May 11, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

এই নখ শরীরের কতটা ক্ষতি করে জানেন?

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

পেট ভরে কিনা জানা নেই! তবু অনেকেই ঘন্টার পর ঘন্টা নখ খেয়ে থাকেন। আর যতক্ষণে স্টক ফুরোয়, ততক্ষণে নখের হাল বেহাল। শুধু কি তাই, শরীরেরও একাধিক ক্ষতি হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে তো নখের অন্দরে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া দেহের অন্দরে প্রবেশ করে এত মাত্রায় ক্ষতি করে যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পরে। তাই আপনিও যদি ব্রেকফাস্ট-লাঞ্চ-ডিনারে শুধু নখই খেযে থাকেন, তাহলে সাবধান!

কোন এক অজানা কারণে বহু মানুষই হাতের নখ খেয়ে থাকেন। কেউ বলেন এমনটা করলে নাকি বুদ্ধির জোর বাড়ে, আবার কারও মতে নিছক অভ্যাসের বসেই আঙুলগুলি মুখের কাছে চলে আসে। এক্ষেত্রে স্ট্রেসকেও অনেকে দায়ি করে থাকেন। তবে এই সব শুনে ভাববেন না যে এই কু-অভ্যাসের জন্ম আধুনিক যুগে হয়েছে। ইতিহাস পাতা ওল্টালে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় হাজার বছর আগে গ্রিসের এক দার্শনিক সিডোনিয়াস তাঁর একাধিক লেখায় একজন মানুষের কথা বলেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন যখন সেই বিশেষ মানুষটি কিছু ভাবতে বসেন, তখনই হাতের নখ খান।

তাহলে ভাবুন সেই কোন যুগ থেকে মানুষ এই কু-অভ্যাসের শিকার হয়ে আসছে। তবে নখ খাওয়ার কারণ যাই হোক না কেন, এমনটা করা কিন্তু একেবারেই উচিত নয়। কারণ একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে নখ খেলে একাধিক রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরে জটিল সংক্রমণ দানা বাঁধার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। তাই আপনিও যদি এমনটা করে থাকেন, তাহলে আর অপেক্ষা না করে জেনে নিন নখ খেলে শরীরের কী কী ক্ষতি হতে পরে।

১. মুখ থেকে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করে:

বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নখ খাওয়ার সময় হাতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ারা মুখগহ্বরে প্রবেশ করে। ফলে একদিকে যেমন মুখের অন্দরে সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, তেমনি ব্যাকটেরিয়ার কারণে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করে। আর এমনটা হলে লোক সমাজে সম্মান যে যায়, তা কি আর বলে দিতে হবে! এবার বুঝেছেন তো নখ খাওয়া কতটা ক্ষতিকর।

২. দাঁতের ক্ষতি হয়:

আপনাদের কি জানা আছে দীর্ঘদিন ধরে নখ খেলে দাঁতের ক্ষয় হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দাঁতের অবস্থানেও পরিবর্তন হয়। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে এমন অভ্যাসের কারণে দাঁত বেঁকে যায়। ফলে খাবার খাওয়ার সময় সমস্যা হতে শুরু করে। অনেক ক্ষেত্রে মাড়িতে সংক্রমণের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।

৩. ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে:

আমাদের নখের মধ্যে প্রতিদিনই হাজারো ব্যাকটেরিয়া নিজেদের ঘর বানিয়ে চলেছে। আর এইসব ব্যাকটেরিয়াদের নখ থেকে বার করা মোটও সহজ কাজ নয়। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে সাবান দিয়ে ভাল করে হাত এবং নখ ধোয়ার পরেও এরা নখের ভিতরে থেকে যায়। ফলে যে মুহূর্তে আপনি নখ খাওয়া শুরু করেন, এই জীবাণুগুলি মুখ দিয়ে শরীরে অন্দর মহলে চলে যায়। ফলে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন সহ একাধিক রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা বেড়ে যায়।

৪. নখের সৌন্দর্য কমে যায়:

যারা হাতের নখ খায়, দেখবেন তাদের নখগুলি এতটাই ছোট হয়ে যায় যে কেমন বাজে দেখতে লাগে। এতে যে শুধু নখের সৌন্দর্য হ্রাস পায়, তা নয়। সেই সঙ্গে সার্বিক হাতের সৌন্দর্যতাও কমে যেতে শুরু করে।

৫. চিরদিনের মতো নখ হারিয়ে ফেলতে পারেন:

বিশেষজ্ঞদের মতে দীর্ঘদিন ধরে নখ খেলে “নেল বেড” এত মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় যে পুনরায় নখ বেড়ে ওঠে না। ফলে ধীরে ধীরে আঙুলে নখই থাকে না। আর এমনটা হলে হাতের সৌন্দর্য কমতে সময় লাগে না।

৬. নখের সংক্রমণ:

নখ খাওয়ার সময় আঙুলের এই অংশে ছোট ছোট আঘাত লাগতে থাকে। ফলে নখের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া এইসব ক্ষতস্থানের মধ্যে দিয়ে রক্তে মিশে যাওয়ার সুযোগ পায়। আর একবার যদি এমনটা হয়ে যায়, তাহলে নখের সংক্রমণ, এমনকী রক্তের সংক্রমণ হওয়ার অশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, রক্ত আমাদের শরীরের প্রতিটি কোনায়, প্রতিটি অঙ্গে পৌঁছে যায়। তাই ব্লাড ইনফেরশন শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়। ঠিক সময়ে যদি রক্তকে পুনরায় জীবাণুমুক্ত করা না যায়, তাহলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্তও ঘটতে পারে। তাই এবার থেকে নখ খাওয়ার আগে এই বিষয়ে একবার ভেবে নেবেন কিন্তু!

৭. জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে:

নখ খেলে সংক্রমণ সহ একাধিক রোগের আশঙ্কা বাড়বে। আর একবার যদি এই সব রোগের কোনওটা শরীরে বাসা বেঁধে বসলে ব্যথা-যন্ত্রণাকে সঙ্গী করেই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে হবে। তাই একথা বলতেই হয়, যে অভ্যাস দৈনন্দিন জীবনকে খারাপ করে দেয়, সে অভ্যাস ত্যাগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। নাহলে কী হতে পারে, সে বিষয়ে তো এখন জেনেই নিয়েছেন।

৮. ভাইরাল ইনফেকশন:

বারে বারে নখ খেলে “হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস” এর প্রকোপ খুব বৃদ্ধি পায়। এই ভাইরাস একবার যদি শরীরে প্রবেশ করে যায় তাহলে নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, ঠিক সময়ে এই সংক্রমণকে আটকাতে না পারলে সার্ভিকাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়।

Related Posts

Leave a Reply