May 19, 2024     Select Language
KT Popular সফর

চলুন আজ ঘুড়ে আসি দিরাং আর তাওয়াং থেকে

[kodex_post_like_buttons]

নিউজ ডেস্ক

শুরু হলো বেড়ানো নিয়ে এক নতুন সিরিজ। বাদিকের বুকপকেট-টায় একটু ইচ্ছে ভর্তি করে চলুন বেরিয়ে পড়ি।প্রজাপতি হয়ে একটা একটা করে রাজ্য পাড়ি দেব আমরা। শুরু করছি অরুণাচলপ্রদেশ- থেকে। ভালুকপং আর বমডিলা-পর এবার যাই দিরাং আর  তাওয়াং থেকে।

উত্তর-পূর্ব ভারতের বৃহত্তম রাজ্য অরুণাচলপ্রদেশ, সকালবেলার রোদ্দুর যেখানে ভারতের মাটিতে প্রথম পা ফেলে। অরণ্যে ঘেরা পাহাড়ি এই রাজ্যটিতে বাস করেন নানান উপজাতির মানুষেরা। চিন-তিব্বত সীমান্তে অবস্থানের জন্য অরুণাচল প্রবেশে ইনারলাইন পারমিট লাগে। পশ্চিম, মধ্য ও পূর্ব অরুণাচলের জন্য আলাদা আলাদা পারমিট করতে হবে।

দিরাং (Dirang)- বমডিলা থেকে তাওয়াং যাওয়ার পথে ৪২কিমি দূরে ছোট্ট জনপদ দিরাং-অপরূপ সুন্দর।দিরাং-এ থেকে বেড়িয়ে নেওয়া যায় ১০কিমি দূরের সাংতি ভ্যালি (Sangti Valley) ও ভেড়া প্রজনন কেন্দ্র (Sheep Breeding Farm), উষ্ণ প্রস্রবণওয়ার মেমোরিয়াল  চুগ ভ্যালি (Chug Valley)  মনাস্ট্রি । সাংতি নদীর ওপর খাশো ব্রিজ পেরিয়ে সাংতি উপত্যকার উন্মুক্ত সমতল-কোথাও দিগন্তজোড়া ক্ষেত-কোথাওবা ঘাসজমিতে চরে বেড়াচ্ছে পাহাড়ি ঘোড়া – উপত্যকার বুক চিরে সাংতির উচ্ছ্বলতা-এ যেন বিদেশী ছবির কোন দৃশ্য।দিরাং থেকে সাংতি যাওয়ার পথে শিপ ব্রিদিং ফার্মের চত্ত্বরটিও ভারি সুন্দর-ঠিক যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি।পথে পাহাড়ের বাঁকে কমলালেবু আর পাহাড়ি ফুলে ছাওয়া গ্রামের বাড়িগুলি।দিরাং আপার মনাস্ট্রিটি বেশ বড়-শান্ত, ভাবগম্ভীর পরিবেশ, লোয়ার মনাস্ট্রি বা কালচক্র গোম্ফাটি তুলনায় ছোট হলেও জমজমাট।

দিরাং থেকে তাওয়াং যাওয়ার পথে পড়বে চুগ ভ্যালি, হট স্প্রিং আর ১৯৬২ সালের চিন-ভারত যুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত নয়ুকমাডং ওয়ার মেমোরিয়াল (Nyukmadong War Memorial)।

আরও পড়ুন : চলুন আজ ঘুড়ে আসি  ভালুকপং আর বমডিলা থেকে

যাওয়া– ভালুকপং থেকে তাওয়াং যাওয়ার বাস বা শেয়ার গাড়িতে দিরাং চলে আসা যায়।

থাকা– দিরাং-এ সরকারি ট্যুরিস্ট লজ ও ইয়াক রির্সাচ সেন্টারে থাকা যায়।বেসরকারি হোটেল-ও আছে।

তাওয়াং -১০,২০০০ ফুট উচ্চতায় শৈলশহর তাওয়াং। প্রধানত মনপা উপজাতির লোকজনের বাসস্থান।

চারশোবছরেরপ্রাচীন তাওয়াং মনাস্ট্রি এখানকার প্রধান আকর্ষণ প্রায় পাঁচশো বছর আগের কথা, তখন  তাওয়াং অঞ্চলের নাম ছিল ব্রামডংচুং।একদিন লামা লরদে গিয়ামাতসো ঘোড়ায় চড়ে তিনমাইল দূরে পাহাড়ের এক গুহার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।কিছুদূর গিয়ে ঘোড়া রেখে বাকিটা হেঁটে যান। ফেরার পথে ঘোড়াটিকে খুঁজতে খুঁজতে এইস্থানে এসে পৌঁছান।গিয়ামাতসো অনুভব করেন ঈশ্বরই তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন এখানে মনাস্ট্রি তৈরি করার জন্য।ঘোড়াই তাঁকে পথ দেখিয়ে এনেছিল বলে জায়গাটির নামকরণ করেন তাওয়াং।‘তা’ অর্থ ঘোড়া এবং ‘ওয়াং’এর অর্থ ঘোড়া  যে স্থানটি নির্বাচন করেছে ।পঞ্চম দলাই লামার ইচ্ছানুযায়ী ১৫৮০-৮১ সালে তাওয়াং মনাস্ট্রির প্রতিষ্ঠা করেন লামা গিয়ামাতসো।যিনি মেরা লামা নামেও সমধিক পরিচিত।ভারতের সবচেয়ে বড় আর এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মনাস্ট্রিটি মূল শহর থেকে ২ কিমি দূরে।মূল মন্দিরটি ছাড়াও মনাস্ট্রির চত্ত্বরে রয়েছে মিউজিয়াম ও লাইব্রেরি।মূল মন্দিরের সামনের খোলা জায়গায় উৎসবের সময় নাচ-গান হয়।লামাদের প্রধান উৎসব ছাম বা মুখোশ নৃত্য।মনাস্ট্রির অন্দরে ২৬ ফুট উচুঁ বিশালাকায় বুদ্ধমূর্তি আর দেওয়াল জুড়ে অপরূপ কারুকাজ।গাডেন নামগিয়াল লাহৎসে মিউজিয়ামে প্রাচীন পুঁথি, হাল্কা প্রাচীন বাসনপত্র, বাদ্যযন্ত্র, অস্ত্রশস্ত্র, মুখোশ, বিশালাকার হাতির দাঁত প্রভৃতি নানান প্রাচীন জিনিস রক্ষিত আছে।

শহর থেকে ৫কিমি দূরে আর্জলিং গোম্ফা। তাওয়াং জেলায় প্রায় ১০৮টি ছোট-বড়ো হ্রদ আছে।এরমধ্যে ৪২ কিমি দূরে সাংগাসার লেক (Sangesar Lake) বিশেষ উল্ল্যেখযোগ্য।এটি মাধুরী লেক নামেও পরিচিত। চিন সীমান্তের বুমলা পাস (Bumla Pass) ও সাংগাসার লেক যাওয়ার পথে তাওয়াং থেকে ১৬কিমি দূরে পি টি সো লেক (Piti So)।এই পথে তাওয়াং থেকে অল্পদূরে বৌদ্ধ-ভিক্ষুণীদের মঠ আনি গুম্ফা (Ani Gompha)।১৯৬২ সালের যুদ্ধে নিহত ভারতীয় সৈনিকদের স্মৃতিতে নির্মিত ওয়ার মেমোরিয়ালটি-ও (Tawang War Memorial) তাওয়াং-এর বিশেষ দ্রষ্টব্য।ক্র্যাফট সেন্টারটি-ও দর্শণীয়।

যাওয়া- দিরাং থেকে তাওয়াং-এর দূরত্ব ১৩৮কিমি ।দিরাং থেকে ৪০কিমি দূরে ১৩,৭২১ ফুট উচ্চতায় সেলা পাস (Sela Pass) ও সেলা লেক (Sela Lake)। সেলা থেকে তাওয়াং যাওয়ার পথেই পড়বে ১৯৬২ সালের যুদ্ধে নিহত শহীদ যশোবন্ত সিং রাওয়াতের স্মৃতি মন্দির যশোবন্তগড় (Jashowantgarh)।তাওয়াং-এর ঠিক আগেই নুরানাং জলপ্রপাত (Nuranang Falls)।

থাকা- তাওয়াং অরুণাচল ট্যুরিজমের লজে থাকাটাই সুবিধাজনকএছাড়া বেশকিছু হোটেল আছে শহর জুড়ে 

Related Posts

Leave a Reply