April 30, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

কার্পেট, পাথর বা রং সব খেয়ে ফেলে ম্যাডি!

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
দ্ভুত এক রোগে আক্রান্ত তিন বছরের ফুটফুটে শিমু ম্যাডি মুর। সে ‘পিকা’য় আক্রান্ত। মজার মজার খাবারে তার ক্ষুধা মেটে না। বরং অখাদ্য-কুখাদ্য বলতে যা বোঝায়, তাই খেয়ে ফেলে মেয়েটি। সে বাড়ির কার্পেট থেকে শুরু করে রং পর্যন্ত গিলে ফেলে।

ম্যাডি মুরের খাদ্যতালিকায় ইতিমধ্যে ওয়াশিং পাউডার, রান্নার তেল, কার্পেটের আঁশ, পাথর, প্লাস্টার, কাঠ, প্লাস্টিক, বালি, টেপ, পোকা, রং, কলম বা টয়লেট টিস্যু চলে এসেছে।

পিকা এমন এক ইমপালসিভ ডিসঅর্ডার, যার কারণে ক্ষুধা মেটাতে খাবার নয় বরং অন্য জিনিসের প্রয়োজন হয়।

তাকে পর্যবেক্ষণ করছে চিলড্রেনস সেন্টার। এরা ম্যাডির জন্যে ভক্ষণযোগ্য পুতুলের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এতে অন্তত সে নিরাপদে প্লাস্টিক বা রাবারের পুতুল খেতে পারবে।

এদিকে মা ক্যাথিরিন মুলিনসকে সব সময় সাবধান থাকতে হয়। মেয়ে যেন এমন কিছু খেয়ে না ফেলে যার কারণে তার ভেতরটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, আমার মেয়ের সমস্যাটি বিরল। যত বিশেষজ্ঞ তাকে দেখেছেন, সবাই বলেছেন, এমন মেয়ে এর আগে কেউ কখনো দেখেননি। আমার মেয়েটি সব খায়। মাথায় দুশ্চিন্তা থাকে, পরেরবার ও কি খেতে চলেছে? এক মিনিটের জন্যেও ওকে চোখের আড়াল করা যায় না। ও কিছু না কিছু খেয়েই চলেছে।

মা বিষয়টি ম্যাডির এক বছর পূরণ না হতেই খেয়াল করেন। মেয়েটি আজেবাজে জিনিস মুখে পুরে নেয়। চিকিৎসকরা টানা দুই বছর ওকে নিয়ে নানা পরীক্ষা চালান। পরে তারা ধরতে পারেন, ম্যাডি পিকায় আক্রান্ত।

এ ছাড়াও ম্যাডির মধ্যে অটিজম রয়েছে। ডেভেলপমেন্টাল ডিলে এবং সেন্সরি প্রসেস ডিসঅর্ডারের কারণে তার মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত যেকোনো বিষয়ের দেখা মিলতে পারে।

রাতে পরিবারের সবাই ঘুমানোর সময় ম্যাডিকে বিশেষভাবে বানানো বিছানায় রাখা হয়। যেন সে বেরিয়ে ক্ষতিকর কিছু না করে ফেলতে পারে।

প্রতিবন্ধী হলে এবং গর্ভধারণের সময় ক্ষুধা নিবারণে অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দিতে পারে। একেই বলে পিকা। রোগটা অবশ্যই প্রাণঘাতী। এসব খাবার মানবদেহে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। দেহে অন্যান্য রোগের সংক্রমণ, বিষক্রিয়াসহ যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অনেক সময় সার্জারির মাধ্যমে পেট থেকে বিপজ্জনক কিছু বের করে আনার প্রয়োজন হতে পারে।

ম্যাডি যত বড় হচ্ছে খাবার পছন্দের বিষয়টি তত খারাপের দিকে যাচ্ছে। তবে স্বাভাবিক খাবারের তালিকায় নির্দিষ্ট কিছু রং ও চেহারার খাবারের প্রতি আসক্তি বাড়ছে। যেমন, পটেটো ওয়াফলস, ফিশ ফিঙ্গার এবং চিকেন বার্গার। মেঝেতে কলম, কাগজ বা প্লাস্টিক যাই পড়ে থাক না কেন, ও তুলে খেয়ে ফেলে।   

দিন দিন ক্ষুধাও দারুণভাবে বাড়ছে তার। দেয়ালে কোনো ছবি টাঙানো যায় না। ও পেড়ে খেয়ে ফেলতে চায়। ওর বোন লিলি রং পেন্সিল কিনতে পারে না। কারণ ম্যাডি খেয়ে ফেলে। দেহের জন্যে ক্ষতিকর এমন যেকোনো কিছু লুকিয়ে রাখতে হয়। কিছু দিন আগেই এ বাক্স চক খেয়ে ফেলেছে ও, জানান মা।

বাবা সনি মুরকেও সব সময় সাবধান থাকতে হয়। পরিবারটি ইংল্যান্ডের ডোরসেটের বর্নমাউথে দুই বেডরুমের একটি ফ্ল্যাটে বাস করেন। তবে তারা আরো বড় একটি বাসা নেওয়ার চিন্তা করছেন। কারণ, ‘সর্বভুক’ ম্যাডির জন্যে আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করতে হবে যেখানে ক্ষতিকর কোনো জিনিস থাকবে না। 

Related Posts

Leave a Reply