May 7, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular সফর

প্রেতাত্মাদের উপদ্রব এড়াতেই এই পাহাড়ে …

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

মৃত্যুর পরে কী হয়? শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার পরে দেহ বিলীন হয় পঞ্চভূতে। প্রকৃতির যে পাঁচ উপাদানে তৈরি হয়েছিল এই নশ্বর শরীর, ধীরে ধীরে মিশে যায় সেই উপাদানেই! আর আত্মা? তার কী হয়? এই প্রশ্ন নিয়ে বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন মতবাদ আছে।

তবে আজকের এই ঘটনা যেহেতু ভারতের একটি স্থান নিয়ে তাই সেই দেশের মানুষের বিশ্বাস, মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই দেহ থেকে আত্মা মুক্ত হয়। তখন সেই আত্মাকে নিজেদের অধীনে নেয় যমদূত। শুরু হয় পরপারের যাত্রা।

একে একে জানিয়েছে, সেই যাত্রাপথ বড় দুর্গম। সেই পথের কোথাও ছায়া নেই, ১২টি সূর্য একত্রে অসহ্য তাপ বিকিরণ করে সেখানে। সেই যাত্রায় কখনও অপেক্ষা করে থাকে অতল গহ্বর, কখনও বা সুউচ্চ পর্বত। সেই সব পেরিয়ে এসে বৈতরণী তীরে আত্মা অপেক্ষা করতে থাকে যমলোকে যাওয়ার জন্য!

তবে এই বিশ্বাস, স্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে! কিন্তু যাদের মৃত্যু হয়েছে অপঘাতে, তাদের সঙ্গে কী হয়?

সেই রহস্যও সমাধা করেছিলেন হিন্দুশাস্ত্রের দেবতা বিষ্ণু- সেই হতভাগ্যরা শিলারূপে অবস্থান করেন গয়ার প্রেতশিলা পাহাড়ে। যতক্ষণ পর্যন্ত না তার পরিজনরা এসে এই স্থানে পিণ্ড দিচ্ছেন!

প্রেতশিলা পাহাড়ের চূড়ায় এই কারণেই একটি মন্দির উৎসর্গ করা হয়েছে যমকে। হিন্দু মতে যিনি মৃত্যুর পরে মানুষের পাপ-পুণ্যের বিচার করেন। যম স্বয়ং এই পাহাড়ে অধিষ্ঠান করেন বলেই শান্ত থাকে প্রেতাত্মারা। তারা আর এই পাহাড়ে আসা মানুষের কোনও ক্ষতি করতে সাহস পায় না।

বস্তুত, প্রেতশিলায় যমের এই মন্দির স্থাপিতই হয়েছিল প্রেতাত্মাদের উপদ্রব এড়াতে! জানা যায়, মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন ইন্দৌরের রানি অহল্যাবাঈ। ঠিক কোন সালে তিনি এই মন্দির নির্মাণ করেন, তা আজ আর জানা যায় না। তবে, ইতিহাস বলছে, তার পরে এই পাহাড়ে প্রেতাত্মার উপদ্রব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল চিরতরেই!

এর পরে নানা সময়ে সংস্কার সাধন হয়েছে প্রেতরাজা বা যমরাজের এই মন্দিরের। মন্দিরের একটি শিলালিপি থেকে জানা যায়, ১৭৪৪ সালে কলকাতার মনমোহন দত্ত তৈরি করে দিয়েছিলেন পাহাড়ে ওঠার সিঁড়ি।

প্রেতশিলায় গেলেই তাই চোখে পড়বে পূজার্চনা, বিশেষ করে পিণ্ডদানের ব্যস্ততা। যাদের অপঘাতে মৃত্যু হয়েছে, তাদের পরিবারের লোকেরা এসে এই প্রেতশিলার একটি বিশেষ পাথর ঘিরে পূজা এবং পিণ্ডদানের পর্বটি সারেন। তার পরেই, সেই প্রেতাত্মা শিলা ত্যাগ করে রওনা দেয় যমলোকের উদ্দেশে।

এই বিশ্বাস বুকে নিয়েই বিহার রাজ্যের গয়ায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রেতশিলা পাহাড়। পরপারের অপরিসীম রহস্য ঘিরে রেখেছে যাকে!

Related Posts

Leave a Reply