April 27, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

লিঙ্কন থেকে গান্ধীজির  মানসিক অসুস্থতাই ছিল সাফল্যের সিডি 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

মেরিকার মহান ঐতিহাসিক নেতাদের অনেকের মানসিক অসুস্থতা ছিল। আর তাদের মানসিক অসুস্থতাই সংকটের সময়ে তাদের সাফল্যের জন্য সহায়ক হয়েছে। এমনটাই বলছেন মনোচিকিৎসক ও মনোবিজ্ঞানীরা।

প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন ও জন এফ কেনেডিসহ আমেরিকার গৃহযুদ্ধকালীন জেনারেল ইউলিসিস এস গ্রান্ট, উইলিয়াম টেকুমশেহ শার্ম্যান এবং নাগরিক অধিকার নেতা মর্টিন লুথার কিং জুনিয়র এরা সকলেই মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এদের প্রায় সকলেকেই জীবনে বেশ কয়েকবার অবসাদ ও বিষণ্নতার মতো মানসিক অসুস্থতা থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে। এমনটাই দাবি করেছেন টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যার অধ্যাপক ড. নাসির ঘায়েমি। অধ্যাপক নাসির ঘায়েমি ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের মানসিক রোগসংক্রান্ত গবেষণা একটি বইও লিখেছেন।
অধ্যাপক নাসির জানান, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং ভারতের মহাত্মা গান্ধীও আবেগজনিত মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
মার্কিন মনোবিজ্ঞানী ক্যাথরিন নর্ডাল বলেন, তাদের মানসিক রোগই এই ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদেরকে আরো মহান করে তুলেছিল। ক্যাথরিন নর্ডাল আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রফেশনাল প্র্যাকটিস প্রোগ্রামের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনরত আছেন। ওই অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য মনোবিজ্ঞানীরাও ক্যাথরিনের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।
অধ্যাপক ড. নাসির ঘায়েমি বলেন, আমার মতে, কারো মানসিক সমস্যা থাকলে এবং তিনি সফলভাবে এর মোকাবেলা করতে পারলে তার ব্যক্তিত্ব আরো পরিপূর্ণ এবং নিখুঁত হয়ে উঠবে। ঘায়েমি ইতিহাসের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের মানসিক রোগ সংক্রান্ত বিচার বিশ্লেষণ নিয়ে একটি বই লিখেছেন। বইটির নাম, “অ্যা ফার্স্ট-রেট ম্যাডনেস: আনকভারিং দ্য লিঙ্কস বিটুইন লিডারশিপ অ্যান্ড মেন্টাল ইলনেস”। বইটি লিখতে গিয়ে তিনি ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের মেডিক্যাল এবং ঐতিহাসিক রেকর্ড ব্যবহার করেছেন।
ঘায়েমি বলেন, “বণ্য এবং আপাত বিশৃঙ্খল উন্মাদনা ও শক্তি প্রদর্শণকারী বিষণ্নতা বা অবসাদে আক্রান্ত লোকেরা মানসিকভাবে স্বাভাবিকদের চেয়ে প্রায়ই অনেক বেশি সৃজনশীল, সহানুভূতিশীল ও বাস্তববাদি হয়ে থাকেন”। এই ধরনের লোকেরা সংকটকালে নজিরবিহীন সাফল্য প্রদর্শণ করেন। কিন্তু শান্তি ও সমৃদ্ধির সময়ে এরা ব্যর্থতা প্রদর্শণ করেন।
উদাহরণত, যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধকালীন সফল জেনারেল উইলিয়াম টেকুমশেহ শার্ম্যান মারাত্মক মানসিক অবসাদ ও বিষণ্নতা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তার মধ্যে এমনকি আত্মহত্যার প্রবণতাও লক্ষ্য করা গেছে। অন্যদিকে, জেনারেল জর্জ ম্যাককেলান মানসিকভাবে সুস্থ থাকা সত্ত্বেও সংকটের সময়ে তেমন কোনো সাফল্য দেখাতে পারেন নি।
জেনারেল ইউলিসিস এস গ্রান্ট অতিরিক্ত মদপানের কারণে মানসিক বিশৃঙ্খলায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। যিনি যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের সময়ে চমৎকার সাফল্য প্রদর্শণ করেন। কিন্তু পরে শান্তির সময়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তেমন কোনো সাফল্য দেখাতে পারেন নি।
আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল জীবনে বেশ কয়েকবার দীর্ঘকালীন মানসিক অবসাদ ও বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। নিজের মানসিক সমস্যা নিয়ে তিনি কোনো রাখঢাকও করতেন না। নিজের এই সমস্যার নাম দিয়েছিলেন তিনি “ব্ল্যাক ডগ”। এডলফ হিটলার যে বিশ্বের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারেন তা চার্চিলই সর্বপ্রথম বুঝতে পেরেছিলেন। অথচ মানসিকভাবে অনেক বেশি সুস্থ ও স্বাভাবিক চার্চিলের আগের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নেভিলে চ্যাম্বারলেইন হিটলারকে বুঝতেই পারেন নি। এরা দুজনেই ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ছিলেন।
অধ্যাপক ড. নাসির ঘায়েমি বলেন, চার্চিল দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধকালীন সংকট মোকাবেলায় ব্যাপক সাফল্য প্রদর্শন করেছেন। কিন্তু যুদ্ধের পর শান্তি ও সমৃদ্ধির সময়ে শুধু ব্যর্থতাই দেখিয়েছেন চার্চিল।  

Related Posts

Leave a Reply