April 28, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

এখনই চিনে নিন চোখের অসুখ লেজি আই 

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
চশমার পাওয়ার যাই থাকুক না কেন, ভিশন বা দৃষ্টিশক্তি সাধারণভাবে থাকা উচিত ৬/৬। অর্থাত্‍ ৬ মিটার দূরত্ব থেকে ৬ মিলিমিটার হরফ পড়া যাবে। কোনো কারণে একটি চোখে বা দুটি চোখেই যদি এই স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি ৬/৬-এর কম হয়ে থাকে, তাহলে এই সমস্যাকে বলা হয় ‘লেজি আই’ বা অ্যামব্লায়োপিয়া। অর্থাত্‍ দুর্বল বা অলস চোখ। অনেক সময় দেখা যায় চোখের ভেতর কোনো সমস্যা নেই, অথচ দেখতে সমস্যা হওয়ার কারণে যতই চশমার পাওয়ার দেয়া হোক না কেন, রোগীর ভিশন বা দৃষ্টি কিছুতেই স্বাভাবাক হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে দৃষ্টিশক্তি ৬/৬-এর কম হওয়ার কারণেই দেখতে সমস্যা হচ্ছে। লেজি আই দুই ধরনের হয়। ইউনিলাটেরাল এবং বাইলাটেরাল। একচোখে দৃষ্টিশক্তি কম থাকলে তাকে বলে ইউনিলাটেরাল অ্যামব্লায়োপিয়া। দুচোখেই দৃষ্টিশক্তি কম থাকলে তাকে বলে বাইলাটেরারাল অ্যামব্লায়োপিয়া। লেজি আই বা অ্যামব্লায়োপিয়া হলে তা কখনো কোনো ওষুধ দিয়ে সারানো সম্ভব নয়। এমন ক্ষেত্রে রোগীকে সুস্থ করে তুলতে প্লিঅপটিক এবং অর্থোপেডিক চিকিত্‍সার দরকার হয়। সেই সাথে চালাতে হয় নানা ধরনের ভিশন থেরাপি। এই রোগের চিকিত্‍সা নেয়ার সময় চিকিত্‍সকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীকে হাসপাতালে এবং বাড়িতে ভিশন থেরাপি চালাতে হয়। লেজি আই থেকে যে ভয়ানক সমস্যাটা হতে পারে তা হলো, চোখ ট্যারা হয়ে যেতে পারে। এই ট্যারা দুভাবে হয়। এতে চোখের মণি দুটি নাকের দিকে অর্থাত্‍ ভেতরের দিকে ঢুকে যেতে পারে। আবার মণি দুটি বাইরের দিকে অর্থাত্‍ নাক থেকে দূরের দিকে সরে যেতে পারে। এসব কারণে দুটি চোখ সমান কাজ করতে পারে না। এর থেকে চোখের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। রোগী বেশিক্ষণ টিভি দেখতে পারে না বা কম্পিউটারে কাজ করতে পারে না। দুটি চোখ একসঙ্গে কাজ না করতে পারায় চোখ বা চশমার পাওয়ার বেড়ে যায়। ঠিক সময়ে চিকিত্‍সা না নিলে এর থেকে অন্ধত্বও দেখা দিতে পারে। লেজি আই সাধারণত বাচ্চাদেরই বেশি হয়।
রোগের কারণ :  এই রোগের সঠিক কারণ আজও জানা যায়নি। তবে সাধারণভাবে এসব কারণে সমস্যা দেখা দেয় –
*যে সমস্ত শিশু সময়ের আগেই ভূমিষ্ঠ হয়েছে, অর্থাত্‍ প্রিম্যাচিওর বেবিদের ক্ষেত্রে।
*হেরিডিটি বা বংশগত কারণে।
*বাবা, মা বা নিকট আত্মীয়ের হাই পাওয়ার রয়েছে, এমন শিশুদের ক্ষেত্রে।
*যেসব বাচ্চা ‘স্পেশাল চাইল্ড’ হিসেবে চিহ্নিত, তাদের ক্ষেত্রে।
*জন্মানোর পর যেসব শিশু ভেন্টিলেশন বা অক্সিজেনেশনে থেকেছে, তেমন শিশুর ক্ষেত্রে।
*চোখে সমস্যা হওয়া সত্ত্বেও ঠিক সময়ে চিকিত্‍সা না করানোর জন্য।
*চশমা থাকলেও তা ঠিকমতো ব্যবহার না করার জন্য। *শিশুর জন্মের সময় মায়ের বয়স তিরিশ বছরের বেশি থাকলে অনেক শিশুর ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দেয়।
উপসর্গ :
*লেজি আইয়ের উপসর্গ হিসেবে সাধারণ মাথাব্যথা করবে।
*চোখব্যথা অথবা চোখ জ্বালা করবে।
*দেখতে সমস্যা হওয়ায় বেশিক্ষণ টিভি দেখতে গেলে বা কম্পিউটারে কাজ করতে গেলে সমস্যা হবে।
*লেখার লাইন অসমান হবে। কখনো কখনো কোনো অক্ষর বা পুরো লাইন চোখ এড়িয়ে যাবে।
*কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাচ্চার চোখ ট্যারা হয় যাবে।
করণীয় :
*প্রথমেই আই স্পেশালিস্ট দেখিয়ে চোখের পাওয়ার পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত। সেই পাওয়ারের পাশে ভিশন কলামে সঠিক ভিশন লেখা রয়েছে কিনা তা দেখে নেয়া উচিত। স্বাভাবিক ভিশন ৬/৬। এর কম-বেশি হলেই সমস্যা।
*ভিশনের সমস্যা ধরা পড়লে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
*চোখ দেখানোর সময় অবশ্যই দুটো চোখের আলাদা আলাদাভাবে ভিশন পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
*চশমা নেয়ার পরও বাচ্চার দেখতে সমস্যা হলে সাথে সাথে চিকিত্‍সকের পরামর্শ নিন।
*বংশগতভাবে পরিবারের কারো চোখ ট্যারা থাকলে বা চোখে হাই পাওয়ার থাকলে বাচ্চার দেড় বছরের মধ্যে তার চোখ অবশ্যই পরীক্ষা করিয়ে নেবেন।
*সব লক্ষণ মিলে গেলেও চিকিত্‍সা করানোর আগে লেজি আই স্পেশালিস্টকে দিয়ে চোখ পরীক্ষা করান। যেহেতু লেজি আইয়ের সমস্যা বাচ্চাদের বেশি হয় তাই বাচ্চার পুষ্টির দিকে নজর দেওয়া খুব জরুরি। দুর্বল বাচ্চাদের এই রোগের প্রবণতা বেশি থাকে। বাচ্চার খাবারে যথেষ্ট ফলমূল, শাকসবজি, দুধ, মাছ দেওয়া উচিত। কোনো রকম অ্যালার্জি বা হজমের সমস্যা না থাকলে বাচ্চাকে সব ধরনের খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। বাচ্চার চশমা থাকলে তাকে ঠিকমতো চশমা পরান এবং চশমার যত্ন নেয়া শেখান। বাচ্চাকে দূর থেকে টিভি দেখা এবং আলোর সামনে সোজা হয়ে বসে পড়ার অভ্যাস করতে শেখান।

Related Posts

Leave a Reply