকে নিয়ে থাকি। সে গ্রামের বাড়ি যাওয়ায় পুরো ফ্লাটে প্রাণী বলতে আমি একা।

শোয়ার সময় ঘরের ফ্যান বন্ধ ছিল, কিন্তু এখন দেখছি স্পিডে ফ্যান চলা শুরু করেছে। আমি উপুর হয়ে শুয়ে ছিলাম। মাথাটা ঘুরিয়ে দেখতে চাইলাম কে এমন করছে? ঘরে তো আমি ছাড়া আর কেউ নেই! তাহলে কি চোর ঢুকে পড়লো নাকি?  

কিন্তু আশ্চর্য! আমি কিছুতেই মাথা তুলে বা ঘুরিয়ে তাকাতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিলো কেউ একজন আমার ঘাড়ে চাপ দিয়ে ধরে রেখেছে। 

এই অবস্থায় হঠাৎ চারদিক নিরব হয়ে গেল, শুধু কানে আসছিল দেওয়াল ঘড়ির কাটার টিকটক আওয়াজ। অনুভব করলাম কেউ একজন আমার পাশে বসে আছে এবং তার নিঃশ্বাসের আওয়াজ আমি শুনতে পারছি। কিন্তু দেখতে পাচ্ছিলাম না কে সে? আমি অনেক চেষ্টা করেও কিছুতেই মাথা তুলতে পারছিনা, শরীর নাড়াতে পারছি না। তবে একটা পর্যায়ে শুধু চোখের সামনে লম্বা চুল দেখতে পারছিলাম। অনেক্ষণ চেষ্টার পরও ওই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ব্যর্থ হই। আতঙ্কে আমার শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যেতে থাকে। 

আমি যে চিৎকার করব- তাও পারছিলাম না। মনে মনে ঈশ্বরকে ডাকতে লাগলাম। এরপরও কিছু হচ্ছিলো না। একপর্যায়ে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে থাকে। হঠাৎ শুনতে পাই একটি বাচ্চার কান্নার আওয়াজ। রুমের মধ্যেই একটি বাচ্চা কাঁদছে । এত করুণ কান্না আমি জীবনেও শুনিনি। কান্নাটার মাঝে কি পরিমাণ মায়া ছিল তা আমি লিখে বা বলে বোঝাতে পারবো না। এরপর কি হয়েছিল তা আমার আর খেয়াল নেই- কারণ আমি জ্ঞান হারাই। 

এরপর ঘুম ভাঙ্গে আজানের আওয়াজে। ঘড়িতে দেখতে পেলাম দুপুর ১টার মতন বাজে! গত রাত দুইটায় বিছানায় শুয়েছিলাম। এরপর ঘুমিয়ে পড়ি। পরে সেই ঘটনা। তারপর জ্ঞান হারাই। এরপর এখন পরদিন দুপুর একটায় ঘুম ভাঙলো! সবকিছু কেমন হজবরল লাগছিল। মনে হল যে আমি আসলে ঘুমিয়ে স্বপ্নই দেখেছি। 

যাহোক, দিনের আলোয় সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় মনের জোর পুরোটাই ফিরে এল। বাইরে বের হেত হবে, কাজে যেতে হবে। বাথরুমে ঢুকে ফ্রেশ হলাম। এরপর রুমে ঢুকে চুল আঁড়ানোর জন্য আয়নার সামনে দাঁড়াতেই ঘাড়ের দিকে নজর গেল। হে ভগবান ! চোখ কপালে উঠে গেল। দেখতে পেলাম আমার ঘাড়ে কেউ চেপে ধরার স্পষ্ট দাগ দেখা যাচ্ছে। হালকা ব্যাথাও অনুভব হচ্ছে। সাথে সাথেই আমি এলাকার মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে ছুট লাগালাম। 

তাকে সবকিছু খুলে বললাম। তিনি বললেন, ওসব কিছু না হয়তো। হতে পারি তুমি ঘুমের মধ্যে নিজেই নিজের ঘাড় চেপে ধরেছিলে। 

এমন হওয়াটা অবশ্য অস্বাভাবিক না। তবে আমার মনে হচ্ছিল তিনি আমাকে সাহস দেওয়ার জন্যই এসব বললেন। এসময় ইমাম সাহেব আমাকে আশ্বস্ত করে বললেন, আজ আসরের নামাজ শেষ করে তোমার বাড়িতে যাব আমি। 

সময়ে মতো ইমাম সাহেব বাড়িতে এসে দোয়া পরে ঘর বন্ধ করে দিয়ে গেলেন। এরপর থেকে তেমন কিছু আর ঘটেনি আমার সাথে। ঘটনার পর থেকে মাস তিনেক কেটে গেলেও ওই ধরনের ঝামেলা আর হয়নি।

Related Posts

Leave a Reply