May 7, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular ব্যবসা ও প্রযুক্তি

ফের ‘ফুল হয়ে যে জন্ম নেব’ !

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

লা হচ্ছে, খুব শিগগিরই মৃতরা ফুল হয়ে ফুটবেন। স্বজনদের আদর-যত্নে লালিত হবেন তারা। আর ওয়াশিংটনে মৃতদের দেহগুলো এ কাজে ব্যবহৃত হতে কোনো আইনি ঝক্কি থাকবে না। সম্প্রতি এই ওয়াশিংটন আইনসভা একটি বিল পাস করেছে। তখন মৃতদের দেহগুলোকে জৈব সারে পরিণত করা হবে। এই সার দিয়ে মাটি হবে পরিপুষ্ট। তখন প্রিয় বাগানে ফুল বা অন্যান্য উদ্ভিদের গোড়ায় তা দেওয়া যাবে।

মার্কিনিদের মৃতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পদ্ধতি বদলাচ্ছে। ২০১৬ সালে শবদাহ পদ্ধতির প্রয়োগ প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমেরিকার সেনসান ব্যুরো ২০১৭ সালের এক প্রতিবেদনা জানায়, ২০৩৭ সালের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ আমেরিকানের মৃত্যু ঘটতে পারে। মৃতদের এই বিশাল মিছিলকে কাজে লাগাতে হবে। এর জন্যে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির দরকার। সিয়াটল-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘রিকম্পোজ’ এই দেহগুলোকে প্রাকৃতিক সারে পরিণত করার প্রস্তাব দিয়েছে যাকে তারা বলছে ‘ন্যাচারাল অর্গানিক রিডাকশন’। এর জন্যে বড় আয়োজন দরকার। বিশাল কারখানা গড়ে উঠবে। সেখানেই বিশেষ প্রক্রিয়ায় জৈব সার হবে মৃতের দেহ।

এপ্রিলের ১৯ তারিখে এ সংক্রান্ত বিলটি পাস হয়। এটি তোলের সিনেটর জেমি পেডারসেন। তিনি বলেন, মানুষের মৃত্যু এক চিরন্তন বিষয়। তাদের বিদায় জানানোর প্রক্রিয়া সবচেয়ে অর্থপূর্ণ হওয়া উচিত। মাটিস্থ করা এবং পোড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবেশগত সমস্যা রয়েছে।

এ বিষয় নিয়ে বিশেষজ্ঞরাও মতামত দিচ্ছেন। ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা ডুলুথের ইকোলজিক্যাল কমিউনিকেশনের বিশেষজ্ঞ জোশুয়া ট্রে বার্নেট গতানুগতিক সমাধিস্থ করার পদ্ধতি নিয়ে বলেন, আমরা দেহগুলোকে বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান দিয়ে থাকি। দামি কাঠের কফিনে ভরে কবর দি । এতে স্থান দখল হয়। আবার ৩০ গ্যালনের মতো তেল দিয়ে মৃতদেহ পুড়িয়ে ৪০ পাউন্ডের মতো কার্বন উৎপাদন করি।

আমেরিকায় মৃতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এবং কবরস্থ করার পদ্ধতি পৃথকভাবে স্টেটগুলোর জন্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা কোনো কেন্দ্রিয় বিষয় নয়। এই বিলটি ২০২০ সালে ১ মে থেকে কার্যকর হবে। এর মাধ্যমে অ্যালকালাইন হাইড্রোলাইসিসকেও বৈধ করা হবে। এ প্রক্রিয়ায় মৃতদেহকে তরলে রূপান্তরিত করা হয়। এর আগে এক ডজনেরও বেশি সংখ্যা স্টেটে এ পদ্ধতিকে গ্রহণ করা হয়েছে।

রিকম্পোজের প্রতিষ্ঠাতা ক্যাটরিনা স্পেড জানান, প্রাকৃতিকভাবে জীবাণুর মাধ্যমে দেহ পচানোর শক্তিশালী সংস্করণই হবে এ প্রতিষ্ঠানের পদ্ধতি। বনের মাটিতে গাছের পাতা পড়লে যেভাবে তা পচে যায় ঠিক একই বিষয় ঘটবে মৃতদেহের ক্ষেত্রে।

এই প্রতিষ্ঠানটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার যাবতীয় সেবা দেবে। আমেরিকায় এর খরচ পড়বে সাড়ে ৫ হাজার ডলার। এটা গড়পড়তা খরচ। তবে কফিনে ভরে কবর দেওয়ার পদ্ধতির চেয়ে অনেক কম খরচের। প্রায় ৮ ফুট দীর্ঘ ও ৪ ফুট চওড়া পাত্রের মধ্যে রাখা মৃতদেহে কাজ শুরু করবে জীবাণুরা। দেহের সঙ্গে আরো দেওয়া হবে আলফালফা গাছের পাতা, খড় এবং কাঠের টুকরা। তিরিশ দিন ধরে চলবে প্রক্রিয়া। তখন পাত্রের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছবে। দেহটা ক্রমেই ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকবে। মৃতের দেহের অভ্যন্তরে চিকিৎসা বা অন্য কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রাপাতি আগে-পরে সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রতিটি দেহ থেকে ৩ ঘনফুট সারযুক্ত মাটি মিলবে। এই মাটি পরিবার বাড়িতে নিতে পারবেন।

ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির মাটিবিজ্ঞানী লিনে কারপেন্টার-বোগস বলেন, পচনের এ পদ্ধতি এখন বেশ সাধারণ একটি পদ্ধতি। প্রাণীর মৃতদেহ পচাতে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। অ্যাভিয়ান ফ্লু এর সংক্রমণে কারপেন্টার-বোগস কৃষকদের একই ধরনের পদ্ধতিতে সংক্রমিত প্রাণীগুলোকে পচিয়ে ফেলা হয়।

তিনি বলেন, আমাদের হাতে এ কাজে দারুণ এক পদ্ধতি রয়েছে। আমি নিজের বাগানে এমন কিছু পেলে সুখী হবো।

স্পেড বলেন, ইতোমধ্যে আগ্রহীদের ইমেইলের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। তারা মৃতদের এমন পদ্ধতিতে বিদায় জানাতে আগ্রহী। ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো এবং ভারমন্ট থেকে সাড়া মিলেছে। দেশের বাইরে ব্রাজিল, নেদারল্যান্ডস এবং অস্ট্রেলিয়া থেকেও আগ্রহীরা যোগাযোগ করছেন।

Related Posts

Leave a Reply