May 2, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

এখনো যেদেশে গায়ের রং দেখে তারপর নাগরিকত্ব দেওয়া হয় !

[kodex_post_like_buttons]

নিউজ ডেস্কঃ

টনি হেজ ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন লাইবেরিয়াতে। সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। বিয়ে করেছেন। সফল ব্যবসা গড়ে তুলেছেন।গৃহযুদ্ধের সময় সেদেশেরই অনেক নাগরিক দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও, তিনি কোথাও যাননি। তারপরেও হেজ সেদেশের একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। নাগরিক বলাও ঠিক নয়, কারণ এত বছরেও তিনি সেখানে নাগরিকত্ব পাননি।কারণ তার গায়ের রং কালো নয় এবং তার পিতৃপুরুষের দেশ লেবানন।

পশ্চিম আফ্রিকায় রাষ্ট্র হিসাবে লাইবেরিয়া প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আমেরিকাতে মুক্তি পাওয়া দাসদের জন্য। তারা যাতে আফ্রিকায় ফিরতে পারে। ঐতিহাসিক কারণেই তখন সেদেশের প্রথম সংবিধানে একটি ধারা জুড়ে দেওয়া হয়েছিল যে, কোনো ব্যক্তি যদি আফ্রিকান বংশোদ্ভূত না হন, তাহলে তিনি লাইবেরিয়াতে নাগরিকত্ব পাবেন না।কয়েকশ বছর পর লাইবেরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট প্রাক্তন ফুটবলার জর্জ উইয়াহ ওই আইনকে বর্ণবাদী’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, লাইবেরিয়া সৃষ্টির যে মূল চেতনা এই বিধানে তা নষ্ট হচ্ছে। কারণ, তার কথা, লাইবেরিয়া তৈরি হয়েছিলো মুক্ত মানুষের আশ্রয় হিসাবে, কিন্তু বর্ণের ভিত্তিতে বৈষম্য সেই চেতনার বিরোধী।

তবে এই কথায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেক লাইবেরিয়ার নাগরিক। ব্যবসায়ী রুফুস ওলাগবো বলেন, সাদা মানুষরা আবারো আমাদের দাস বানিয়ে ছাড়বে। অন্য দেশ থেকে আসা মানুষকে সম্পত্তির অধিকার দেওয়াটা হবে বিপজ্জনক। নতুন প্রেসিডেন্ট যাতে অন্য দেশের, অন্য বর্ণের মানুষদের নাগরিক অধিকার না দিতে পারেন সেই লক্ষ্যে একটি সংগঠন তৈরি হয়েছে সম্প্রতি। সংগঠনের নেতা ফুবি হেনরিস বলেন, সৃষ্টির সময় প্রতিটি দেশের একটি ভিত্তি থাকে, সেটাকে নাড়া দিলে জাতি এবং দেশ ভেঙ্গে পড়বে।

প্রচুর খনিজ সম্পদ থাকা স্বত্বেও, মাথাপিছু গড় আয়ের বিবেচনায় বিশ্বের ২২৮টি দেশের তালিকায় লাইবেরিয়ার অবস্থান ২২৫। গত বছর লাইবেরিয়ার মাথাপিছু আয় ছিল বছরে ৯০০ মার্কিন ডলার যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আয় ৫৯ হাজার ৫০০ ডলার। প্রেসিডেন্ট উইয়াহ যুক্তি দিচ্ছেন- লাইবেরিয়া ভঙ্গুর একটি দেশে পরিণত হয়েছে, একে টেনে তুলতে হবে। বছরের পর বছর ধরে গৃহযুদ্ধ এবং সম্প্রতি ইবোলা ভাইরাসে বিধ্বস্ত লাইবেরিয়ার জনগণের কাছে প্রেসিডেন্টর এই বক্তব্য আশার সঞ্চার করে। কিন্তু নাগরিকত্বের আইনসহ অন্য কিছু আইন পরিবর্তনের সম্ভাবনায় আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে সেইসাথে।

বিদেশীদের নিয়ে সন্দেহ লাইবেরিয়াতে নতুন কিছু নয়। সেখানকার লেবানিজ কম্যুনিটিও তাতে অভ্যস্ত।মনরোভিয়ায় তার বাড়িতে বসে হেজ বলেন, অনেক মানুষের ভয় বিদেশীরা এসে তাদের দেশ দখল করে নেবে। এই আশঙ্কা একেবারেই ভিত্তিহীন। ১৯৭০এর দশকে লাইবেরিয়াতে লেবানিজদের সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার। এখন বড়জোর ৩ হাজার। তবে এখনো সেদেশের বড় বড় কিছু হোটেলসহ অনেক ব্যবসার মালিক তারা। কেউই নাগরিকত্ব পাননি। তিনি আরও বলেন, আমি আমার ১৫তম জন্মদিন পালন করি লাইবেরিয়াতে। এখানে আসার জন্য কখনই অনুশোচনা করিনি। আমি সবসময় আশা করেছি যে একদিন আইন পরিবর্তন হবে। আমি খুশি যে প্রেসিডেন্ট লাইবেরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছেন।

 

Related Posts

Leave a Reply