May 3, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

গলায় সমস্যা? থাইরয়েড ক্যান্সার নয় তো?

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

প্রাণঘাতী রোগ ক্যান্সার নীরবে আক্রমণ করে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই টের পেতে দেরী হয়ে যায়। থাইরয়েডের সমস্যা এখন প্রায় ঘরে ঘরে। শুধু থাইরয়েডের বৃদ্ধিতেই আর এই সমস্যা সীমাবদ্ধ নেই। এটি রুপ নিতে পারে প্রাণঘাতী ক্যান্সারে! জেনে নিতে হবে থাইরয়েড গ্রন্থির ক্যান্সারের লক্ষণ আর রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো। নইলে সঠিক চিকিৎসা করা মুশকিল হয়ে পড়বে।

থাইরয়েড ক্যান্সার হয় থাইরয়েড গ্ল্যান্ডে৷ থাইরয়েড গ্ল্যান্ড আমাদের স্বরগ্রন্থির নিচে থাকে৷ এই গ্ল্যান্ড খাবার থেকে আয়োডিন নিয়ে শরীরে থাইরয়েড হরমোন তৈরি করে৷ যখন থাইরয়েড গ্রন্থির কোষ সাধারণ অবস্থার থেকে অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে ও অন্যান্য অঙ্গের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে তখন তাকে বলা হয় থাইরয়েড ক্যান্সার৷

লক্ষণ:

প্রাথমিক পর্যায়ে থাইরয়েড ক্যান্সারের সে ভাবে কোনও লক্ষণ দেখা যায় না৷ রুটিন চেক আপ করলে অনেক সময় ক্যান্সার ধরা পড়ে৷ যখন টিউমার বড় আকারের হয়, তখন বোঝা যায়৷ এছাড়া নিম্নলিখিত কিছু লক্ষণ দেখা গেলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে৷

** গলায় হঠাৎ কোনও মাংসপিণ্ড দেখা দেওয়া।

** শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।

** গলার আওয়াজ বসে যাওয়া।

** খেতে কষ্ট হওয়া।

রিস্ক ফ্যাক্টর:

** ২৫-৫০ বছর বয়সিদের এই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি৷

** পুরুষদের চাইতে নারীদের এই ক্যান্সার হওয়ার রিস্ক বেশি৷

** দীর্ঘদিন ধরে থাইরয়েড গ্রন্থির অস্বাভাবিক বৃ‌দ্ধি হতে থাকলে থাইরয়েড ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে।

** পরিবারে কারও যদি থাইরয়েড সংক্রান্ত রোগ বা থাইরয়েড ক্যান্সার হয়, তবে অন্যদের থাইরয়েড ক্যান্সারের প্রবণতা থাকে৷

** ক্রনিক হেপাটাইটিস-সি থেকে থাইরয়েড ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে৷

চিকিৎসা:

** গলায় টিউমার বা ছোট মাংসপিণ্ড দেখা গেলে উপেক্ষা না করে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷ কেন না, গলায় মাংসপিণ্ড দেখা দিলে প্রথম অবস্থায় কোনও লক্ষণ দেখা যায় না৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যথা বা কষ্ট হয় না৷ তাই এই লক্ষণ দেখলে অবহেলা না করে এন্ডোক্রিনোলজিস্টের পরামর্শ নিন৷

**  ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে টি৪ টিএসএইচ (T4 TSH)ব্লাড টেস্ট করাতে হবে৷ রক্ত পরীক্ষা করার পর হাই রেজোলিউশন আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট করাতে হবে৷

** আল্ট্রাসাউন্ড করার পর যদি দেখা যায় তার মার্জিন অস্বাভাবিক, টিউমারের মধ্যে কোষের সংখ্যা ফ্যাটের তুলনায় বেশি ও ছোট ছোট ক্যালসিয়াম জমে আছে, সেক্ষেত্রে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি৷

** ক্যান্সারই কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য করাতে হবে আল্ট্রাসাউন্ড গাইডেড ফাইন নিডল অ্যাসপিরেশন টেস্ট৷ এই টেস্টেই থাইরয়েড ক্যান্সার আছে কি না, তা সঠিক ভাবে জানা যায়।

** কিছু ক্ষেত্রে ফাইন নিডল অ্যাসপিরেশন টেস্টে ক্যান্সার পাওয়া যায়। অনেক সময় আবার ক্যান্সার না হলেও সন্দেহ করা হয়৷ সেক্ষেত্রে কী করণীয়?

**  ক্যান্সার ধরা পড়ুক বা সন্দেহের পর্যায়ে থাক, দুই অবস্থাতেই সার্জারি জরুরি৷ সাসপেক্ট অফ ম্যালিগন্যান্সি অথবা ম্যালিগন্যান্সি, দুই ক্ষেত্রেই ডাক্তার সিদ্ধান্ত নেবেন কতটা সার্জারি করবেন৷ থাইরয়েড গ্ল্যান্ড পুরো বাদ দেবেন না কি রাখবেন৷ সবগুলো গ্ল্যান্ড বাদ দেওয়ার প্রয়োজন আছে না নেই- সেটা বিবেচনা করে সার্জারি করা হয়৷ এর পর তা বায়োপসিতে পাঠানো হয়৷ তার থেকেই ধরা পড়বে থাইরয়েড ক্যান্সারের অস্তিত্ব৷ এর পরের ধাপে দেখা হবে ক্যান্সার শুধু গ্ল্যান্ডেই সীমাবদ্ধ, না কি তা ছড়িয়ে গিয়েছে৷ এই সব দেখে ক্যানসারে স্টেজ নির্ধারণ করা হয়৷ স্টেজ নির্ধারণ করে তার পর চিকিৎসা করা হয়৷

** স্টেজ অনুযায়ী সার্জারি করেও সব সময় ক্যান্সার কোষগুলো পুরোপুরি নষ্ট করা যায় না৷ এক্ষেত্রে ক্যান্সার যাতে আর ছড়িয়ে না পড়ে তাই রয়ে যাওয়া কোষগুলিকে নিষ্ক্রিয় করতে প্রয়োজন রেডিও অ্যাকটিভ আয়োডিন থেরাপি৷ কতটা আয়োডিন থেরাপি দেওয়া হবে, তা নির্ভর করে ক্যান্সার কতটা ছড়াচ্ছে তার উপর৷

** সাধারণত এই চিকিৎসায় রোগী সুস্থ হয়ে যান৷ তবে ক্যান্সার যাতে ফিরে না আসে সেটা লক্ষ্য রাখতে ৬-১২ মাস অন্তর করাতে হবে থাইরোগ্লোবিউলিন ব্লাড টেস্ট৷

** থাইরয়েড গ্ল্যান্ড বাদ দেওয়ায় শরীরে পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বজায় রাখতে পরিপূরক হিসাবে বাইরে থেকে রোগীকে থাইরয়েড হরমোন ওষুধ দিতে হবে৷

Related Posts

Leave a Reply