April 28, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular ধর্ম রোজনামচা

‘জল দে,  মেঘ দে’ আর্তনাদে বিশ্বের ৫০০ কোটি মানুষ

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস  : 
০৫০ সালের মধ্যে ৫০০ কোটির বেশি মানুষ জল পেতে অসুবিধায় পড়তে পারে। জাতিসংঘের চলতি বছরের জল উন্নয়ন প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল সোমবার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।

এর আগে ২০১৮ সালে ৩৬০ কোটি মানুষ বছরে অন্তত এক মাস জল পেতে অসুবিধায় পড়ার কথা জানা গিয়েছিল।

জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডাব্লিউএমও) গত বছরের অক্টোবরে এক রিপোর্টে এ তথ্য জানিয়েছিল।

ডাব্লিউএমও প্রধান পেটেরি তালাস ওই সময়ে বলেছিলেন, জল সঙ্কট মোকাবিলায় আমাদের জেগে উঠতে হবে। ডাব্লিউএমও ওই সময় জোর দিয়ে বলেছিল যে, গত দুই দশকে ভূমিতে সঞ্চিত জলের স্তর, ভূপৃষ্ঠে, ভূগর্ভে, তুষার এবং বরফে প্রতি বছর এক সেন্টিমিটার হারে হ্রাস পেয়েছে।

জলের সংকট আগামী তিন দশকে আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, খরা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে এই অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে বলে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

২০৫০ সালের মধ্যে প্রতিবছর বিশ্বে জলের ব্যবহার এক শতাংশ হারে বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জল সরবরাহের প্রচলিত উৎস খাল ও বিল শুকিয়ে ভূগর্ভস্থ জলের ওপর চাপ পড়ছে বলেও জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বিশ্ব জল উন্নয়ন প্রতিবেদন ২০২২ এ আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের ৯৯ শতাংশ সুপেয় জলের উৎস হলো ভূগর্ভস্থ। সেই জলের অবমূল্যায়ন, অব্যবস্থাপনা এবং অপব্যবহারের কারণে এটি ক্ষতির মুখে পড়ছে।

‘বৈশ্বিক জল সঙ্কটের সমাধান যদি আমাদের অজানা থেকে যায়, সেটা কেমন হবে?’- জানতে চেয়েছেন ইউনেসকো কর্তৃক প্রস্তুত করা প্রতিবেদনটির প্রধান সম্পাদক রিচার্ড কনর।

থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে রিচার্ড কনর আরো বলেছেন, ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহারে টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে তা থেকে অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে।

এদিকে বিশ্বে জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাওয়ার কারণে জল সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাপক চাপ পড়েছে। সে কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূগর্ভস্থ জলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

ভূগর্ভস্থ জলের এতো গুরুত্ব কেন এবং এর সুবিধা কী? বিশ্বের মোট পানির মাত্র ১ শতাংশ সুপেয় জল । তার মধ্যে বেশির ভাগই পাওয়া যায় মাটির নিচে। সেখানকার পানির গুণমান সাধারণত ভালো। এটি নিরাপদে, সাশ্রয়ী মূল্যে এবং উন্নত পরীক্ষা ছাড়াই ব্যবহার কিংবা পান করা যায়।

পৃথিবীর উপরিভাগের জল সাধারণত খাল-বিল ও লেকে সংরক্ষিত থাকে। জলের এসব উৎস সীমিত। দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তীব্র খরার কবলে পড়ছে এসব স্থান।

অথচ ভূগর্ভস্থ জল স্বল্প খরচে সহজেই সরু পাইপের মাধ্যমে উপরে তুলে নিয়ে আসা যায়।   সারাবিশ্বে দৈনিক ব্যবহৃত জলের   অর্ধেকই ভূগর্ভস্থ জল । গ্রামের মানুষের খাবার জলের বিশুদ্ধ সরবরাহ এবং সবচেয়ে সস্তা মাধ্যম মাটির নিচের জল ।

গ্রামের সাধারণ জনগণ সরকারি কিংবা বেসরকারি জল সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত না হয়ে স্বল্প খরচে ভূগর্ভস্থ জল খুব সহজেই তুলে ব্যবহার করে।

এভাবে ভূগর্ভস্থ জল তোলা অব্যাহত থাকলে হলে পরিণতি খারাপ হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। জমি শুকিয়ে পানির সরবরাহ কমে যাওয়ারও শঙ্কা রয়েছে।

২০১৮ সালে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জল সঙ্কটের মুখে পড়েছিল ভারত। ভারতের সরকারি একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতে ৪০ শতাংশ মানুষ ২০৩০ সালের মধ্যে খাওয়ার জলের নির্ভরযোগ্য কোনো উৎসের সুযোগ পাবে না।

আবহাওয়া উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খরা আরো বেশি দেখা দিচ্ছে। ভারতে বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল কৃষকদের জন্য আরো বেশি সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার কথা ধরলে, সেখানে দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে। ফলে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে জলাধার। কূপের বদলে সেখানকার মানুষদের ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

Related Posts

Leave a Reply