April 27, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

বঞ্চিত না করতেই প্রতারণাকে লাইসেন্স !

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

ব্যবসায়ী এবং টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব সাইরা খান এক গোপনীয়তা ফাঁস করলেন। বিগত ১১ বছর ধরে তিনি তার স্বামীকে অন্য নারীর সঙ্গে যৌনতার অনুমতি ও সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তাদের ঘরে দুই সন্তান। স্বামীকে দারুণভাবে ভালোবাসেন সাইরা। তাদের বিবাহিত জীবনটা সফল। কিন্তু কেন এমন? কারণ সাইরা যৌনতার প্রতি আকাঙ্ক্ষা হারিয়েছেন। এর প্রতি বিতৃষ্ণা চলে এসেছে তার। কিন্তু স্বামীকে বঞ্চিত করতে চান না, আর তাই এ সিদ্ধান্ত।

তাই বলে তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গতা নেই বললে ভুল হবে। তারা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেন, খুনসুটি করেন। কিন্তু সেক্স করেন না। স্বামীকে শুধু ছাড় দিয়েছেন অন্যের সঙ্গে এ কাজটি সারার জন্যে।

তবে এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সাইরার স্বামী। তিনি সোশাল মিডিয়াতে বলেছেন, তাদের মাঝে বোঝাপড়া ও বিশ্বস্ততা রয়েছে।

আধুনিক যুগে সম্ভবত এ সংস্কৃতির চর্চা চালাচ্ছেন অনেকে। যারা যৌনতার প্রতি আগ্রহ স্থায়ীভাবে হারাচ্ছেন, তারা সঙ্গী-সঙ্গিনীকে অন্যের সঙ্গে সুযোগ করে দিচ্ছেন। গতানুগতিক বিয়ের ধারায় নতুন সংস্করণ হিসাবে এটা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

সাইরার এ সিদ্ধান্তকে কেউ সম্পর্কের আদিম সংস্করণ বলে মেনে নিতে নারাজ। বরং যাদের যৌনজীবনে এ ধরনের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্যে বাস্তবিক সমাধান হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের ক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্ত আপাতদৃষ্টিতে অনৈতিক বলে মনে হতে পারে। কিন্তু সমাধান কিন্তু সংসার বাঁচিয়ে দিতে পারে।

একজন মানুষের যৌন আকাঙ্ক্ষার বিষয়টি অনেক শর্তের ওপর নির্ভর করে। সন্তানের যত্ন নেওয়া, মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, দৈহিক ক্লান্তি এবং নারীদের ক্ষেত্রে মেনোপজ ইত্যাদি বেশ প্রভাবশালী।

জার্নাল অব ম্যারেজ অ্যান্ড ফ্যামিলিতে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বলা হয়, দীর্ঘমেয়াদে জড়িয়ে থাকা দম্পতি যাদের বয়স ৩৫-৪৪ বছরের মধ্যে, তাদের মধ্যে যৌনতা খুব কম বা একেবারেই হয় না।

‘সেক্স পাস’ এমন এক ধারণা যার মাধ্যমে দম্পতিরা তার সঙ্গী-সঙ্গিনীর যৌনজীবনকে আটকে দেন না। যৌনতার প্রতি বিতৃষ্ণা চলে আসলেও সঙ্গী-সঙ্গিনীদের মধ্যে হতাশা চলে আসবে না। এ ক্ষেত্রে এ আয়োজনে উভয় পক্ষই তুষ্ট থাকেন। আবার দুজনই দুজনের কাছে সৎ।

২৭ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটছে ইয়র্কশায়ারের ড্যানি এবং পলের। তবে ২০০৮ সাল থেকে যৌন সম্পর্ক ছিন্ন হয় দুজনের। বিশাল একটি বিছানায় দুজন শুয়ে থাকি, চুমু খাই আর পরস্পরকে জড়িয়ে রাখি, জানান দম্পতি।

এ ধরনের সম্পর্ক অসংখ্য দম্পতির মধ্যে তৈরি হচ্ছে। দাম্পত্য জীবনে যৌনতা একটি বড় প্রভাবক। তাই কারো কারণে এতে সমস্যার সৃষ্টি হলে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তাই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ‘সেক্স পাস’ ধারণায় বিশ্বাসী হচ্ছেন অনেকে।

মনোবিজ্ঞানী ইস্থার পেরেল জানান, নারী-পুরুষ উভয়ই একাধিক সম্পর্ক থাকতেই পারে। দীর্ঘকালের সম্পর্কে যৌন আকাঙ্ক্ষা হারিয়ে যেতেই পারে। বিবাহিত জীবনটা কিভাবে অর্থব্যবস্থা থেকে ভালোবাসার দিকে মোড় নেয় তা তিনি তুলে ধরেছেন ‘মেটিং ইন ক্যাপটিভিটি : সেক্স, লাইস অ্যান্ড ডোমেস্টিক ব্লিস’ বইয়ে। বিয়ের পর সঙ্গী-সঙ্গিনীকেই মানুষ যৌনসঙ্গী, পরিবারের সদস্য, সহযোগী বলে মনে করেন। কাজেই যৌনতার সঙ্গে তাকে অন্যের সঙ্গে অনুমতি দেওয়া বিষয়ে উভয়েরই গভীর আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

যেখানে বহুগামিতা রয়েছে সেখানেই সম্পর্কের নতুন সব মডেল সৃষ্টি হয়েছে যুগে যুগে। ভালোবাসাপূর্ণ একটি সম্পর্ক এবং পাশাপাশি অন্যদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি নতুন কিছু নয়।

এ ছাড়া আধুনিক মানুষের মধ্যে বিবাহিত জীবনের ফলাফল খুব ভালো নয়। ব্রিটেনে ৪২ শতাংশ দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদ ঘটছে। বিবাহিত থাকা অবস্থায় ৬০ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৫ শতাংশ নারী প্রতারণা করছেন। এখানে সততা ধরে রাখতে এবং যৌনজীবনে উভয়ের সম্মতিতে সমাধান টানতে ‘সেক্স পাস’ বিষয়টি বেশ আলোচিত হচ্ছে।

সাইরার তার স্বামীকে ‘সেক্স পাস’ দেওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, তাদের মধ্যে কেবল যৌন সম্পর্কই বিরাজ করে না। দুজন দুজনের হয়ে থাকতে আরো বহু অবলম্বন রয়েছে। তাদের মন এবং আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। যে বিবাহিত জীবনে তারা প্রবেশ করেছেন, তাতে দুজনই সুখী। কেবলমাত্র একটি অংশের সমস্যায় এটি ব্যর্থ হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে সম্মতিসূচক সমাধানের মাধ্যমেই সংসারটাকে টিকিয়ে রাখা যায়।

Related Posts

Leave a Reply