May 7, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা শিল্প ও সাহিত্য

আমাকেই এখনো ধরতে পারেনি, পুলিশ ধরবে চম্বলের ডাকাত?

[kodex_post_like_buttons]

আবার চম্বল কাহিনী, এবার মিশন ‘ফুলন’ !!! (পর্ব ৩)

সৌগত রায়বর্মন: প্রথমবার চম্বল ঘুরে আসার পর অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটতে লাগল। স্কুলের বন্ধুরা হঠাৎ করে আমায় আপনি বলা শুরু করল। পাড়ার কুকুরগুলি আমাকে দেখলেই পায়ে পড়ে স্বসম্ভ্রমে কুঁই-কুঁই করতে লাগল। এমন কি সেই মেয়েগুলি যাদের পিছনে লাইন লাগাতাম অহরাত্র, তারা হঠাৎ হিন্দুস্থানি স্টাইলে শাড়ি পরে মুখ নামিয়ে আমার সামনে দিয়ে লাজুক হাসি হেসে ঘোমটাও দিয়ে দিতে লাগল। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু সর্বশেষে  যে ঘটনাটা ঘটল তা যেমন মারাত্মক তেমনই ভয়ঙ্কর।

তখন সার্জেন্ট নামক এক অতি সুদর্শন যুবক নবগ্রাম সহ সমস্ত হুগলি জেলা কাঁপাচ্ছে । সে নাকি সব্যসাচি। দু হাতে দেশী পিস্তল চালাতে পারত। আমরা এক সঙ্গেই স্কুলে পড়তাম। এক সময় পড়াশুনাকে ভয় পেয়ে লোককে ভয় দেখাতে শুরু করল।

ঘটনাটা ঘটল ঠিক মধ্যরাতে। আমার বাপের বাড়ি বেশ বড়সরই বলতে হবে। দোতলা বাড়ির দক্ষিণের ঘরেই থাকতাম আমি। বাবা অথর্ব। মা সারাদিন এত বড় বাড়ির নানা টুকিটাকি কাজে ব্যস্ত থাকত।

সেদিন মধ্যরাতে মশারি টাঙ্গিয়ে সদ্য ঘুমিয়েছি। মনে হল কে যেন জানালার শিক ধরে দাঁড়িয়ে আছে। সবে চোর চোর বলে চেঁচাতে যাবো , শুনলাম কে যেন ফিসফিস করে বলছে, রিঙ্কু রিঙ্কু আমি ভ্যাবলা, নিচে সার্জেন্ট তোর জন্য দাঁড়িয়ে আছে। তোর সঙ্গে নাকি খুব জরুরী দরকার। সার্জেন্টের কথা বলায় বুঝলাম এ তো চোর নয় মানুষ বটে। না নামলে কালকে আমার লাশ এই খাটে শুয়ে থাকবে।আমি ভ্যাবলা বলে ডেকে প্রায় কেঁদে ফেললাম। বললাম, হ্যাঁ রে আমি নামব কি করে? সে বিজ্ঞের মতো বলল, আমি যেভাবে পাইপ বেয়ে উঠেছি তোকে সেভাবেই নামিয়ে নেবো। চিৎকার চেঁচামেচি করে লোক ডাকিস না। সার্জেন্ট খচে যাবে। আমিও আর তর্ক না করে ভ্যাবলার হাতে নিজের জীবনের ভার তুলে দিয়ে, ভ্যাবলাকে জাপ্টে ধরে পাইপ বেয়ে নিচে নেমে এলাম।

গেটের ওপারে দাঁড়িয়ে সার্জেন্ট। মুখে সিগারেট, কোমরে গোঁজা ছ’ ঘরার পিস্তল। আমাকে দেখেই সার্জেন্ট সিগারেট ফেলে দিল।অভিমান ভরা কন্ঠে বলে উঠল,  চম্বলে গেলি, আমার কথা তোর মনেই এলো না। আমি হতভম্ব। বললাম, আমি তো কাজে গেছিলাম, তুই গিয়ে কি করতিস? সার্জেন্টের গলায় এবার একটু ধমকের সুর, তোরাই তো বলেছিস, ওখানে নাকি রাস্তার মোড়ে-মোড়ে সাইকেল সারাইয়ের মতো বন্দুকের কারখানা আছে। আমার জন্য খান দুয়েক নিয়ে আসতে পারলি না? আমি বিস্ময়ে বলে উঠলাম, পুলিশ ধরত না? ও একটা বিজ্ঞের হাসি হেসে বলল, আমাকেই এখনো ধরতে পারেনি, পুলিশ ধরবে চম্বলের ডাকাত? যাক আরেকবার গেলে আমায় নিয়ে যাস। ভুলে যাস না যেন। আমি আবার বোকার মতো প্রশ্ন করলাম, তুই কেন যাবি? ও আপন আনন্দে বলে উঠল, কয়েকটা ছোট খাটো কামান কিনে আনতাম। যারা বন্দুক রাস্তায় বানাতে পারে তারা একটু চেষ্টা করলে কামানও বানাতে পারবে!

ক্রমশ 

Related Posts

Leave a Reply