April 28, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা

‘করোনাকে বরণ করেই হারানো সম্ভব’, বাঁচতে মানতে হবে এই নীতি ! 

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

চীনের হুবেই প্রদেশে গত জানুয়ারিতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে পাঁচ কোটি মানুষকে কোয়ারেন্টিনে যেতে বাধ্য করা হয়। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার (ওইসিডি) প্রায় সব সদস্যই মার্চের মাঝামাঝি নাগাদ স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, কর্মক্ষেত্র এবং গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়। শুধু সুইডেনকেই তখন উল্টো পথে হাঁটতে দেখা যায়।

লকডাউন বা জরুরি অবস্থা নয় বরং সুইডেন তার নাগরিকদের সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখার চর্চা করতে উৎসাহিত করে। করোনার লেখচিত্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারাও অবশ্য নানামুখী ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে সে সব ৫০ জনের বেশি জনসমাগম বন্ধ, মদের দোকানগুলোতে ঝাঁপ ফেলে দেওয়া, হাইস্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দূরশিক্ষণের ব্যবস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এসব নিয়ম পালনে অবশ্য তারা জরিমানার ব্যবস্থা রাখে। যে কারণে রেস্তোরাঁগুলো খোলা থাকলেও তাতে ভিড় জমেনি। প্রাথমিকে পড়ুয়ারাও দূরত্ব মেনে স্কুল করেছে। প্রতিবেশী নরওয়ের মতো আক্রান্ত খুঁজতে কোনো অ্যাপ ব্যবহার করে নাগরিকদের ব্যক্তি স্বাধীনতায় বাধ সাধেনি সুইডিশ সরকার।

সুইডিশ কর্তৃপক্ষ অবশ্য সরাসরি রোগ প্রতিরোধ্য ব্যবস্থা জোরালো করার বা হার্ড ইমিউনিটির কথা ঘোষণা করেনি । তবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের মূল অস্ত্র এটাই। হার্ড ইমিউনিটি হচ্ছে, একটি জনপদের অন্তত ৬০ শতাংশ মানুষের শরীরে ভাইরাস থাকবে কিন্তু জীবাণুটি মানুষকে আক্রমণ করতে পারবে না-এমন এক ব্যবস্থা। অর্থাৎ শরীর একটি অক্ষম ভাইরাসকে ধারণ করবে।

সুইডেনের জনস্বাস্থ্য সংস্থার মহামারি বিষয়ক প্রধান বিষেশজ্ঞ অ্যান্ডর্স টেগনেল বলেন, স্টকহোমের মানুষ সম্ভবত এই মাসেই এই হার্ড ইমিউনিটি অর্জনে সক্ষম হবে। স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত শাস্ত্রবিদ টম ব্রিটন মনে করেন, রাজধানীর ৪০ শতাংশ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা গেলেই মধ্য জুনের মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব।

করোনায় সুইডেনে মৃত্যুর হার এখনো বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন বা জার্মানির চেয়ে কম। অর্থনীতিও সচল। তবে বয়স্কদের রক্ষা করতে পারছে না তারা। এর জন্য অবশ্য মাস্ক পরার মতো প্রাথমিক কিছু বিষয়ে অবহেলা করাকে দায়ী করেন টেগনেল। অভিবাসীদের ক্ষেত্রেও একই কথা সত্য। তবে একই সঙ্গে এ কথাও সত্য, যখন বেশিরভাগ দেশ দ্বিতীয় দফায় করোনায় আক্রান্ত হবে তখন দেখা যাবে সুইডেনে এর সংক্রমণ শেষ হয়েছে বা শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

করোনায় সুইডেনের প্রতিক্রিয়া পুরোপুরি উপযুক্ত এমন বলা যায় না। তবে এখনকার পরিস্থিতিতে বহু দেশ এই কৌশল গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। কারণ আজীবন লকডাউন অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ড স্কুল খুলে দিয়েছে। একই পথে হাঁটছে জার্মানিও। আরো আছে ইতালি, ফ্রান্স এমনকি আমেরিকাও ।

লকডাউন দিয়ে সব বন্ধ করে বসে থাকার চেয়ে সুইডেনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ সম্ভবত ভালো উপায়। কারণ মানুষকে বাঁচাতে হবে-ভাইরাস থেকে, দারিদ্র থেকেও।

সুইডিশ দৃষ্টান্ত অনুসরণের ক্ষেত্রে অন্য দেশগুলোতে এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। সুইডেনের ব্যর্থতার দিকটাও তাদের মনে রাখতে হবে, বয়স্কদের বিশেষ যত্ন নিতে হবে।

Related Posts

Leave a Reply