April 30, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular ব্যবসা ও প্রযুক্তি রোজনামচা

পরমাণু অস্ত্রকেও হেলায় হারাতে পারে ভারতের হাতে থাকা এই অত্যাধুনিক অস্ত্র 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

পরমাণু বোমায় আর মন ভরছে না তাই এবার চাই এর থেকেও গণবিধ্বংসী ভয়ংকর অস্ত্র। এবার সেই অস্ত্র তৈরির নেশায় মেতেছে বিশ্ব। নতুন এই ভয়াবহ অস্ত্রের নাম ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালস (ইএমপি) বা বজ্রপাত অস্ত্র। লেজার রশ্মির মতো আলোর গতিতে লক্ষ্যে আঘাত হানে আর মুহূর্তেই পুরো একটি শহর ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারে এই অস্ত্র। হলিউডের সাইন্স ফিকশন সিনেমাগুলোতে আগেই এই ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার দেখানো হয়েছে।

ইলেক্ট্রনের রশ্মি ছুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে উন্নত কম্পিউটার ব্যবস্থা, আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সবকিছু ধ্বংস করে দিতে সক্ষম এই অস্ত্র। প্রধানত প্রতিপক্ষের যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, যুদ্ধবিমান, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, রাডারসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা যন্ত্র অকেজো করে দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি করা হচ্ছে এগুলো।

বায়ুমণ্ডলকে বিরাট ঝাঁকুনি দিতে দিতে মাটিতে আছড়ে পড়বে এই অত্যাধুনিক অস্ত্র। চারপাশ উত্তপ্ত করে ভূমি থেকে ৬০ মাইল উঁচু থেকে ১.৫ মিলিয়ন বর্গমাইল এলাকা ধ্বংস করে দিতে পারে নিমিষে। বৈদ্যুতিক তারের মাধ্যমেও ইএমপি হামলা সম্ভব। এ পদ্ধতিতে যে কোনো দেশের জাতীয় নিরাপত্তা তথ্যও হ্যাক বা ধ্বংস করা যায়। আমেরিকার তথ্য ধ্বংস করা হলে তা পুনরুদ্ধারে প্রায় ১০ বছর লাগবে। খরচ হবে তিন ট্রিলিয়ন ডলার

এখন পর্যন্ত সামরিক পরাশক্তি আমেরিকা, রাশিয়া এবং এশিয়ার উদীয়মান শক্তি চীন ও ভারত এই অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। অস্ত্র তৈরি করছে মার্কিন মিত্র দেশ ব্রিটেনও । তবে তারা একদম প্রথম দিকে রয়েছে। আমেরিকার প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী উত্তর কোরিয়া ও ইরানের হাতেও এই অস্ত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালস (ইএমপি) হচ্ছে ইলেক্ট্রন ও চুম্বকীয় শক্তির বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আলোকরশ্মির আঘাত। ইএমপি রশ্মি ছুড়তে মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয় না। ব্যবহার করা হয় ইলেক্ট্রন শক্তির প্রবল চাপ তৈরি করতে অতি শক্তিশালী মাইক্রোওয়েভ ওভেন। এই শক্তি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রে, চুম্বকীয় ক্ষেত্রে, বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ ও বৈদ্যুতিক পরিচলন রূপে অতিক্রম করতে পারে। এটা অনেকটা লেজার রশ্মি বা বজ্রপাতের মতো। ইএমপি রশ্মি সরাসরি সরল পথে ও আঁকাবাঁকা পথে দু’ভাবেই চলতে পারে।

প্রায় ছয় বছর আগে ইএমপি অস্ত্র তৈরি করেছে আমেরিকা। সে সময় ফক্স নিউজসহ মার্কিন গণমাধ্যমগুলো জানায়, মার্কিন বিমানবাহিনী ও বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠাতা বোয়িং যৌথভাবে ইএমপি তৈরি করেছে। ‘চ্যাম্প’ বা কাউন্টার-ইলেকট্রনিক্স হাই পাওয়ার্ড মাইক্রোওয়েভ অ্যাডভান্সড মিসাইল প্রজেক্টের অধীনে এটা তৈরি করা হয়।২০১২ সালে প্রথমবারের মতো সফল পরীক্ষা চালায় এই প্রকল্প। আশ্চর্যের বিষয় হল ২০০৪ সালে আমেরিকার অনেক আগেই এ অস্ত্র তৈরি করেছে ভারত। দেশটির ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) ও ভাবা অ্যাটোমিক রিসার্চ সেন্টার (বিএআরসি) কেএএলআই-৫০০০ নামে অস্ত্র তৈরি করেছে। যদিও ভারত সরকার এ খবর জনসমক্ষে প্রকাশ করতে আগ্রহী নয়। ভারতের অস্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান দিল্লি ডিফেন্স রিভিউ-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, বেইজিংয়ের চুং-শান ইন্সটিটিউট অব সাইন্স অ্যান্ড পেকনোলোজি (সিএসআইএসটি) ইএমপি তৈরির লক্ষ্যে বেশ কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছে বলে মনে করা হচ্ছে। আমেরিকা এই  অস্ত্র তৈরির প্রথম ধাপে রয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া ইতিমধ্যে এই অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যম স্পুটনিক জানিয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করতে সক্ষম মস্কোর নতুন এই অস্ত্র। এই অস্ত্র তৈরিতে বেশ আগেই গবেষণা শুরু করেছে চীন।

আমেরিকার ‘বড় শত্রু’ ইরান ও উত্তর কোরিয়ার হাতেও এই অস্ত্র রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পিয়ংইয়ং মস্কোর কাছ থেকে এ প্রযুক্তি পেয়েছে বলে দাবি করেছে ওয়াশিংটন।

Related Posts

Leave a Reply