May 4, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

এই লেখা পড়ার পর নিয়মিত তেঁতুল খাওয়া শুরু করে দেবেন 

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
ভাববেন না মজা করছি! বাস্তবিকই কিন্তু শরীরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়াতে তেঁতুলের জুড়ি মেলা ভার। আসলে এর শরীরে উপস্থিত একাধিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান দেহের অন্দরে প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে একাধিক রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে, ত্বকের পরিচর্যায় এবং আরও নানা শারীরিক উন্নতিতে এই ফলটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তাই রোগ মুক্ত সুস্থ শরীর যদি পেতে চান, তাহলে সপ্তাহে কম করে ৩-৪ দিন জমিয়ে তেঁতুল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই প্রকৃতিক উপাদানটির শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, ই এবং বি। সেই সঙ্গে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ডায়াটারি ফাইবার। এখানেই শেষ নয়, একাধিক শক্তাশালী অ্যান্টিঅক্সিডন্টেরও দেখা মেলে এই ফলটির অন্দরে।
এবার নিশ্চয় বুঝতে পরেছেন, তেঁতুল আকারে খাট হলে কী হবে, গুণে সর্বগুণ সম্পন্ন! তাহলে আর অপেক্ষা কিসের। চলুন তেঁতুলের নানাবিধ উপাকারিতার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১. দেহের অন্দরে প্রদাহ কমায়: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে শরীরের অন্দরে ইনফ্লেমেশন বাড়তে শুরু করলে ধীরে ধীরে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের উপরই খারাপ প্রভাব পরতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নানা রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধে, সেই সঙ্গে জয়েন্টের সচলতা কমে যাওয়ার কারণে নড়াচড়া করার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেয়। আর সবথেকে ভয়ের বিষয় হল শরীরে প্রদাহের মাত্রা বাড়ছে কিনা, তা আগে থেকে জানা সম্ভব নয়, তাই তো নিয়মিত তেঁতুল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কারণ এই ফলটিকে রোজের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করলে ইনফ্লেমেশন বাড়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগ ভোগের আশঙ্কা হ্রাস পায়।
২. ডায়াবেটিস রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখে: সরাসরি না হলেও প্ররোক্ষভাবে রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তেঁতুল দারুনভাবে কাজে এসে থাকে। আসলে এই ফলটিতে উপস্থতি বেশ কিছু এনজাইম, কার্বোহাইড্রেটের শোষণ মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফল ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। এখন প্রশ্ন করতে পারেন কার্বোহাইড্রেটের সঙ্গে সুগারের কী সম্পর্ক? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা বাড়তে থাকলে নানা কারণে রক্তে শর্করার মাত্রাও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই কারণেই তো অনিয়ন্ত্রত মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খেতে মানা করেন চিকিৎসকেরা।
৩. নার্ভের কর্মক্ষমতা বাড়ে: বি কমপ্লেক্স হল এমন ভিটামিন, যা ব্রেন ফাংশনের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই ভিটামিনটি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র নার্ভ সেলের শক্তি বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কগনেটিভ ফাংশনে উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তিও বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত, তেঁতুলে বি কমপ্লেক্স ভিটামনিটি রয়েছে প্রচুর মাত্রায়। তাই তো পড়াশোনা হোক কী কর্মজীবন, যে কোনও ফিল্ডে যদি উন্নতি করতে হয় তাহলে তেঁতুল খাওয়া মাস্ট!
৪. হার্ট চাঙ্গা হয়ে ওটে: একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে তেঁতুলের অন্দরে থাকা একাদিক ভিটামিন এবং খনিজ ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে রক্তে উপস্থিত বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে হার্টের কর্মক্ষমতা কমাতে ব্লাড প্রেসার এবং কোলেস্টেরল কোনও খামতিই রাখে না। তাই শরীর যখন এই দুই ক্ষতিকর রোগ থেকে দূরে থাকে, তখন স্বাভাবিকভাবেই হার্টের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটার কোনও সুয়োগই থাকে না। এবার নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন তেঁতল খাওয়া কতটা জরুরি।
৫. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়: স্ট্রেস, পরিবেশ দূষণ এবং অতি বেগুনি রশ্মির মারাত্মক প্রভাবের কারণে সবারই সৌন্দর্য কম-বেশি কমে যেতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে স্কিন টোনকে ধরে রাখতে এবং ত্বককে নরম এবং প্রাণচ্ছ্বল বানাতে তেঁতুলের কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। এই কারণেই তো নিয়মিত তেঁতুল দিয়ে বানানো ফেস প্যাক মুখে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। এখন প্রশ্ন হল ফ্য়াস প্যাকটি বানাবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো তেঁতুলের সঙ্গে গরম জল এবং হাফ চামচ হলুদ মিশিয়ে বানাতে হবে ফেস প্যাকটি।
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে: প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি থাকার কারণে তেঁতুলে খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও এতটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে শুধু সংক্রমণ নয়, ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
৭. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়: তেঁতুলে উপস্থিত ডায়াটারি ফাইবার হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে হজম শক্তির বৃদ্ধি ঘটতে একেবারে সময় লগে না। এখানেই শেষ নয়, তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় “বিলিয়াস সাবস্টেন্স” যা খাবার হজমের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। ফলে বদ-হজমের আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, একাদিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে ক্রনিক কনস্টিপেশনের মতো সমস্যা দূর করতেও তেঁতুল দারুন কাজে আসে। এক কথায় পেটের অন্দরে ঘটে চলে ছোট-বড় প্রতিটি কাজ যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে এই ফলটি। ফলে যে কোনও ধরনের পেটের রোগ হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৮. ওজন হ্রাসে সাহায্য করে: মশলা হিসেবে তেঁতুলকে কাজে লাগালে শরীরে হাইড্রোক্সিসিট্রিক অ্যাসিড বা এইচ সি এ-এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এই উপাদানটি শরীরে উপস্থিত অতিরিক্ত চর্বি ঝরিয়ে সার্বিকভাবে ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে তেঁতুল খাওয়া শুরু করলে শরীরে ফাইবারের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে ক্ষিদে কমে যায়।আর একবার কম খাওয়া শুরু করলে ওজন কমতে সময় লাগে না।
৯. রক্ত প্রবাহের উন্নতি ঘটে: তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় আয়রন, যা শরীরে লহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত দেহের প্রতিটি কোণায় পৌঁছে দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এমনটা হওয়ার কারণে একদিকে যেমন প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি অ্যানিমিয়ার মতো রোগও দূরে পালায়। প্রসঙ্গত, আমাদের দেশের মহিলাদের মধ্যে সিংহভাগই অ্যানিমিয়ার শিকার। তাই এদেশে তেঁতুল খাওয়া প্রয়োজনীয়তা যেন আরও অনেক বেশি, সে বিষযে কোনও সন্দেহ।

Related Posts

Leave a Reply