May 16, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা

শত শত ট্রাক-বুলডোজার নিয়ে চোরা আক্রমণে প্রস্তুত চীন 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

ক্রমশ যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে ধাবমান হচ্ছে চীন। বিনা প্ররোচনায় ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে নামতে ক্রমশই প্রস্তুত হচ্ছে ড্রাগন। গত দু’মাস ধরে লাদাখে ভারত-চীন সীমান্তের পরিস্থিতি উত্তেজনার মধ্য দিয়েই যাচ্ছে। ১৫ জুন চীনা সেনাদের হাতে ভারতের ২০ জন সৈন্য নিহত হওয়ার ঘটনায় সে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে সীমান্ত বাঁচাতে সীমান্তে যুদ্ধবিমান ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে ভারত। চীনও পিছু হটেনি, বরং উত্তেজনা বাড়িয়ে সেনা বৃদ্ধি করে চলেছে।

এবার উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে আরো ভয়াবহ দৃশ্য, শত শত ট্রাক, বুলডোজার, চার চাকার গাড়ি ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে যুদ্ধসাজে সীমান্তের দিকে এগিয়ে আসছে চীনা বাহিনী। গত ৯ জুন সীমান্তের কাছে গালওয়ান উপত্যকার যে ছবি স্যাটেলাইটে ধরা পড়েছিল, তার থেকে ১৬ জুনের ছবি অনেকটাই আলাদা। উপগ্রহ চিত্র জানান দিচ্ছে, সীমান্তের কাছে বড়সড় সামরিক প্রস্তুতি চলছে।

লাদাখে চীন-ভারত সীমান্ত যাকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বলা হয়, তার সঠিক কোনো সীমারেখা চিহ্নিত করা যায়নি। কারণ চীনা সেনা যে এলাকাকে নিজের বলে দাবি করে, ভারত তা মানে না। আবার ভারতীয় বাহিনী যতদূর পর্যন্ত এলাকাকে নিজেদের বলে, চীন সেটা মানে না। ম্যাপ দেখলে বোঝা যাবে, আকসাই চীন পেরিয়ে লাদাখের উপর দিয়ে বয়ে গিয়ে শিয়ক নদীতে মিশেছে গালওয়ান নদী। এই গতিপথের মধ্যেই ধরা হয় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে। পূর্ব লাদাখের এই গালওয়ান উপত্যকাই চীন-ভারত সংঘাতের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে।

এই গালওয়ান উপত্যকায় বহুদিন থেকেই মুখোমুখি চীন ও ভারতীয় সেনা। মাঝেমধ্যেই সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। মে মাসের শুরুতেই পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা, নাকুলা ও প্যাঙগঙ লেকের উত্তরপ্রান্তে এলএসি পেরিয়ে ভারতীয় এলাকায় কয়েক কিলোমিটার ঢুকে পড়ে চীনা সেনারা। রীতিমতো তাঁবু খাটিয়ে ঘাঁটি তৈরি করে ফেলে। মুখোমুখি হাতাহাতিও হয়। দু’পক্ষেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপরে সেনা কর্মকর্তাস্তরে বৈঠকে ৬ জুনের পরে নাকুলা থেকে দু’পক্ষই কিছুটা পিছিয়ে আসে।

উপগ্রহ চিত্র দেখাচ্ছে, শতাধিক ট্রাক ও সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এগিয়ে আসছে চীনা বাহিনী। ৯ জুনের উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছিল ওই এলাকা একেবারেই জনশূন্য। ১৬ জুনের স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, ট্রাক, বুলডোজার মিলিয়ে অন্তত ৭৯টি গাড়ি এলএসি থেকে ১.৩ কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে আছে।

পরের উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, ক্রমশই এই সংখ্যা বাড়ছে। এলএসি বরাবর চীনা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ১২৭টি গাড়ির দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা গেছে। এই এলাকা এলএসি থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাক, বুলডোজার ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম নিযে যুদ্ধের প্রস্তুতিই নিচ্ছে চীন। অতর্কিতে হামলা হতে পারে যে কোনো সময়েই। এলএসি থেকে ২.৯ কিলোমিটার রেঞ্জের মধ্যে চীনা বাহিনীর ৫০ টি ক্যাম্প ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে। রীতিমতো তাঁবু খাটিয়ে এলএসি বরাবর সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখছে চীন।

আরও একটা জিনিস ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে। সেটা হল, এলএসি বরাবর গালওয়ান নদীর যে গতিপথ সেখানেই নতুন করে কোনো কাঠামো গড়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ৯ জুনের উপগ্রহ চিত্রে নদী উপত্যকায় তেমন কোনো কাঠামো দেখা যায়নি। তবে ১৬ জুনের উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, নদী উপত্যকা বরাবর এলএসি থেকে ৬০০ মিটারের মধ্যে নতুন করে কোনো কাঠামো তৈরি হয়েছে।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্যাম্প করে সামরিক প্রস্তুতি চালাচ্ছে চীন। ভারত সীমান্ত থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পুরোদস্তুর বিমানঘাঁটিও গড়ে তুলেছে। লাদাখের প্যাঙগঙ লেকের ২০০ কিলোমিটার দূরে তিব্বতের ‘গাড়ি কুনসা’য় দশ বছর আগেই একটি বিমানবন্দর বানিয়েছিল চীন। বেইজিং তখন জানিয়েছিল, অসামরিক বিমান পরিবহণের জন্যই ওই বিমানবন্দর তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, গত এক মাসে ওই বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের কাজ রাতারাতি বেড়ে গেছে এবং সেখানে রীতিমতো একটি বিমানঘাঁটি তথা এয়ারবেস বানিয়ে ফেলেছে চীন।

প্রসঙ্গত, ৪৫ বছর পর প্রথম ভারত-চীন সীমান্তে নিহত হলেন ভারতের সেনা সদস্যরা। ১৫ জুন লাদাখে চীনা ও ভারতীয় সেনাদের সংঘর্ষে এক কর্নেল-সহ অন্তত ২০ ভারতীয় সেনা নিহতের ঘটনায় সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছে।

Related Posts

Leave a Reply