May 3, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular সফর

চলো যাই আন্দামান (পর্ব ২)

[kodex_post_like_buttons]

অনিন্দিতা বারুই 

প্রথম দিন রাতেই শুরু হলো প্রবল বৃষ্টি। আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে ঝড়। রাত ২টো তে এরকম আবহাওয়া দেখে সবাই খুব ঘাবড়ে গেলাম কারণ আমাদের ভোর ৫টায় বেরোনোর কথা ফেরিঘাটের উদ্দেশ্যে। ভাগ্য সহায় ছিল তাই ভোরের আগেই বৃষ্টি থেমে গেল। আমরা ভোর ৫.১৫ তে বেরোলাম ফিনিক্স বে জেটির উদ্দেশ্যে। আমাদের টিকিট ছিল ৬.১৫ র গ্রিন ওশান ২ এর। নির্ধারিত সময়ে শুরু হলো যাত্রা। মাঝ সমুদ্রে বৃষ্টি, উত্তাল সমুদ্রের দুলুনি সামলে ২ঘন্টা পরে পৌঁছালাম হ্যাভলক আইল্যান্ড। প্রথম দর্শনেই মুগ্ধ হলাম। চারিদিকে জল তার মাঝে আমরা।
ফেরিঘাট এর বাইরে থেকে ৩টে গাড়ি বুক করে মালপত্র সমেত সবাই চললাম হোটেল এ। এখানে আমাদের বুকিং ছিল ডলফিন বীচ রিসর্ট এ। এটি হ্যাভলক আইল্যান্ড এ আন্দামান ট্যুরিজম এর রিসর্ট। অসাধারণ লোকেশন রিসর্ট টির। একদম সামনেই সমুদ্র। আর কোথাও না ঘুরে রিসর্ট এ বসে সমুদ্র দেখেই কাটিয়ে দেওয়া যায় দুটো দিন। আমরা ছিলাম যথাক্রমে ১৭,১৮,১৯,২০,২১ এবং ২২ নম্বর ঘরে। এর মধ্যে ১৭ এবং ১৮ নম্বর ঘর থেকে সমুদ্রের ভিউ খুবই সুন্দর। 
দুপুরে লাঞ্চ এর পর দুটো গাড়ি বুক করে চললাম রাধানগর বীচ এ। এই বীচ টিতে সূর্যাস্ত দেখা যায় এবং স্নানও করা যায়। সবাই সেই মতো প্রস্তুতি নিয়েই গেলাম। চারিদিকে সবুজ গাছের মাঝে এই মনোরম বীচটি সবার মন জয় করে নিল এক নিমেষেই। যারা জলে নামবেনা তারা বসে রইলো বীচের ধারে আর আমরা সমুদ্রের ঢেউ এ গা ভাসিয়ে দিলাম। মেঘের কারণে সূর্যাস্ত দেখা হলোনা কিন্তু রাধানগর বীচের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনে থাকবে সারাজীবন। ফিরে এলাম রিসর্ট এ। সন্ধ্যেটা কাটলো সমুদ্রের ধারে বসে । 
পরদিন ভোর ৪.৩০ তে উঠেই ক্যামেরা হাতে রুমের বাইরে বেরোলাম সূর্যোদয় দেখবো বলে। এইদিন সূর্যদেব আর নিরাশ করলেননা। পূবের আকাশ রঙিন ছটায় ভরিয়ে দেখা দিলেন। প্রানভরে উপভোগ করলাম সেই দৃশ্য। এরপর গেলাম স্কুবা ডাইভিং সেন্টার এ। হোটেল থেকেই ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। স্কুবার অভিজ্ঞতা লিখে বর্ণনা করতে পারবনা। ভয় যে একেবারেই পাচ্ছিলামনা বলবোনা কিন্তু ভয় কে সরিয়ে জলে নামার সিদ্ধান্ত আমাকে হতাশ করেনি। 
হোটেলে ফিরে ব্রেকফাস্ট সেরে সবাই আবার বেরিয়ে পড়লাম। গন্তব্য এলিফ্যান্ট বীচ। এই বীচ টি মূলতঃ ওয়াটার এক্টিভিটি র জন্য বিখ্যাত। হোটেল থেকে গাড়িতে করে জেটি তে পৌছালাম। সেখান থেকে স্পীড বোট এ এলিফ্যান্ট বীচ। প্রসঙ্গত বলি এখানে যাওয়া আসা নিয়ে পার হেড ৯৫০ টাকা লাগে। এই প্যাকেজ এ গাইডরা একটা কমপ্লিমেন্টারি স্নরকেলিঙ ও করায়। আমরা যদিও সমুদ্রের আরো মাঝখানে গিয়ে স্নরকেলিঙ করেছিলাম আলাদা টাকা দিয়ে। এছাড়াও গ্লাসবটম, জেট স্কি, ব্যানানা রাইড এরকম অনেক এডভেঞ্চার এক্টিভিটি করা যায় এখানে। এখানে খাবার জল কিছু কিনতে পাওয়া যায়না। তাই সাথে করে কিছু শুকনো খাবার আর জল অবশ্যই নিয়ে যাবেন।
এলিফ্যান্ট বীচ থেকে ফিরলাম বিকেলে। এবার গোছগাছ এর পালা। পরদিন সকালেই বেরোবো নীল আইল্যান্ড এর উদ্দেশ্যে। আবার নতুন জায়গা দেখার প্রতীক্ষা…
P.S : ডলফিন বীচ রিসর্ট আমরা বেশ কয়েক মাস আগে বুক করেছিলাম। ফোনে যোগাযোগ করি প্রথমে, তারপর ড্রাফট এ টাকা পাঠাই। এখানে কটেজের ভাড়া ছিল দিনপ্রতি ২০০০ টাকা। ( tourist information center , Andaman- 03192232694 )
হ্যাভলক যাওয়ার ক্রুজ এবং বাকি ক্রুজ এর বুকিং অনলাইনে করা যায়। 
হ্যাভলক এ জেটি থেকে হোটেল যাওয়ার ভাড়া প্রতি গাড়ির (৭ সিটের) জন্য ২০০ টাকা।
রাধানগর বীচ যেতে গাড়ি প্রতি ১০০০ টাকা।
আর এলিফ্যান্ট বীচ যেতে স্পীড বোটে মাথা পিছু ৯৫০ টাকা।
ডলফিন বীচ রিসর্ট এ সব রকম খাবার মেলে। কিন্তু দাম একটু বেশি। রিসর্ট এর বাইরে বেশ কিছু রেস্তোরাঁ আছে। সেখানে তুলনামূলক অনেক কম দামে ভালো খাবার মিলবে।

Related Posts

Leave a Reply