April 27, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular ওপার বাংলা

১২০ বছর পর উদ্ধার রাজকন্যার ২৮৫ টি প্রেমপত্র, কাকে লিখেছিলেন জানেন ? 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

প্রেমপত্র। সে যদি হয় রাজকন্যার, ১২০ বছর আগে লেখা। কোনো সন্দেহ নেই, আজ তার একটি বাক্য পড়ে পাঁচ মিনিট চোখ বন্ধ করে ভাবতে হবে। দিঘাপতিয়ার রাজকন্যা ইন্দুপ্রভার গোপনে তুলে রাখা এ রকম ২৮৫টি পত্রের সন্ধান মিলেছে।

নাটোর জেলা প্রশাসনের ট্রেজারিতে চাবিহীন একটি ট্রাঙ্ক থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। শুধু পত্র নয়, পাওয়া গেছে তার অপ্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি, দিনলিপি, রুপার ফ্রেমে বাঁধানো ছবি, প্রাচীন পদ্ধতিতে লেখার কাজে ব্যবহৃত রাজকন্যার দোয়াত-কলমসহ আরও অনেক কিছু।

এ ছাড়া গ্রামের মানুষের বাড়িতে মিলেছে রাজবাড়ির সিন্দুক, রাজা-রানির ছবিসহ অনেক ঐতিহাসিক জিনিসপত্র। এর সঙ্গে এত দিন আড়ালে থাকা মহামূল্যবান পাথরখচিত রাজমুকুট, রাজপরিধেয়—সবই উত্তরা গণভবন সংগ্রহশালায় দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

১৯৫৬ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে এই রাজপরিবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে যায়। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু রাজবাড়িটিকে উত্তরা গণভবন ঘোষণা করেন। সম্প্রতি এই রাজবাড়ি থেকে গোপনে আমগাছ কেটে নেওয়ার পর তোলপাড় হয়। এরপর জেলা প্রশাসন রাজবাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয়। এরপর জেলা প্রশাসন খোঁজা শুরু করে দিঘাপতিয়ার রাজার স্মৃতিচিহ্ন, কোথায় কী আছে। এলাকায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে সিন্দুক, রাজা-রানির ছবিসহ অনেক কিছু।

জেলা প্রশাসনের ট্রেজারিতে একটি ট্রাঙ্কের ওপরে লেখা রয়েছে রাজকুমারী ইন্দুপ্রভা। ট্রেজারিতেই পাওয়া যায় মহামূল্যবান পাথরখচিত রাজার মুকুট, জরির জামা, হাতির দাঁতের হাতল লাগানো ছুরি, দামি পাথর কেটে তৈরি রাজবাড়ির থালাবাসনসহ অনেক কিছু।

এরই মধ্যে একটি ছবিও পাওয়া যায়। এটি রুপার ফ্রেমে বাঁধানো। ছবিটির পরিচয় খুঁজতে গিয়ে ফ্রেম খোলা হয়। এর পর দেখা যায়, ফ্রেমে আড়াল হয়েছিল রাজকুমারী ইন্দুপ্রভার নাম। রাজবংশের চতুর্থ পুরুষ প্রমথনাথের কন্যা ছিলেন ইন্দুপ্রভা। ট্রাঙ্ক থেকে বের করা হয় ইন্দুর হাতের লেখা ১০টি ডায়েরি। এর মধ্যে একটিতে শুধু কবিতা।

অন্যগুলোতে তার আত্মজীবনী। ইন্দুর কাছে বিয়ের আগে ও পরে ২৮৫টি চিঠি লিখেছেন মহেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী। প্রতিটি চিঠির শেষে লেখা রয়েছে, ‘তোমারই মহেন্দ্র’। ইন্দুকে সম্বোধন করা হয়েছে ‘প্রিয়তমে’ হিসেবে। চিঠির পরতে পরতে ছড়িয়ে রয়েছে মান-অভিমান। ইন্দুপ্রভা কলকাতায় থাকার সময় তাকে তিনটি ঠিকানায় চিঠি দিয়েছেন।

আবার ইন্দু যখন রাজবাড়িতে থেকেছেন, তখনো কলকাতা থেকে মহেন্দ্র তাকে চিঠি লিখেছেন। দিঘাপতিয়া চিঠিপত্রে তার নাম কখনো রাজকুমারী ইন্দুপ্রভা, কখনো শ্রীমতী ইন্দুপ্রভা দেবী আবার কখনো শ্রীমতী ইন্দুপ্রভা চৌধুরানী লেখা পাওয়া গেছে। মহেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ইন্দুপ্রভার স্বামী। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।

ছোট্ট ছোট্ট খামে ভরা চিঠিগুলো খুবই যত্নে ভাঁজ করে রাখা। প্রায় ১২০ বছর বা তার কাছাকাছি সময় ধরে চিঠিগুলো ওভাবেই খামের ভেতরে রয়েছে। চিঠিগুলো এখনো পড়া যাচ্ছে। একইভাবে ইন্দুর হাতের লেখা কবিতা ও তার আত্মজীবনীও পড়া যাচ্ছে।

Related Posts

Leave a Reply