May 5, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

কোদালের কোপে শেষ মা, ১৬ বিষধরকে ‘জন্মিয়ে’ সোজা জঙ্গলে!

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

সাধারণত আমরা সাপকে এতো ভয় পাই যে সে বিষধর হোক বা না হোক, দেখলেই মারতে উদ্যত হয়। কিন্তু এখানে যা ঘটল তা সত্যি অবিশ্বাস্য।  নার্সারিতে বেড়ে ওঠা আগাছা পরিষ্কার করতে গিয়ে মা কেউটে সাপের মুখোমুখি হয়ে দেরি করেননি শ্রমিকরা। কোদালের এক কোপে মেরে ফেলেছেন। তবে মা কেউটেকে মারার পরেই সামনে আসে নতুন দৃশ্য। ঝোপের আড়ালে গর্তের ভিতরে পাওয়া যায় মা কেউটের পাড়া ১৭টি ডিম।

গত ১১ আগস্ট নার্সারিতে কেউটে সাপের ১৭টি ডিম পাওয়ার খবর পৌঁছায় স্থানীয় বন্যপ্রেমী সংগঠন ‘বন্দিপুর প্রকৃতি প্রেমিক সমিতি’র সদস্য কল্যাণময় দাসের কাছে। তিনি ঘটনাস্থলে হাজির হন। খবর যায় বনবিভাগের হাওড়া ডিভিশনের অন্তর্গত চুঁচুড়ার রেঞ্জার রবীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। কেউটের ডিমগুলো সংগ্রহ করেন তাঁরা।

কল্যাণের কথায়, ‘আমার কাছে খবর আসে, মা সাপটিকে মেরে ফেলা হয়েছে। গিয়ে দেখি ১৬টি ডিম তখনো অক্ষত। একটিতে চিড় ধরেছে। রেঞ্জার আমাকে বললেন, ডিমগুলো ফোটানোর চেষ্টা করতে হবে। তাঁর অনুমতিতে ডিমগুলো আমাদের সংগঠনের দপ্তরে নিয়ে আসি।’

এরপর কলকাতার সর্প বিশারদ শুভ্রজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শে শুরু হয় কৃত্রিম ভাবে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর কাজ। একটি প্লাস্টিকের পাত্রে ভিজে খড়, পচা পাতা, মাটি ও বালি দিয়ে আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানেই রাখা হয় ডিমগুলো। ছত্রাক বা পোকামাকড় যাতে ডিম নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য চলে দিনভর পর্যবেক্ষণ। এক মাসের ধারাবাহিক পরিচর্যার পর গত সপ্তাহে ডিম ফুটে জন্ম নেয় ১৬টি কেউটে সাপের বাচ্চা।

কল্যাণ বলেন, ‘১১ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে প্রথম একটি ডিম ফুটতে দেখতে পাই। দুপুরের মধ্যে এক এক করে ১৬টি ডিমই ফোটে।’ এক দিন পর্যবেক্ষণের পর হাওড়ার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রাজু দাসের নির্দেশে স্থানীয় ডিঙেভাঙা জলাভূমি লাগোয়া জঙ্গল এলাকায় কেউটের বাচ্চাগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সর্প বিশারদ শুভ্রজ্যোতি বলেন,’কেউটের ডিম ফুটে বাচ্চা বার হতে সাধারণত ৫৫ থেকে ৬৫ দিন লাগে। এই সময়ে ইনকিউবেটরের ভিতর তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৯০ শতাংশের বেশি হওয়া প্রয়োজন। প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রজননের সময় কেউটেরা বর্ষা ঋতুকেই বেছে নেয়। কৃত্রিম প্রজননের ক্ষেত্রে ইনকিউবেটর যন্ত্র ছাড়াও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে ডিম ফোটানো সম্ভব।”

Related Posts

Leave a Reply