April 29, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular সফর

আজও যেন এখানে বসে থাকা দেহগুলি ডাক দেয় সবাইকে 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

পেরুর চাউচিল্লা সেমেট্রি বা সমাধিক্ষেত্র নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। যিশু খ্রিস্টের জন্মেরও প্রায় ২শ’ বছর আগে নাজকা জাতিগোষ্ঠী এটি স্থাপন করে। ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে যাওয়া এই সমাধিক্ষেত্রটি ১৯২০ সালে প্রথম আবিষ্কার হয়। প্রত্নতত্ত্ববিদদের যে বিষয়টি অবাক করে তা হল, সেখানে থাকা মৃতদেহগুলো বসিয়ে রাখা হয়েছিল। সাথে রাখা ছিল তাদের জীবদ্দশায় ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় নানা জিনিষ। অনেকটা মিসরীয়দের পিরামিডে যেমনটা রাখা হত।

তবে এই সমাধিক্ষেত্রের পার্থক্য হচ্ছে মৃতদেহগুলো সংরক্ষণের কোনো আলাদা ব্যবস্থা ছিল না। বরং ওই অঞ্চলের শুকনো আবহাওয়ার কারণেই কিনা বছরের পর বছর টিকে ছিল সেসব ! সেসময় প্রত্নবিদেরা সমাধিক্ষেত্রটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানতে পারেন ৬ থেকে ৭ শতকের পর এটির ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়।

প্রাচীন পেরুর মানুষেরা অবশ্য সেই এলাকা এড়িয়ে চলতো। তাদের বিশ্বাস, চাউচিল্লায় এখনো নানা কালোজাদু বিদ্যমান রয়েছে। যদিও পর্যটকদের কাছে বর্তমানে চাউচিল্লা আকর্ষণীয় স্থান। তাহলে কি পেরুবাসীর বিশ্বাস অমূলক ছিল?

সম্প্রতি গ্রেগ নিউকার্ক নামের এক ভদ্রলোক তার ব্লগে সেই অভিশপ্ত সমাধির কথা উল্লেখ করেছেন। সেখানে তিনি শেয়ার করেছেন তার ঠাকুমার জীবনের এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা! ব্লগে গ্রেগ লেখেন, তার ঠাকুমা ১৯৭০ দশকে পেরু ভ্রমণের সময় সেই সমাধিক্ষেত্র থেকে মমির একটি হাত নিয়ে আসেন। বাড়িতে শোভাবর্ধনের উদ্দেশ্যে সেই হাড় নিয়ে আসার পর থেকেই নাকি শুরু হয় অদ্ভূত সব কাণ্ডকারখানা।

শৈশবের সেই বর্ণনায় গ্রেগ জানান, ক’দিন যেতেই ঠাকুমার হাতে রহস্যময় এক ছত্রাক গজাতে শুরু করে। হাতের কয়েকটি আঙুলের নখও বাড়তে শুরু করে খুব দ্রুত। সেসময় তার মনে হতো, বাড়িতে যেন সর্বদা এক অমঙ্গলের ছায়া বিরাজ করছে। এমনকি বাড়ির পোষা কুকুরদের আচরণেও দেখা দেয় অস্বাভাবিকতা।

ব্লগে গ্রেগ লেখেন, মাঝে মাঝে কোনো কারণ ছাড়াই বাড়ির গ্যাসের বার্নার জ্বলে উঠতো। বাথরুমের শাওয়ার বন্ধ থাকলেও দেখা যেত হঠাৎ করেই ঝরঝর করে পড়তে শুরু করেছে জল । একদিনের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে গ্রেগ লেখেন, তখন বেশ ছোট তিনি। প্রার্থনার জন্য দাদু-ঠাকুরমা গির্জায় যাওয়ায় বাড়িতে তিনি একাই ছিলেন। হঠাৎ তার পুরো শরীর ছমছম করে ওঠে। অদ্ভূত অনুভূতির মাঝে একসময় তার মনে হয় কেউ যেন বাড়িতে প্রবেশ করেছে।

কিন্তু তেমনটি হওয়ার কথা নয়! খালি চোখেও তিনি কাউকে প্রবেশ করতে দেখেননি। এমন সময় অনুভব করেন, কে যেন তার কাঁধ স্পর্শ করেছে। কিন্তু ঘাড় ফেরালে কাউকে পাননি। একটু পরেই অবশ্য ঠাকুমা ঘরে ফিরলে ব্যপারটাকে আর গুরুত্ব দেননি গ্রেগ।

তবে অদ্ভূত কাণ্ডকারখানা চলতেই থাকে। একসময় এমন অবস্থা হয়, বাড়িতে টিকে থাকাই তাদের জন্য মুশকিল হয়ে যায়। একসময় তান্ত্রিকের শরণাপন্ন হলে জানা যায় আসল কারণ! পেরুর চাউচিল্লা সমাধিক্ষেত্র থেকে আনা সেই হাতই হচ্ছে সব নষ্টের গোড়া। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় সেই অভিশপ্ত হাড়টিকে। কিন্তু ততদিনে কেটে গেছে ১৮ বছর। অভিশপ্ত হাড়ের কারণে গ্রেগের পরিবার ততদিনে বিধ্বস্ত প্রায়!

সমাধিক্ষেত্রটির অভিশপ্ততার অভিজ্ঞতা শুধু গ্রেগেরই হয়নি, হয়েছে অনেকেরই। পেরুর প্রাচীন নাজকা সংস্কৃতির অন্যতম নিদর্শন ‘চাউচিল্লা’কে চলচ্চিত্রে তুলে এনেছিলেন বিখ্যাত পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গও। ‘ইন্ডিয়ানা জোনস’ সিরিজের শেষ ছবিতেও চাউচিল্লাকে দেখানো হয় অতিপ্রাকৃত ও রহস্যময় সমাধিক্ষেত্র হিসেবে।

Related Posts

Leave a Reply