May 5, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

অবাক হবেন : মন ভাল তো চুল ভাল!‌

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

দৃশ্যমান চুল বাদে চুলের বাকি অংশের নাম ‘‌হেয়ার ফলিকল’‌। ছোট থলির মতো এই অংশ গাছের শিকড়ের মতো আঁকড়ে থাকে। প্রকৃতির নিয়মে প্রতিদিনই ৬০-‌১০০টি চুল পড়ে এবং সেই স্থানে নতুন চুল গজায়। এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
অকালে চুল পড়ে কেন?‌
সময়ের আগে চুল পড়ার হার বেড়ে যাওয়ার পেছনে থাইরয়েড, টাইফয়েড, ডায়াবেটিস জাতীয় রোগের প্রভাব ১%‌ হলে বাকি ৯৯%‌-এর জন্য দায়ী জিনগত কারণ। বাবার শরীর থেকে আসা ‘‌Y‌’‌ ক্রোমোজম দিয়ে চুলের ধরন নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই বাবার দিকে চুলের ধরনই সন্তানে প্রতিফলিত হয় বেশি। বংশগত কারণে অকালে চুল পড়ে যাওয়াকে বলে অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপেশিয়া। অ্যান্ড্রোজেন আদতে সেক্স হরমোন, যা সক্রিয় হলে চুল পড়ার হার বাড়ে। হেয়ার ফলিকলগুলি ক্রমশ ছোট হতে থাকে ও একটা সময়ের পর নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে সেই ফলিকল থেকে আর নতুন চুল গজায় না।
চুল পড়ার ধরন
একটা বয়সের পরে ছেলেদের চুলের ফ্রন্টাল লাইন ক্রমশ পেছন দিকে সরে গিয়ে একসময় ব্রহ্মতালুতে ছোট্ট টাক পড়ে এবং আস্তে আস্তে সেটি বড় হতে থাকে। গোটা মাথা ফাঁকা হয়ে গেলেও মাথার পেছনের দিক ও কানের ওপরের অংশ জুড়ে চুল থেকে যাওয়ার মূল কারণ এই অংশের চুল অ্যান্ড্রোজেন হরমোনে প্রভাবিত হয় না। অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপেশিয়ার শিকার নারীরাও হন। তবে নারীদের সিঁথি ক্রমশ চওড়া হয়ে পরবর্তী সময়ে সারা মাথা থেকেই অল্প–‌অল্প করে চুল উঠতে থাকে।
টাকে চুল
দীর্ঘদিনের নিয়মিত চিকিৎসায় আজকাল টাকে নতুন চুল গজায়। আর দ্রুত টাক ঢাকতে সার্জারি বা হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে মাঠে রোয়া ধান বোনার মতো টাকেও চুল বোনা হয়।
চুল ভাল রাখতে
শরীরের সামগ্রিক বৃদ্ধির জন্য যেমন পুষ্টির প্রয়োজন হয়, তেমনি চুলেরও হয়। হেয়ার ফলিকলের মাধ্যমে শরীর থেকে পুষ্টি চুলে পৌঁছায়। তাই ঘন, সুস্থ, সতেজ ও মজবুত চুলের জন্য প্রচুর সবুজ শাক–‌সবজি, ফল, কার্বোহাইড্রোট, প্রোটিন ও ফ্যাট আছে এমন সুষম ডায়েট এবং পর্যাপ্ত জল খাওয়া দরকার। শরীর সুস্থ ও নীরোগ থাকলে চুলও ভাল থাকে, এটাই ভাল চুলের গোড়ার কথা।
তেলের কাজ
তেল মাখলে চুল তাজা থাকে কিংবা চুলের গোড়া শক্ত হয়–‌‌ এ ধারণা ঠিক নয়। চুলকে তাজা রাখতে পুষ্টিকর খাবার ও পর্যাপ্ত জলেই ভরসা রাখতে হবে। তেলের কাজ চুলকে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখা। অর্থাৎ পালিশের কাজ করা। ব্যস, এটুকুই। তেল মেখে চুলের গুণমানের উন্নতি সম্ভব নয়। তাই তেলের বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্ত হবেন না। তা হলে কি চুলে একেবারেই তেল নয়?‌ ঠিক তাও নয়। যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, যাঁরা বেশি ঘামেন তাঁরা মাথায় একেবারেই তেল দেবেন না। তবে যাঁদের চুল শুকনো, তাঁরা তেল বা হেয়ার সিরাম লাগাতে পারেন। না হলে শুকনো চুলে যে ঘর্ষণ হয় তার প্রভাবে চুল পড়ার হার বাড়তে পারে।
শ্যাম্পু যেভাবে
শ্যাম্পু ব্যবহারের কিছু নিয়মবিধি আছে। শুকনো চুলের জন্য তৈলাক্ত শ্যাম্পু এবং তৈলাক্ত চুলের জন্য শুকনো শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভাল। এই বিশেষ শ্যাম্পু যদি নিয়মিত ব্যবহার নাও করতে পারেন, তবে অবশ্যই ‘‌সফ্‌ট’‌ বা কম ডিটারজেন্ট আছে এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। মনে রাখবেন, শ্যাম্পু শুধু চুল পরিষ্কার রাখে, চুলের গুণগত মান বাড়ানোর ক্ষেত্রে তার অবদান নেই।
শরীর ও মন ভাল থাকলে
শরীর তো বটেই মন ভাল থাকলে চুলও ভাল থাকে। অনেক সময় বুকের সংক্রমণ, কিডনির অসুখ, নাছোড় অ্যানিমিয়া, থাইরয়েড সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপে সাময়িক ভাবে চুল পড়ে যায়। কেমোথেরাপি বা টাইফয়েডের পরেও অনেকের চুল পড়ে। তবে রোগ সারলে কিন্তু আবার চুল গজায়।
কম বয়সে চুল পাকা
বংশগত কারণে কম বয়সে চুল পাকে। কারও বাবা-মায়ের অল্প বয়সে চুল পেকে থাকলে তাঁদের সন্তানদের মধ্যেও অকালে চুল পাকার প্রবণতা থাকবে। এটা সারানোর তেমন কোনো উপায় নেই। অনেক সময় লিভারের দোষ দেওয়া হয় বটে, তবে লিভারের কারণে মাত্র ২-‌৩%‌ ক্ষেত্রে এরকম হতে পারে। সেটা হয়ত ওষুধ দিয়ে সারানো যায়। ভিটামিন ডি, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড–‌‌ এইসব ওষুধ লাগিয়ে উপকার পাওয়া গেলেও সব সময় তা কার্যকর হয় না। তবে কোনো বাচ্চার চুল পাকতে দেখা গেলে সতর্ক হতে হবে। বংশে শ্বেতির প্রবণতা থাকলে এমন হয়। সে ক্ষেত্রে বাবা-‌মা-কে খুব ভাল করে দেখতে হবে যে বাচ্চার শরীরে কোথাও কোনো সাদা দাগ দেখা যাচ্ছে কি না।

Related Posts

Leave a Reply