May 6, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular সফর

রাজধানী ও রাজনীতি কোনোটাই নেই এই অদ্ভুত দেশে!

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস : 
দ্ভুত এক দেশ। যে দেশে রাজধানী নেই। নেই কোনো রাজনৈতিক দল। দক্ষিন প্রশান্ত মহাসাগরের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র। এক দিকে চীন অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন কয়েকটি দ্বীপ। জাপান, অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের অবস্থানও অনেক দূরে। তবে এ দেশগুলোর প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে ছোট দেশ নাউরুতে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্র দ্বীপদেশ। মাইক্রোনেশিয়া আর পলিনেশিয়ার জাতিগোত্রের মানুষ বসতি স্থাপন করেছে মাত্র আট বর্গমাইলের এ দেশটিতে। কোনো ঘোষিত রাজধানী নেই।

১৪টি বিভাগে ভাগ করে শাসনকাজ পরিচালনা করা হয়। বিচার আর প্রশাসনিক ইউনিটগুলো মূলত বিভাগীয় কেন্দ্রগুলোতে বিন্যস্ত করে দেয়া হয়েছে। দেশটিতে নেই কোনো আনুষ্ঠানিক রাজনৈতক দল। এখানে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থা কায়েম রয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। ১৮ সদস্যের সংসদে প্রতি তিন বছর অন্তর নির্বাচন হয়। ভোটাভুটির মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের মধ্যে একজনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হয়। রাজনৈতিক দল না থাকায় যে ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা, তা হয় না। এর প্রধান কারণ গোষ্ঠী আর আত্মীয়তা রাজনৈতিক অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে।

সরকার গঠনে মূল ভূমিকা পালন করে আত্মীয়তা। ১৩ হাজার জনসংখ্যার দেশটিতে প্রভাবশালী মানুষগুলো একে অন্যের পরিচিত। নিজেদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে সরকার গঠিত হয়। এ কারণে রাজনৈতিক দল গঠন ও বিকাশ হয়নি। তবে রাজনৈতিক দল যে একদম নেই এ কথা বলা যাবে না। যেমন সর্বশেষ নির্বাচনে ১৮টি আসনের সংসদের তিনজন রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচিত হন। ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, নাউরু ফার্স্ট ও সেন্টার পার্টি নামের তিনটি রাজনৈতিক দলের নাম পাওয়া যায়। তবে এগুলোর গঠন ও কার্যক্রম প্রচলিত রাজনৈতিক দলের মতো নয়। তাই এগুলোকে সেই অর্থে রাজনৈতিক দল বলা যাবে না।  তবে দু’টি উপজাতি ২০ শতকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। মূলত দু’টি বিশ্বযুদ্ধে এখানে বড় ধরনের হত্যাযজ্ঞ ঘটে। জনসংখ্যা নেমে এসছিল মাত্র দেড় হাজারে। মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের প্রচলিত সংস্কৃতির ছেদ হয় তখন। মানুষের জীবনাচরণে এখন স¤পূর্ণ পশ্চিমাদের অনুকরণ পরিলক্ষিত হয়। শিক্ষাদীক্ষায় অনুন্নত রয়ে গেছে। নিজেদের কোনো সামরিক বাহিনীও নেই। নিরাপত্তার বিষয়গুলো অস্ট্রেলিয়াই দেখে।

কমপক্ষে ৩ হাজার বছর আগে মাইক্রোনেশিয়ান আর পলিনেশিয়ানরা নাউরুতে বসতি স্থাপন করে। তারা ১২টি গোষ্ঠীতে বিভক্ত। এ জন্য দেশটির পতাকায় ১২টি তারকাখচিত। ব্রিটিশ ক্যাপটেন ও তিমি শিকারি জন ফেয়ার্ন প্রথম পশ্চিমা নাগরিক ১৭৯৮ সালে দেশটিতে আসেন। ১৮৩০-এর দশকে নাউরুর সাথে পশ্চিমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।

এ সময় থেকে ইউরোপীয়রা নাউরুতে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। উনিশ শতকে জার্মানরা নাউরুতে উপনিবেশ স্থাপন করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে এর দখল চলে যায় যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড আর যুক্তরজ্যের কাছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে দেশটি দখল করে নেয় জাপান। যুদ্ধের সময় নাউরুকে বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহার করে তারা।

১৯৪৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে জাপানি সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করে। এরপর একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে দেশটি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড আর যুক্তরাজ্যের কাছে হস্তান্তরিত হয়। ১৯৬৬ সালের জানুয়ারিতে স্বায়ত্তশাসন পায় নাউরু। ১৯৬৮ সালে দেশটি পরিপূর্ণ স্বাধীনতা পায়। ১৯০০ সালে দেশটিতে ফসফেটের খনি আবিষ্কার হয়।

আরো জানতে চান দেশটি সম্পর্কে :  দেশের নাম : রিপাবলিক অব নাউরু।  জনসংখ্যা : ১৩ হাজার। রাজধানী : কোনো রাজধানী নেই। আয়তন : ৮ বর্গমাইল। প্রধান ভাষা : নাউরুয়ান ও ইংরেজি। প্রধান ধর্ম : খ্রিষ্টান। মুদ্রা : অস্ট্রেলিয়ান ডলার

Related Posts

Leave a Reply