May 6, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular ব্যবসা ও প্রযুক্তি

সার্কিটেই কলি থেকে তাজা গোলাপ!

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
গাছের মনের কথা জানতে এবার উদ্ভিদের শরীরে বৈদ্যুতিন সার্কিট বসালেন বিজ্ঞানীরা। এর মাধ্যমে যেমন ফলন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তেমনি উদ্ভিদ থেকে মিলবে বিকল্প শক্তি। সম্প্রতি গোলাপ ফুলের ভেতর নমনীয় বৈদ্যুতিন সার্কিট বসানোর পরীক্ষা সফল হয়েছে। এর ফলে শস্যের ফলনের উপর কৃষকের নজরদারি উন্নত হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে মনে করছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয়, তাদের মতে জ্বালানি হিসেবে গাছ ব্যবহার না করে সালোক সংশ্লেষ পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করে গাছ থেকে বিকল্প শক্তি সঞ্চয় করাও সম্ভব হবে। জানা গেছে, জৈব পদার্থ কাজে লাগিয়ে নমনীয় বৈদ্যুতিন সার্কিট তৈরি করা সম্ভব। এই সার্কিটের সঙ্গে উদ্ভিদের শরীরের টিস্যুর সামঞ্জস্য থাকার কারণে গাছের নানা রোগও সারানো সহজ হবে। সুইডেনের লিংকোপিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার তথা উপাদান বিজ্ঞানী ম্যাগনাস বার্গ্রেন জানিয়েছেন, ‘সম্প্রতি জৈব বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি চিকিত্‍সার ক্ষেত্রে সাড়া ফেলে দিয়েছে।’
বার্গ্রেন জানিয়েছেন, প্রায় ১৫ বছর আগে এক সহকর্মী প্রথম উদ্ভিদের শরীরের ভিতর বৈদ্যুতিক সার্কিট বসানোর প্রস্তাব দেন। তিনি দাবি করেছিলেন, এর ফলে ফুল ফোটা বা ফল পাকার মতো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতে পারে। সেই সময় প্রস্তাবটি উড়িয়ে দেয়া হলেও বছর দুয়েক আগে তা কার্যকর করতে উদ্যোগী হন বিজ্ঞানীরা। ঠিক হয়, উদ্ভিদের নিজস্ব গঠন কাজে লাগিয়ে জীববিজ্ঞানের সাহায্যে তাদের শরীরের ভিতর ‘যন্ত্রাংশ’ তৈরির চেষ্টা করা হবে। এ কাজে গাছের ডালের ভেতর ভেতর পলিমার তার ঢুকিয়ে সার্কিট গড়া হবে। মনে করা হয়েছিল, জলে পলিমার বিল্ডিং ব্লক দ্রবণ সম্ভব হলে উদ্ভিদের শরীরে পলিমার ফাইবার প্রবেশ করালে তা নিজের চেষ্টায় সার্কিটের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবে গাছ। এ কাজে প্রায় ডজনখানেক বিভিন্ন রকম পলিমার বৈদ্যুতিক নির্মাণ ব্লক ব্যবহার করে দেখেন সুইডেনের বিজ্ঞানী দল। প্রথমে পলিমার তারগুলো জলে দ্রবীভূত করে পরে সেই জলে ডাঁটিসুদ্ধ গোলাপ রাখা হয়। কিন্তু এ পরীক্ষা সফল হয়নি।
এক রকম জৈব বৈদ্যুতিক নির্মাণ ব্লক ব্যবহার করার পর সাফল্য আসে। প্রতিটি ব্লকের মধ্যে রয়েছে অজস্র সারিবদ্ধ পরিবাহী জৈব অণু। একটি সারির সঙ্গে অন্যটির সংযোগস্থলে রয়েছে খুদে প্রশাখা। প্রশাখাগুলোর প্রতিটিতে রয়েছে গন্ধক সমৃদ্ধ গোষ্ঠী যা হাইড্রোজেন অণুর সঙ্গে সংযুক্ত। বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করলেন, জলে রাখার পর গোলাপের ডাল জল থেকে সূক্ষ্ণ পলিমার চেন শুষে নিতে সক্ষম হচ্ছে।
একবার ডালের ভিতরাংশে প্রবেশ করলে উদ্ভিদের নিজস্ব রসায়ন প্রশাখা থেকে হাইড্রোজেন অণুগুলোকে পৃথক করতে পারছে। এ প্রক্রিয়ার জেরে পাশাপাশি থাকা ফাইবার চেনগুলো পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে একটি সার্কিট সম্পূর্ণ করছে। গবেষকরা এরপর ওই চেনের দুই প্রান্তে বৈদ্যুতিক প্রোব জুড়ে দিলে দেখা যায় গোটা চেনটি একটি তারের কাজ করতে পারছে। এই তারের মাধ্যমে উদ্ভিদের শরীরে নিয়ন্ত্রিত হারে বিদ্যুত্‍ তরঙ্গ ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব।
পরীক্ষা সফল হলে বার্গ্রেন-এর নেতৃত্বে গবেষক দল গোলাপের ডালের বহিরাংশে বেশ কিছু বৈদ্যুতিক প্যাচ ব্যবহার করেন যা ট্রানজিস্টরের কাজ করে। এই ট্রানজিস্টরের সাহায্যে গাছের শরীরের ভেতর তৈরি হওয়া সার্কিটে বিদ্যুত্‍ সংযোগ চালু ও বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।

Related Posts

Leave a Reply