April 26, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali

প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ বাঁহাতে কেন ঘড়ি পরে, কেন জানেন ?

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস : 
পরিসংখ্যান বলছে এই বিশ্বের মোট জনসংখ্যার সিংহভাগই বাঁহাতে ঘড়ি পরে থাকে। আর মজার বিষয় হল বেশিরভাগই জানেন না কেন এমনটা করে থাকেন তারা। বেশ কিছু স্টাডির পর একদল গবেষকের মনে হয়েছিল শরীরের গঠনকে যদি গুরুত্ব দেওয়া হয়, তাহলে ছেলেদের নাকি ডান হাতে এবং মেয়েদের বাঁহাতে ঘড়ি পরা উচিত। কিন্তু তবুও এই নিয়মটা কেউ মেনে চলে না কেন?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ইতিহাসের দিকে নজর ফেরাতে হবে। আর এমনটা করলে জানতে পারবেন যখন ছোট ঘড়ির জন্ম হয়েছিল, তখন বেশিরভাগই তা পকেটে রাখতেন। তাই তো পকেট ঘরির চল সে সময় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। কবজিতেও যে ঘড়ি পরা যেতে পারে, সে বিষয়ে কারওই সে সময় কোনও ধারণা ছিল না। তবে বোর যুদ্ধের সময় একদল সৈনিক চামড়ার স্ট্র্যাপে ঘড়ি আটকে কবজিতে পরা শুরু করলো। তাদের মূল লক্ষ ছিল মিলিটারি অপারেশনের প্রতি মিনিটকে নথিবদ্ধ করা। আর এমনটা করতে গেলে বারে বারে পকেট থেকে ঘড়ি বার করা ছিল বেজায় মুশকিল কাজ। তাই তো সে সময় থেকে শুরু হল কবজিতে ঘড়ি পরা। তবে তখনও তা আম জনতার মধ্যে সেভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি।
কিন্তু বাঁহাতে কেন? একথা ঠিক যে হাত ঘড়ির জন্ম লগ্ন থেকেই বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু হয়েছিল। কারণ ছিল একটাই। আসলে সে সময়কার হাত ঘড়ি ছিল বেজায় বড় এবং ভঙ্গুর। তাই সহজেই যাতে কোথায় ঠোকা লেগে ঘড়িটা ভেঙে না যায়, তা সুনিশ্চিত করতেই বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু হয়েছিল। কারণ বিভিন্ন কাজ করতে ডান হাত যতটা কাজে লাগে, ততটা কিন্তু বাঁহাত কাজে আসে না। তাই যদি বাঁহাতে ঘড়ি পরা যায়, তাহলে ভাঙার আশঙ্কা কম। তাই সেই শুরু। তারপর থেকে যত সময় এগিয়েছে বাঁহাতের ঘড়ি পরার চল জনপ্রিয়তা পেরেছে।
বিজ্ঞান কী বলছে: এ সম্পর্কে আরও স্পষ্ট উত্তর পাওয়া সম্ভব বিজ্ঞানের হাত ধরেই। একাধিক গবেষণার পর এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে সিংহভাগ মানুষই ডান হাতে কাজ করতে বেশি স্বচ্ছন্দ। আর ডান হাতি মানুষদের চোখের গতিবিধি বিচার করলে একথা বুঝতে অসুবিধা হয় না যে বাঁহাতে ঘড়ি পরলে সহজে সময় দেখা সম্ভব হয়। আর যদি ডান হাতে ঘড়ি পরা হয়, তাহলে কাজ করত করতে যদি সময় দেখার প্রয়োজন পরে, তাহলে কাজ থামিয়ে তা করতে হবে, যা বাঁহাতে ঘড়ি পরলে করার প্রয়োজন পরে না। তাই বেশিরভাগই বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু করলো।
একথা বলতেই হয় যে বোর যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ এম্পায়ারের সৈনিকরা যখন দক্ষিণ আফ্রিকান রিপাবলিককে ধ্বংস করছে, তখন জন্ম নেওয়া হাত ঘড়ি এতটাই ভঙ্গুর ছিল যে ডান হাতে পরলে তার আয়ু একদিনও হত না। তাই কিছুটা বাধ্য হয়েই বাঁহাতে পরতে হয়েছিল। এরপর সেই অভ্যাস ধীরে ধীরে মাসল মেমোরিতে রূপান্তরিত হয়।
কী এই মাসল মেমোরি? একটা কাজ বারে বারে করত থাকলে তা মস্তিষ্কের অন্দরে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে। ফলে তা অভ্যাসে রূপান্তরিত হয়। আর মুষ্টিমেয় মানুষের অভ্যাস যখন অনেকের অভ্যাসে রুপান্তরিত হয়, তখন সেই অভ্যাসকে বদলায় এমন সাধ্য কার। তাই তো বলি বন্ধু বাঁহাতে ঘড়ি পরার পিছনে যতটা ইতিহাসের অবদান রয়েছে, ততটাই রয়েছে শরীর বিজ্ঞানেরও। কারণ বাঁহাতে ঘড়ি পরলে যতটা সুবিধে হয় দেখতে, ততটা হয় না ডান হাতে পরলে। তাই এখন যেমন সবাই বাঁহাতে ঘড়ি পরছে, আগামী দিনেও পরবে এবং এই ভাবেই চলতে থাকবে।

Related Posts

Leave a Reply