May 6, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular সফর

খুঁজেও অপরাধী পাবেন না এই  দেশে!

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

০১৩ সালে দেশটিতে মোট ১৯টি জেলখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ২০১৭ সালে এই তালিকায় যুক্ত হয়েছিল আরও ৭টি জেল। এ বছর আরও চারটি জেল বন্ধ করা হচ্ছে। সারাবিশ্বে যেখানে অপরাধীদের সামলাতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে ইউরোপের এই দেশটি আসামি সংকটে ভুগছে। এক এক করে দেশটির জেলখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পরিণত হচ্ছে হোটেলে। ভাবছেন, কোন এমন দেশের কথা বলছি, যেখানে সন্ত্রাসীই নেই! বলছিলাম নেদারল্যান্ডের কথা।

সন্ত্রাসীদের নিয়ে নেদারল্যান্ডের এই দুর্ভোগ শুরু হয় ২০০৪ সাল থেকে। হুট করেই দেশের সন্ত্রাসের পরিমাণ কমে যায় এ সময়। জেলে কর্মরত মোট ২,০০০ হাজার মানুষ নিজেদের চাকরি হারায়। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে তো নরওয়ে থেকে মোট ২৪০ জন কয়েদিকে নেদারল্যান্ডে নিয়ে আসা হয় জেলে ভরার জন্য।

কথাগুলো শুনে নিশ্চয় স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে? মূলত, নিজেদের দেশে অপরাধ আর অপরাধীর সংখ্যাকে কমিয়ে আনার জন্য বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিল নেদারল্যান্ড সরকার। এদের মধ্যে অন্যতম হলো- মাদকে শিথিল আইন, শাস্তির চাইতে পুনর্বাসনে মনোযোগ এবং প্রত্যেকের গোড়ালিতে তাকে অনুসরণ করার যন্ত্র ব্যবহার করা।

২০০৮ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখতে পাওয়া যায় যে, অপরাধীদের গোড়ালিতে তাকে অনুসরণ করার যন্ত্র ব্যবহার করলে তারা রাষ্ট্রীয় জেলগুলোর ওপরে নির্ভর না হয়ে কাজে মন দেয়। আবার কোনো অপরাধ করতে অপরাধীদের বাধাপ্রদান করে এই পদ্ধতিটি। সমাজের কাজে আসতে পারে তারা।

গোড়ালিতে বাধা মনিটরিং যন্ত্রটি একজন অপরাধীর পায়ে বাধা থাকলে অনেক দূর থেকেও তাকে খেয়াল করা যায়। সে যদি নিজের আওতার বাইরে চলে যায় তাহলে সংকেত পাঠিয়ে দেয় যন্ত্রটি। এতে করে একজন অপরাধীকে সবসময় খেয়াল করার দরকার পড়ে না। জেলখানা ও রক্ষীরও দরকার পড়ে না।

অন্যসব দেশ অপরাধীর বিরুদ্ধে কাজ করলেও, নেদারল্যান্ড কাজ করেছে অপরাধের বিরুদ্ধে। আর তাই ১৭ মিলিয়ন মানুষের দেশ নেদারল্যান্ডে ২০১৭ সালে অপরাধীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১১ হাজার ৬০০ জন। বর্তমানে এই হার আরও কমে এসেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, এখন নেদারল্যান্ডে অপরাধীর সংখ্যা শূন্য! আমেরিকার সাথে তুলনা করলে এই সংখ্যা কিছুই নয়। সেখানে প্রতি ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে অপরাধীর সংখ্যা ৭১৬ জন। নেদারল্যান্ডের অপরাধীর সংখ্যাকে ০ দিশমিক ৯ এ নামিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছিলেন ডাচ মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালেই। পাঁচ বছরের জন্য এই কথা বলেছিলেন তিনি। অবশ্য, নির্ধারিত সময়ের আরও অনেক আগেই অনেক বেশি সফলতা পেয়েছেন তারা এ ক্ষেত্রে।

সমস্যা যে এতে কিছু হয়নি তা নয়। যে ২,০০০ জন মানুষের চাকরি এতে করে চলে গেছে, তাদের মধ্যে মাত্র ৭০০ জনের চাকরি আবার দেওয়া গিয়েছে। বাকিরা কাজ ছাড়াই আছেন। অন্যদিকে, জেলখানাগুলো এতো দিন পর্যন্ত খালিই পড়েছিল। এ বছর অবশ্য একটু একটু করে নিজেদের জেলগুলোকে ব্যবহার উপযোগী করে তুলছে দেশটি। কফি শপ থেকে শুরু করে আরও নানারকম স্থাপনা নির্মানের মাধ্যমে আবাসস্থল বানানো হচ্ছে আগের জেলগুলোকে। কোথাও কোথাও নির্মিত হচ্ছে আবাসিক হোটেল।

অন্যদিকে, ঘরহীন মানুষদের থাকার জায়গা হিসেবেও সরকার এই জেলের ঘরগুলো প্রদান করছে। তবে এই ব্যাপারটি একেবারে নতুন নয়। এর আগে যুগোস্লাভিয়ার সামরিক কারাগারকেও ২০০৩ সালে হোটেলে পরিণত করা হয়।

Related Posts

Leave a Reply