May 4, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

বর্ষাকালে সুস্থ থাকতে চান তো?

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

ই প্রবন্ধে পরিবেশন করা হল এমন একটি হেলথ গাইড, যা মেনে চললে একথা হলফ করে বলতে পারি কোনও রোগই আগামী ২-৩ মাস আপনার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না। স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশের কারণেই মূলত বর্ষাকালে ক্ষতিকর স ব্যাকটেরিয়ারা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে মশার উপদ্রপ বেড়ে যাওয়ার কারণে লেজুড় হল ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গুর মতো রোগও। তবে একটাই নিশ্চিন্তি যে সহজ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করল সহজেই এইসব রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয়।

১. ম্যালেরিয়া: বর্ষাকালে চারিদিক জলে থইথই করার কারণে মশাদের পক্ষে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করা সম্ভব হয়। ফলে চোখের পলকে মশাদের সাম্রাজ্য কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বাড়ে স্ত্রী অ্যানোফলিস মশার সংখ্যাও, যে মশার কারণে মূলত ম্যালেরিয়া রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পয়ে থাতে। প্রসঙ্গত, সরকারি পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলেই দেখতে পাবেন প্রতিদিন কত সংখ্যক মানুষ এই রোগে মারা যান। এক্ষেত্রে বাঁচার উপায় কী?

সমাধান: মশাই যেহেতু এই রোগের উপদ্রপ বাড়িয়ে থাকে। তাই মশার থেকে দূরে থাকতে হবে। আর এই কাজটি করবেন কীভাবে? খুব সহজ! বাড়ির কোথাও যেন জল জমতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেই সঙ্গে আরও কতগুলি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন- 

১. রাতে মশারি ব্যবহার শুরু করুন। প্রয়োজন মশাদের দূরে রাখে মলমও ব্যবহার করতে পারেন। মোট কথা মাশার কামড় থেকে যত দূরে থাকবেন, তত রোগ ভোগের আশঙ্কা কমবে।

২. অ্যান্টিম্যালেরিয়া ওষুধ সঙ্গে রাখবেন। যদি দেখেন কিছু দিন অন্তর অন্তরই জ্বর আসছে, সেই সঙ্গে পেশীতে যন্ত্রণা এবং দুর্বলতা দেখা দিয়েছে, তাহলে সময় নষ্ট না করে ওষুধ খাবেন, নয়তো চিকিৎসকের পরমার্শ নেবেন। মনে রাখবেন, যত দেরি করবেন, তত কিন্তু কষ্ট বাড়বে।

২. পেট খারাপ: ম্যালেরিয়ার পরে বর্ষাকালে যে রোগটির প্রকোপ মারাত্মভাবে বেড়ে যায়, তা হল পেট খারাপ। আসলে এই সময় খাবার এবং জলে ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণুদের প্রকোপ এত বৃদ্ধি পায় যে পেটকে ঠিক রাখাটা বাস্তবিকই কটিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়।

সুস্থ থাকার উপায়: এক্ষেত্রে যে যে নিয়মগুলি মানলে উপকার পাওয়া যেতে পারে, তা হল-

১. মাঝে মধ্যেই সাবান দিয়ে ভাল করে হাত ধোবেন। কারণ হাতের মাধ্যমেও কিন্তু জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

২. খুব অসুবিদা না থাকলে খাবার জল ফুটিয়ে খাবেন। ফোটালে জলে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়ারা মারা যায়, ফলে পটের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

৩. এই সময় ভুলেও স্ট্রিট ফুড খাওয়া চলবে না। যতটা সম্ভব বাড়িতে বানানো খাবার খাবেন। আর গরম গরম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ ঠান্ডা খাবারে জীবাণুদের উপদ্রপ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।

৪. ভাল করে রান্না করা নয়, এমন খাবার খাওয়া চলবে না। সেই সঙ্গে কাঁচা খাবার খাওয়াও এড়িয়ে চলতে হবে।

৫. সবজি এবং ফল খাওয়ার আগে ভাল করে ধুয়ে নেবেন। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে বর্ষাকালে সবজি এবং ফল নোংড়া জলের সংস্পর্শে আসার ফলে এমন খাবার না ধুয়ে খেলে জীবাণুর সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

৬. বর্ষাকালে যতটা সম্ভব যেখান সেখান থেকে আইসক্রিম খাবেন না।

৩. টাইফয়েড: স্টেপটিক ব্যাকটেরিয়া নামে একটু জীবাণুর কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। বর্ষাকালে জল এবং সবজিতে এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। সেই কারণেই তো পরিষ্কার জল বা সবজি না খেলে টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। আর সব থেকে ভযের বিষয় হল রোগটি সেরে যাওয়ার পরেও কোনও কোনও সময় ব্যাকটেরিয়া গল ব্লাডারে থেকে যায়। ফলে বারে বারে এমন রোগে অসুস্থ হয়ে পরার আশঙ্কা থেকে যায়। এক্ষেত্রে সাধারণত যে যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পেয়ে থাকে, সেগুলি হল- মারাত্মক জ্বর, তলপেটে ব্যথা এবং মাথার যন্ত্রণা।

টাইফয়েড থেকে দূরে থাকার উপায়: এই রোগটি কিন্তু মারাত্মক ছোঁয়াচে। তাই বাড়িতে কারও এই রোগ হলে তাঁকে পরিবারের বাকি সদস্যদের থেকে আলাদা রাখতে হবে। সেই সঙ্গে যত শীঘ্র সম্ভব রোগীর চিকিৎসা শুরু করতে হবে। খেয়াল রাখবেন রোগী যেন জল বেশি করে খায়। কারণ থাইরয়েডের প্রকোপে শরীরে জলের অভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এবার প্রশ্ন হল এই রোগ থেকে দূরে থাকবেন কীভাবে? 

যেমনটা আগেও আলোচনা করেছি যে মূলত জল এবং সবজির মাধ্যমে টাইফয়েড রোগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। তাই জল ফুটিয়ে খাবেন। সেই সঙ্গে সবজি রান্না করার আগে গরম জলে ভাল করে ধুয়ে নেবেন। এমনটা করলেই দেখবেন সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে। ৪. ভাইরাল ফিবার: ওয়েদার চেঞ্জের সময় এমন রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, বিশেষত বর্ষাকালে। কারণ এই সময় জীবাণুদের সংখ্যা এমনিতেই বৃদ্ধি পায়, তাই ভাউইরাল ফিবারে আক্রান্তের সংখ্যাও চোখে পরার মতো বাড়তে থাকে এক্ষেত্রে হাঁচি, গলায় ব্যথা এবং জ্বরের মতো লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ পেয়ে থাকে।

বাঁচার উপায় কী?

ভাইরাল ফিবার থেকে দূরে থাকার একটাই উপায়। যতটা সম্ভব বৃষ্টিতে কম ভিজবেন। সেই সঙ্গে কতগুলি ঘরোয়া ওষুধকে সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না। যেমন…

রাতে বা দিনে একবার হলেও গরম গরম হলুদ মেশানো দুধ খাবেন। সেই সঙ্গে মাঝে মধ্যে গরম জলে গার্গেল করবেন। এমনটা করলে দেখবেন গলার কোনও সমস্যা কাবু করতে পারবে না।

৫. ডেঙ্গু: বর্ষাকালের স্টার হল ডেঙ্গু। কারণ বছরের এই সময় যে রোগ সবথেকে বেশি মানুষ ভুগে থাকেন তা হল ডেঙ্গু। এক্ষেত্রে বাঁচতে গেলে মশাকে দূরে রাখতে হবে। কারণ ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করা মশা কামড়ানো মাত্র ভাইরাস রক্তে মিশে গিয়ে খেল দেখাতে শুরু করে দেয়। স্ত্রী অ্যানোফিলিসকে দূরে রাখা কি সম্ভব? অবশ্যই সম্ভব! কিন্তু তার জন্য কতগুলি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন ধরুন-

১. শোয়ার ঘরে মশার উপদ্রপ যাতে না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারি মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায়, তাই সন্ধ্যার আগে পর্যন্ত জানলা বন্ধ করে রাখবেন। প্রয়োজনে মসকিউটো ম্যাট লাগাতে পারেন জানলায়। ২. মশাদের বংশবৃদ্ধি আটকাবে এমন স্প্রে ঘরের প্রতিটি কোণায় দিয়ে রাখতে হবে।

৩. বাড়ির কোথাও যেন জল না জমে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

৪. শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে রাখবে এমন জামা-কাপড় পরবেন। যাতে মশা কামড়াতে না পারে।

. চিকুনগুনিয়া: অ্যাডিস অ্যালবোপিকটাস মশার কারণে এই রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এক্ষেত্রেও তাই মশার কামড় থেকে বাঁচতে হবে। আর খেয়াল রাখেত হবে বাড়ির আশেপাশে যেন জল জমে না থাকে। কারণ সকাল বেলাতেই জলের মধ্যে এই মশারা বংশবৃদ্ধি করে থাকে।

এই রোগ থেকে বাঁচতে: 

এক্ষেত্রেও প্রথম কাজ হল মশাকে দূরে রাখা। আর তার জন্য জানলা-দরজায় নেট লাগানো ছাড়া উপায় নেই। সেই সঙ্গে মশারি টাঙিয়ে শোয়ার অভ্যাস করতে হবে।

২. শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে রাখে এমন জামা-কাপড় পড়তে হবে। ৩. সারা শরীরে মশাকে দূরে রাখে এমন ক্রিম লাগাতে পারেন।

৭. জন্ডিস: বর্ষাকালে এই রোগটির মারাত্মকভাবে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাই সাবধান থাকাটা জরুরি। না হলে কিন্তু বিপদ! এক্ষেত্রে উপায়!

১. হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি এর ভ্যাকসিন নিয়ে রাখতে হবে।

২. মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান করা চলবে না।

৩. জল এবং খাবার খাওয়ার বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে।

Related Posts

Leave a Reply